প্রতীকী ছবি।
অস্ত্রোপচারের টেবিলে শুয়ে রোগী। চলছিল অস্ত্রোপচার। আচমকাই ভেঙে পড়ল টেবিল। অস্ত্রোপচার থামিয়ে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা বাধ্য হলেন রোগীকে ধরে রাখতে। যাতে রোগী মাটিতে পড়ে না যান। তার পরে কোনও ভাবে টেবিল ঠিক করে ফের অস্ত্রোপচার শুরু হয় ঠিকই। তবে আবারও ভেঙে পড়ে যায় সেই টেবিল। তিন বার একই ঘটনা ঘটে। এমন ঘটনায় ওই রোগী সংক্রমণের শিকার হলে তার দায় কে নেবে সেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের ট্রমা সেন্টারে সোমবার ওই ঘটনা ঘটে। বছর চল্লিশের এক মহিলার অস্ত্রোপচার চলছিল। ওই ঘটনার পরে তাঁর সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, দুর্ঘটনায় ওই মহিলার ডান পায়ের উরুর হাড় ভেঙে গিয়েছিল। সোমবার ভোর ৫টা নাগাদ ট্রমা সেন্টারের দোতলায় তাঁর অস্ত্রোপচার শুরু হয়। মহিলার জখম পায়ের ভাঙা হাড় সোজা করে অস্থি বিভাগের চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচার করছিলেন। সেই সময়ে আচমকাই ‘ট্র্যাকশন টেবিল’ ভেঙে পড়ে। তাতে ওই রোগী কার্যত মাটিতে পড়ে যান। অস্ত্রোপচার বন্ধ করে রোগীকে ধরতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন চিকিৎসকেরা। কিন্তু রোগীর কোমর থেকে নীচের অংশ অবশ থাকায় তাঁকে বেশি ক্ষণ ধরে রাখা যায়নি। এই অবস্থায় চিকিৎসকদের ডাক শুনে গ্রুপ-ডি কর্মীরাও রোগীকে ধরতে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে পড়তে বাধ্য হন। প্রথম বারের পরে আরও দু’বার টেবিল ভেঙে একই রকম বিপত্তি ঘটে বলেই ট্রমা সেন্টার সূত্রের খবর। সকাল ন’টা নাগাদ কোনও ভাবে অস্ত্রোপচার শেষ হয়। কিন্তু তার পরের অস্ত্রোপচারটি আর করা সম্ভব হয়নি। আপাতত অস্থি বিভাগের ওই রোগী ট্রমা সেন্টারেরই চারতলায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, সংক্রমণ আটকাতে অস্ত্রোপচারের সময়ে রোগীর শরীর চাদর দিয়ে ঢাকা থাকে। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘যে গ্রুপ ডি কর্মী রোগীকে ধরতে সাহায্য করেন তিনি তো জীবাণুমুক্ত ছিলেন না। ফলে অস্ত্রোপচার চলাকালীন রোগীর সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ক্ষতস্থানের ব্যান্ডেজ খোলার পরেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে।’’
‘ট্র্যাকশন টেবিল’-এর ভগ্ন দশার পিছনে রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থার নীতিকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন আর জি কর হাসপাতালের আধিকারিকদের একটি বড় অংশ। তাঁদের অভিযোগ, অস্থি বিভাগের টেবিল শুধু নয়, পোর্টেবল এক্স-রে-সহ বহু সরঞ্জামের রক্ষণাবেক্ষণ ঠিক মতো হচ্ছে না। পোর্টেবল এক্স-রে যন্ত্রেরও জীর্ণ দশা। অস্থি বিভাগে এক ধরনের বুটের মধ্যে রোগীর পা রেখে অস্ত্রোপচার করা হয়। সেই বুট সম্প্রতি খারাপ হয়ে পড়েছিল। তার জন্যও সপ্তাহ দুয়েক ট্র্যাকশন টেবিলে অস্ত্রোপচার করা যায়নি বলে অভিযোগ।
আর জি কর সূত্রের খবর, আগে যে সংস্থা যন্ত্র সরবরাহ করেছিল তারাই রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিল। সম্প্রতি নতুন একটি সংস্থাকে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়ার পরেই একের পর এক বিড়ম্বনার ঘটনা ঘটে চলেছে।
আর জি করের অস্থি বিভাগের প্রধান সন্দীপ রায়ের যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। অধ্যক্ষ শুদ্ধোদন বটব্যালও ফোন ধরেননি। জবাব দেননি মেসেজেরও। স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কী হয়েছে খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy