ফাইল চিত্র।
আমপানের বর্ষপূর্তিতে ‘ইয়াস’-এর আছড়ে পড়ার আশঙ্কায় শহরবাসী ও প্রশাসন। তাই ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডবের হাত থেকে জরুরি পরিষেবার পরিকাঠামোকে রক্ষার একাধিক পরিকল্পনা করল লালবাজার। গোটা দেশের মতোই করোনা সংক্রমণে পর্যুদস্ত শহর। তার মধ্যে ঝড় আছড়ে পড়লেও শহরের অক্সিজেন রিফিলিং প্লান্ট বা অক্সিজেনের সরবরাহ যাতে বাধাপ্রাপ্ত না হয়, এখন থেকে সেই ব্যবস্থা নিতে থানা এবং ট্র্যাফিক গার্ডকে নির্দেশ দিল লালবাজার। আসন্ন ঘূর্ণিঝড়ের প্রস্তুতিতে প্রতিটি থানা, ট্র্যাফিক গার্ড ও উচ্চপদস্থ কর্তাদের নিয়ে বৃহস্পতিবার ভিডিয়ো বৈঠক করেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র।
গাছ পড়ে কিংবা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাতে হাসপাতালগুলিতে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যাহত না হয়, তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা প্রস্তুত রাখতে বৈঠকে বলা হয়েছে। দ্রুত পদক্ষেপ করার ব্যাপারে পুরসভা এবং সিইএসসি-র সঙ্গে কথা বলতে বলা হয়েছে থানার ওসিদের। কোভিড
পরিস্থিতিতে অক্সিজেন সরবরাহ স্বাভাবিক রাখায় প্রাধান্য দিচ্ছে লালবাজার। তাই প্লান্ট পরিদর্শন করে থানা ও গার্ডগুলিকে যাবতীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
আমপানের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত হয়েছিল গোটা শহর ও সংলগ্ন অঞ্চল। কয়েক হাজার গাছ পড়ে গিয়েছিল। অসংখ্য বাতিস্তম্ভ ভেঙে পড়েছিল। কোনও কোনও এলাকা প্রায় এক মাস বিদ্যুৎহীন এবং নির্জলা ছিল। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরানোর দাবিতে পথে নেমে মানুষ বিক্ষোভ দেখান। অভিযোগ, শহরকে স্বাভাবিক করতে তখন সব চেয়ে বড় বাধা ছিল পুরসভা এবং সিইএসসি-র সমন্বয়ের অভাব। এ বার যাতে তা না হয়, সেই জন্য ঠিক হয়েছে, লালবাজারের এক কর্তা বৈঠক করবেন পুরসভা এবং সিইএসসি-র সঙ্গে। পুরো বিষয়টি দেখার জন্য কলকাতা পুলিশের এক জন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারকে নোডাল অফিসার হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। এক পুলিশকর্তা জানান, এ বার যাতে সিইএসসি-র লাইনম্যানের
অভাব না হয়, তা দেখতে ওই সংস্থাকে অনুরোধ করা হবে। যেখানে ঝড়ের প্রভাব পড়বে না, সেখান থেকে লাইনম্যানকে নিয়ে আসতে বলা হবে। থানাগুলিকে এলাকার কলের ও বিদ্যুতের মিস্ত্রিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে ডিভিশন এবং থানার গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রাখা যায় কি না, তা দেখা হচ্ছে।
ঝড় কবে আছড়ে পড়বে, এখনও চূড়ান্ত নয়। আগামী কাল, শনিবার বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত নিম্নচাপটি শক্তি বৃদ্ধি করে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। যার সম্ভাব্য অভিমুখ ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গ উপকূল। ২৬ মে সেটি আছড়ে পড়তে পারে স্থলভাগে।
এই সময়সীমার কথা মাথায় রেখে বৈঠকে প্রতিটি থানা ও ট্র্যাফিক গার্ডকে বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং ও হাইমাস্ট ল্যাম্পের বাতি নামিয়ে রাখার বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের একাধিক জেনারেটর তৈরি রাখতে বলা হয়েছে। যাতে এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলেও মানুষ পাম্প চালিয়ে জল তুলতে পারেন। বিদ্যুৎহীন থানা এবং ট্র্যাফিক গার্ডের জন্য পৃথক জেনারেটরের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমপান এবং আয়লার সময়ে থানা বিদ্যুৎহীন হয়ে পুলিশের নিজস্ব যোগাযোগ ব্যবস্থা বড় রকম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বড় বড় গাছ পড়লে তা সরাতে ক্রেন বা জেসিবি তৈরি রাখতে বলা হয়েছে। গাছ কাটার জন্য একাধিক করাত রাখতেও বলা হয়েছে থানা এবং ট্র্যাফিক গার্ডগুলিকে।
পুরনো ও বিপজ্জনক বাড়ির বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে স্থানীয় থানাকে এলাকার পুর প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলতেও বলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy