Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪

ওয়ার্ডের জানলা খুলে ‘ঝাঁপ’, মৃত্যু রোগীর

পুলিশ জানিয়েছে, বিএসএনএলে চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসেবে কাজ করতেন সুজয়। তাঁর পোস্টিং ছিল কালীঘাটে বিএসএনএলের অফিসে।

সুজয় দাস

সুজয় দাস

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৯ ০২:৫১
Share: Save:

হাসপাতালের সাততলা থেকে পড়ে মৃত্যু হল এক রোগীর।

বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে জোকা ইএসআই হাসপাতালে। মৃতের নাম সুজয় দাস (৩৮)। তাঁর বাড়ি পর্ণশ্রী এলাকায়। ঘটনায় প্রশ্নের মুখে হাসপাতালের নিরাপত্তা ও নজরদারি। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, এটি আত্মহত্যা।

পুলিশ জানিয়েছে, বিএসএনএলে চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসেবে কাজ করতেন সুজয়। তাঁর পোস্টিং ছিল কালীঘাটে বিএসএনএলের অফিসে। পরিবারের সদস্যেরা জানিয়েছেন, গ্যাস্ট্রিক আলসারের সমস্যার পাশাপাশি গলায় একটা সমস্যা হওয়ায় সুজয়কে গত ৩ জুন জোকা ইএসআই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালেরই আইসিইউয়ে ত্বকের সংক্রমণ এবং থাইরয়েডের সমস্যা নিয়ে ভর্তি আছেন সুজয়ের মা মায়া দাস।

সুজয়ের আত্মীয় ও বন্ধুরা জানিয়েছেন, দু’দিন ভর্তি থাকার পরে কিছুটা সুস্থ হলেও তাঁর রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা কমে গিয়েছিল। এ দিন সকাল সাতটা নাগাদ হাসপাতাল থেকে তাঁদের ফোন করে চলে আসতে বলা হয়। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি আসেন সুজয়ের দাদা, দিদি ও সহকর্মীরা। তখন হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, রোগীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এর পরেই বাড়ির লোকজন জানতে পারেন, সাততলায় তাঁর ওয়ার্ডের স্লাইডিং জানলা খুলে ‘ঝাঁপ’ দিয়েছেন সুজয়। আরও জানা গিয়েছে, এ দিন ভোরে তিনি এক বার নিজের ওয়ার্ড থেকে নেমে এসে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তখন গেটে থাকা নিরাপত্তারক্ষী তাঁকে উপরে পাঠিয়ে দেন।সুজয়ের বন্ধুদের প্রশ্ন, এক জন রোগী ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে নীচে নেমে গেলেন।

কেউ দেখতে পেলেন না? পরে তিনি ওয়ার্ডে ঢুকে জানলা খুলে ‘ঝাঁপ’ দিলেন। সেটাও কারও চোখে পড়ল না? হাসপাতালের নজরদারি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। পরিজনেদের বক্তব্য, ওয়ার্ডে শয্যার পাশে কাচের বড় স্লাইডিং জানলা। অথচ সেখানে কোনও তালার ব্যবস্থা নেই। দেওয়া নেই রেলিং। এমন থাকলে তো অন্য রোগীদেরও কোনও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে!

সুজয়ের বাড়ির লোকজন জানিয়েছেন, গত কয়েক মাস ধরে বিএসএনএলের চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীদের বেতন হচ্ছে না। তার উপরে সুজয় আলসারের সমস্যায় ভুগছিলেন। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা রয়েছেন। সব মিলিয়ে ওই যুবক মানসিক ও আর্থিক দিক থেকে চাপে ছিলেন বলে বক্তব্য তাঁর আত্মীয়দের। কিন্তু তিনি যে এ ভাবে ‘ঝাঁপ’ দেবেন, তা ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারেননি তাঁরা। সহকর্মীরা জানিয়েছে, ২০১৬ সালেও এক বার গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সুজয়কে এই হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হওয়ায় সে সময়ে তিনি ভেন্টিলেশনে ছিলেন। ছাড়া পাওয়ার কিছু দিন পরেই তাঁর আলসার ধরা পড়ে।

সুজয়ের সহকর্মী এবং বিএসএনএল চুক্তিভিত্তিক কর্মী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক পাপ্পু চৌধুরীর অভিযোগ, একটি সরকারি হাসপাতালে স্লাইডিং জানলার বাইরে কোনও রেলিং দেওয়া নেই। এতে তো আরও অনেকের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাঁরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির দিকেই আঙুল তুলেছেন। এ দিন ইদের ছুটি থাকায় অবশ্য হাসপাতালের সুপার বা কোনও আধিকারিককে পাওয়া যায়নি। ফলে জানা যায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য।

অন্য বিষয়গুলি:

Death Patient Window Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy