Advertisement
E-Paper

পার্কিংয়ের খরচ বাড়ছে কয়েক গুণ, দুর্নীতি রোখা যাবে কি?

পুরসভা সূত্রের খবর, কলকাতায় গাড়ি রাখার নথিভুক্ত জায়গা ৪৫০টি। দরপত্র ডেকে মূলত সমবায় সংস্থাগুলিকে এখানে পার্কিং ব্যবসা চালানোর লাইসেন্স দেওয়া হয়।

কলকাতায় বাড়তে চলেছে গাড়ি বা মোটরবাইকের পার্কিংয়ের খরচ।

কলকাতায় বাড়তে চলেছে গাড়ি বা মোটরবাইকের পার্কিংয়ের খরচ। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২২ ১০:২৬
Share
Save

কলকাতায় গাড়ি বা মোটরবাইকের পার্কিংয়ের খরচ বাড়তে চলেছে দুই থেকে তিন গুণ। কলকাতা পুরসভা ও পুলিশ সূত্রে তেমনটাই খবর। এ নিয়ে সম্প্রতি পুলিশের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে পুর আধিকারিকদের। ঠিক হয়েছে, আগে যেখানে চার চাকার যানবাহনের পার্কিং বাবদ সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত প্রতি ঘণ্টায় ১০ টাকা এবং রাত ১০টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত ৩০ টাকা করে দিতে হত, এখন সেটাই প্রথম দু’ঘণ্টার জন্য দিতে হতে পারে ঘণ্টা-প্রতি ২০ টাকা করে। তৃতীয় থেকে পঞ্চম ঘণ্টার জন্য দিতে হতে পারে ৪০ টাকা করে। এর পর থেকে গুনতে হবে প্রতি ঘণ্টায় ১০০ টাকা!

একই ভাবে ফি বাড়ছে স্কুটার ও মোটরবাইকের মতো দু’চাকার যানের ক্ষেত্রেও। সূত্রের খবর, এখন প্রতি ঘণ্টায় পাঁচ টাকা করে দিলেই স্কুটার বা বাইক যত ক্ষণ খুশি পার্কিংয়ে রাখা যায়। তবে, এ বার থেকে প্রথম দু’ঘণ্টার জন্য নেওয়া হতে পারে ঘণ্টা-প্রতি ১০ টাকা করে। তৃতীয় থেকে পঞ্চম ঘণ্টায় ২০ টাকা করে এবং তার পরের প্রতি ঘণ্টায় ৫০ টাকা করে দিতে হতে পারে। যদিও পার্কিংয়ের নতুন এই হার চালু হওয়ার আগেই নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যার মধ্যে সব চেয়ে বেশি উঠছে পার্কিংয়ের সিন্ডিকেট প্রসঙ্গ। অনেকেরই প্রশ্ন, নতুন হার চালু হলেও বেআইনি পার্কিং ব্যবসার রমরমা বন্ধ করা যাবে কি?

পুরসভা সূত্রের খবর, কলকাতায় গাড়ি রাখার নথিভুক্ত জায়গা ৪৫০টি। দরপত্র ডেকে মূলত সমবায় সংস্থাগুলিকে এখানে পার্কিং ব্যবসা চালানোর লাইসেন্স দেওয়া হয়। সেই বাবদ প্রতি মাসে পুরসভাকে টাকা দেয় ওই সব সংস্থা। এতে বছরে পার্কিং বাবদ পুরসভার আয় হয় প্রায় ২৫ কোটি টাকা। কিন্তু করোনার সময়ে সেই আয় একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকে। সেই কারণেই পার্কিং ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। কিন্তু এর মধ্যেই কাঁটা হয়ে রয়েছে পার্কিং ব্যবসা ঘিরে নানা দুর্নীতির অভিযোগ।

ভুক্তভোগীদের দাবি, শহরের কোনও পার্কিং লটেই পুরসভার নির্দিষ্ট করে দেওয়া ফি লেখা বোর্ড দেখা যায় না। নিয়ম অনুযায়ী, পার্কিংয়ের জায়গায় কাজ করার কথা লাইসেন্স পাওয়া সংস্থার ইউনিফর্ম পরা কর্মীদের। গাড়ি রাখার সময় উল্লেখ করে নির্দিষ্ট যন্ত্রের মাধ্যমে আদায় হওয়া টাকার টোকেন কেটে দেওয়ার কথা। কিন্তু এর কোনও নিয়মই বেশির ভাগ জায়গায় মানা হয় না। টোকেন দেওয়ার বদলে সময়-সুযোগ বুঝে কোথাও ঘণ্টায় ১৫০ টাকা, আবার কোথাও ২০০-২৫০ টাকাও হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পার্কিংয়ের লাইসেন্স পাওয়া অনেককেই আবার লাইসেন্স জমা করে দিয়ে নিজের ইচ্ছে মতো পার্কিং ব্যবসা চালাতে দেখা যায় বলে অভিযোগ। এমনই এক ব্যবসায়ীর মন্তব্য, ‘‘পুরসভাকে টাকা দিয়ে কী হবে? এলাকার নেতারাই সব ঠিক করেন। তাঁদের কিছু কমিশন দিতে পারলেই পার্কিং ব্যবসা চালানোর ক্ষেত্রে আর কোনও ঝামেলা থাকে না।’’ এক পুরকর্তার আবার দাবি, ‘‘পুরসভা হয়তো দরপত্র ডেকে কোনও সংস্থাকে ১০টি গাড়ি রেখে ব্যবসা করার সুযোগ দিয়েছে। দেখা যায়, সেখানে ওই সংস্থা ১৫টি বা তারও বেশি গাড়ি রাখছে। এতে বাড়তি আয়ের টাকা যাচ্ছে ওই সংস্থার হাতে। পুরসভা তো বাড়তি টাকা পাচ্ছেই না, বরং দুর্ঘটনা বাড়ছে।’’

পার্কিংয়ের খরচ বাড়ানোর পাশাপাশি কি এই সমস্যাগুলোও মেটানো যাবে? মেয়র পারিষদ (পার্কিং সংক্রান্ত বিষয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত) দেবাশিস কুমার বললেন, ‘‘যথাযথ ভাবে দরপত্র ডেকে এ বার সবটা করা হবে। এর পরেও অভিযোগ থাকলে কড়া হাতেই সামলানো হবে।’’

Parking Fees Kolkata

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}