নবরূপে: সংস্কারের পরে দ্বারভাঙা হল। নিজস্ব চিত্র।
দেড়শো বছরেরও বেশি পুরনো কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে প্রচুর ঐতিহাসিক নথিপত্র, আসবাব, ছবি, মূর্তি। শতাব্দীপ্রাচীন সেই সব দুষ্প্রাপ্য জিনিসের যাতে যথাযথ সংরক্ষণ হয়, তা নিয়ে উদ্যোগী হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
১৮৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। এখানকার দ্বারভাঙা ভবন হেরিটেজ ভবন হিসেবে ঘোষিত। ওই ভবনে যেখানে সেনেটের বৈঠক হয়, সেই দ্বারভাঙা হলের সংস্কার করা হয়েছে। সেখানে রাখা হয়েছে মাইকেল মধুসূদন দত্ত, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, মহাত্মা গাঁধী, উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বহু মনীষীর ছবি। আপাতত পুনরুদ্ধার (রেস্টোরেশন) করা হচ্ছে প্রসন্নকুমার ঠাকুরের ছবিটি। উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, কিছু দিনের মধ্যেই ওই ছবিটি সেনেট হলে জায়গা পাবে। তিনি জানান, এই সব ছবির মধ্যে বেশির ভাগই উপহার হিসেবে পেয়েছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।
উপাচার্যের ঘরে রাখা হয়েছে যামিনী রায়ের আঁকা একটি ছবি। শিল্পী নিজেই ছবিটি উপহার দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়কে। সোনালিদেবী জানান, ছবিটি গোটানো অবস্থায় পড়েছিল। সেটিকে ফ্রেমে বাঁধানো হয়েছে। উপাচার্যের দফতরেই রয়েছে আর একটি কাঠ খোদাই (উড কাট) করা ছবি। তবে সেটির শিল্পী কে, তা জানা যায়নি। উপাচার্য জানালেন, এই ছবির শিল্পীকে খুঁজে বার করার চেষ্টা চালাবেন তাঁরা।
দুর্লভ ছবির পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দফতর থেকে পাওয়া গিয়েছে বহু আসবাব। দু’টি চেয়ার পাওয়া গিয়েছে, যাদের গায়ে লেখা রয়েছে ১৮১০ সাল। জানা গিয়েছে, মহারাজা প্রদ্যোতকুমার ঠাকুর এই চেয়ার দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়কে উপহার দিয়েছিলেন। উপাচার্য জানিয়েছেন, বিভিন্ন বিভাগ থেকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে সোফা সেট। সেগুলির কারও কভার বদল করা হয়েছে। কারও গায়ে পড়েছে নতুন রঙের প্রলেপ।
উপাচার্য জানালেন, এত কিছু বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল। সেগুলি একত্রিত করে সংস্কারের কাজ চলছে। পরীক্ষা নিয়ামকের দফতরকে দ্বারভাঙা ভবনের দোতলা থেকে তিনতলায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দোতলায় পরীক্ষা নিয়ামকের দফতর এখন ‘টিচার্স সিলেকশন রুম’। সেখানে ওই সব আসবাবের অধিকাংশ রাখা হয়েছে। রয়েছে দু’টি সিন্দুকও। এখনও অবশ্য সে দু’টি খোলা যায়নি। তবে ঝাড়াই-বাছাই করে ঝকঝকে করা হয়েছে। ওই ঘরের দেওয়ালে রয়েছে নন্দলাল বসুর আঁকা ‘বার্থ অব শ্রীচৈতন্য’। ছবিটি এত দিন পড়ে ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজ়িয়ামে। সেটিকে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।
সংস্কার করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট রুমেরও। প্রথম আচার্য চার্লস জন আর্ল অব ক্যানিং থেকে প্রাক্তন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী পর্যন্ত সকলের ছবি টাঙানো হয়েছে সেখানে। ১৮৫৭ সালের ২৪ জানুয়ারি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য হয়েছিলেন জেমস উইলিয়াম কভিল। তাঁর ছবি থেকে শুরু করে সুরঞ্জন দাস— সব প্রাক্তন উপাচার্যের ছবি রাখা হয়েছে সোনালিদেবীর দফতরে। তিনি জানালেন, সেই ছবিগুলি ডিজিটাইজ়ও করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy