Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
school

Online Classes: মোবাইল থেকে মুক্তি মিলবে অবশেষে! হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন বাবা-মায়েরা

হেয়ার স্কুলের নবম শ্রেণির এক পড়ুয়ার মা মনুমা চক্রবর্তী জানান, মোবাইল দেখতে দেখতে তাঁর ছেলের চোখে সমস্যা শুরু হয়ে গিয়েছিল।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২১ ০৫:৫০
Share: Save:

মোবাইল থেকে মুক্তি মিলবে অবশেষে। এই আশাতেই হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন অভিভাবকদের একাংশ। তাঁদের আশা, এ বার অফলাইনে ক্লাস শুরু হওয়ায় ধীরে ধীরে আগের জীবনে ফিরে আসবে তাঁদের ছেলেমেয়েরা। করোনা পরিস্থিতিতে স্কুল বন্ধ থাকায় অনলাইনে ক্লাস করার জন্য মোবাইলই ভরসা ছিল বহু পড়ুয়ার। কিন্তু ক্লাসের সময় ছাড়াও মোবাইল ব্যবহারের প্রবণতা দেখে চিন্তায় পড়েছিলেন অভিভাবকেরা।

স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুলের পড়ুয়া, দশম শ্রেণির শুভম ভাদুড়ীর মা রাখি ভাদুড়ী বলেন, ‘‘মোবাইলে ক্রমেই আসক্ত হয়ে পড়ছিল ছেলেটা। ওর মধ্যে নানা পরিবর্তনও খুব চোখে পড়ছিল। মোবাইল নিয়ে নিলে রেগে যেত। কেমন একটা জেদি হয়ে যাচ্ছিল। ক্লাসের সময়ের পরে গেম খেলত। অফলাইনে ক্লাস শুরু হওয়ায় মোবাইল থেকে মুক্তি মিলল।’’ হাওড়ার বাসিন্দা রাখি জানান, মঙ্গলবার সকালে স্কুলে আসার আগে ছেলের উৎসাহ দেখে তিনি খুব খুশি। তিনি বলেন, ‘‘সকালে উঠেই ব্যাগ গুছিয়ে নিয়েছে আনন্দের সঙ্গে।’’

হেয়ার স্কুলের নবম শ্রেণির এক পড়ুয়ার মা মনুমা চক্রবর্তী জানান, মোবাইল দেখতে দেখতে তাঁর ছেলের চোখে সমস্যা শুরু হয়ে গিয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘গত কয়েক মাস ধরে ওর চোখে ব্যথা শুরু হয়েছে। এ জন্য সব ক্লাস করতে পারত না। ডাক্তার দেখাতে হয়েছে। মোবাইলে ক্লাস করার ঝক্কি থেকে মুক্তি পেয়ে যেন অক্সিজেন পেল ছেলেটা।’’

হিন্দু স্কুলের এক পড়ুয়ার অভিভাবক পিয়ালি দাস বললেন, ‘‘অফলাইনে টিউশনও শুরু হয়েছে। স্কুল থেকে ফিরে মাঠে খেলতেও যাবে। আর মোবাইলে মগ্ন হয়ে থাকার সুযোগই বা কোথায়? আগের মতোই তো ব্যস্ত হয়ে যাবে নানা কাজে।’’

মোবাইল থেকে মুক্তি পেয়ে খুশি পড়ুয়ারাও। হিন্দু স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া রঞ্জিত কর্মকার, রাজীব কুণ্ডু, ঋষভ মান্নারা বলল, ‘‘মোবাইলে বন্ধুদের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ বা মেসেঞ্জারে কথা বলতে বলতে ক্লান্ত লাগত। মুখোমুখি গল্প করার যে কী মজা, এত দিন পরে ফের বোঝা গেল। সব গল্প কী আর ফোনে বা চ্যাটে হয়!’’

হোলি চাইল্ড ইনস্টিটিউটের ক্লাসে ব্ল্যাকবোর্ডে শিক্ষিকারা পড়ুয়াদের জন্য নানা বার্তা লিখে রেখেছিলেন। তার একটি ছিল, ‘ইয়োর স্মাইল মেকস আওয়ার ডে’। স্কুলের পড়ুয়ারা জানায়, শিক্ষিকাদের সঙ্গে এত দিন রোজই অনলাইন ক্লাসে কথা হত। কিন্তু তাঁরা পড়ুয়াদের যে কত ভালবাসেন, তা এত দিন পরে স্কুলে এসে উপলব্ধি করতে পেরে খুশি ওরা। এক পড়ুয়ার কথায়, ‘‘করোনার আতঙ্ক পুরো কাটেনি ঠিকই। কিন্ত মোবাইল-নির্ভরতা কমিয়ে করোনা-বিধি মেনে অফলাইন ক্লাসই আমরা করতে চাই।’’

মনোরোগ চিকিৎসক জয়রঞ্জন রাম বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের মোবাইল-নির্ভরতার জন্য অনেকের মধ্যে নানা ধরনের আচরণগত পরিবর্তনও হতে শুরু করেছিল। বেশ কিছু কেস স্টাডিও আমরা পেয়েছি। তবে এ বার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এলে ওদের মোবাইল-নির্ভরতা ধীরে ধীরে কমবে। যা ওদের পক্ষে খুব ভাল হবে। এ ক্ষেত্রে ছেলেমেয়েদের পাশে অভিভাবকদেরও থাকতে হবে। অকারণে মোবাইল ব্যবহারের অভ্যাস যেন কমে, তা দেখতে হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy