Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
WB Municipal Election

WB municipal election 2022: ভোট লুটের অভিযোগে তপ্ত বিধাননগরের বিরোধী শিবির

বৈশাখী মোড়ের কাছে ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের একটি বুথের এই ঘটনা শনিবারের বিধাননগর পুরভোটের বিক্ষিপ্ত কোনও ঘটনা নয়।

পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের একটি বুথে ভুয়ো ভোটারের অভিযোগ করছেন সিপিএম প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা বর্মণ। শনিবার।

পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের একটি বুথে ভুয়ো ভোটারের অভিযোগ করছেন সিপিএম প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা বর্মণ। শনিবার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

কাজল গুপ্ত
বিধাননগর শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:৩৯
Share: Save:

বুথ থেকে বেরিয়ে আসা এক যুবককে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কোথায় থাকেন তিনি? জানিয়েছিলেন, স্থানীয় বাসিন্দা। ভোটার কার্ড কোথায়? উত্তর এসেছিল, বাড়িতে। সেই ভোটারকেই আগলাতে রে রে করে এগিয়ে এলেন শাসকদলের কর্মীরা। আগ বাড়িয়ে তাঁদের বলতে শোনা গেল, ‘‘আমাদের পাড়ার ছেলে।’’ এ হেন ভোটারকে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ করা তো দূর অস্ত্, উল্টে সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের উদ্দেশেই তাদের তরফ থেকে সতর্কবার্তা উড়ে এল।

বৈশাখী মোড়ের কাছে ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের একটি বুথের এই ঘটনা শনিবারের বিধাননগর পুরভোটের বিক্ষিপ্ত কোনও ঘটনা নয়। দিনভর এমন ভোটারদের নিয়েই চলল কানাঘুষো। কংগ্রেস, সিপিএম এবং বিজেপি প্রার্থীদের দাবি, সকাল থেকে বুথে বুথে ভোট দিয়ে যাচ্ছে বাইরে থেকে আসা মানুষ। তাঁদের অভিযোগের আঙুল তৃণমূলের দিকে। অভিযোগ খারিজ করে তৃণমূল প্রার্থীদের একাংশের দাবি, সারা বছর এলাকায় যাঁরা জনসংযোগ রাখেন না, যাঁরা বুথে এজেন্ট দিতে পারেন না, তাঁরা এলাকার লোককে চিনবেন কী ভাবে?

স্থানীয় না বহিরাগত, এই দ্বন্দ্ব নিয়েই এ দিন সকাল থেকে উত্তেজনা ছড়ায় ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে। ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী সব্যসাচী দত্ত এবং বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস জানা। প্রচার-পর্ব থেকেই তাঁকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন বিজেপি প্রার্থী। এ দিন তাঁর অভিযোগ, প্রতিটি বুথে বহিরাগতেরা এসে ভোট দিয়ে যাচ্ছে। সিএফ ব্লকের কমিউনিটি হলে গিয়ে তিনি অভিযোগ জানান, লাইনে দাঁড়ানো ভোটারদের কাছে সচিত্র পরিচয়পত্র নেই। খোঁজ শুরু করতেই লাইন ছেড়ে চলে যেতে দেখা গেল একাধিক ব্যক্তিকে।

এ সব নিয়ে দিনভর বিরোধীদের অভিযোগ শোনা গেল। কংগ্রেসের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সভাপতি তাপস মজুমদারের কথায়, ‘‘ভোট হল কোথায়? ভোট লুট করে বৈতরণী পার করবে।’’ ভোট লুটের অভিযোগ ঘিরে দফায় দফায় ৩১, ৩২, ৩৭, ৩৯-সহ একাধিক ওয়ার্ডে শাসক ও বিরোধী দলের কর্মীদের মধ্যে বচসা-হাতাহাতি হয়। বৈশাখীতে ইট ছোড়াছুড়ি হলে পুলিশবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বৈশাখী আবাসনের বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, বহিরাগতেরা আবাসনে ঢুকে তাঁদের হুমকি দিচ্ছে, অথচ পুলিশ দর্শক। পুলিশের এক কর্তার দাবি, অভিযোগ পাওয়া মাত্রই বাহিনী এলাকায় টহল দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আবাসনের বুথ চত্বরে বিজেপি প্রার্থী প্রমিতা সাহা ঘোষ এবং তৃণমূল প্রার্থী মিনু চক্রবর্তীকে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়তে দেখার অভিযোগ উঠেছে। মিনুর অভিযোগ, শুধু বিজেপি নয়, সিপিএম-ও মারধর করেছে। সিপিএমের পাল্টা অভিযোগ, সকাল থেকে ভোট লুট চলছে। তার প্রতিবাদ করায় তাঁদের কর্মীদের উপরে তৃণমূল হামলা চালায়। সিপিএম নেতা সোমনাথ ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ভোটের আগের রাত থেকে এজেন্টদের হুমকি দেওয়া এবং অবাধে ভোট লুট করে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে।

যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করে সল্টলেকের ভোটার, বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের প্রশ্ন, ‘‘বিরোধীরা এজেন্ট দিতে না পারলে তৃণমূলের কী করণীয়?’’ তাঁর দাবি, ‘‘শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচন কমিশন এবং পুলিশ ভাল কাজ করেছে। পায়ের তলা় থেকে মাটি সরে যেতে দেখে এ সব বিরোধীদের অপপ্রচার।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy