ফাইল চিত্র।
নতুন বছরে বাতাসের মানের নিরিখে এখনও পর্যন্ত মাত্র এক দিনই ‘সন্তোষজনক’ অবস্থায় ছিল কলকাতা। বাকি ২৬টি দিনই শহরের বাতাসের মান ‘খুব খারাপ’, ‘খারাপ’ ও ‘মাঝারি’র মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে দেশের বিভিন্ন শহরের বায়ু সূচকের (এয়ার কোয়ালিটি ইন্ডেক্স) যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানে এমনটাই দেখা যাচ্ছে। ফলে শীতের সময়ে প্রতি বছরই শহরে বাতাসের মানের অবনতির যে ধারাবাহিকতা থাকে, এ বছরেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। যা নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই আবারও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবেশকর্মী থেকে চিকিৎসকেরা।
এই পরিস্থিতিতে আজ, সোমবার এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে দ্য ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটি কলেজে শহরের বায়ুদূষণ সংক্রান্ত একটি আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে পরিবেশবিদ এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদেরও উপস্থিত থাকার কথা। ওই সভার মূল বিষয়ই হল, ‘বায়ুদূষণ কি আমাদের আয়ু কমিয়ে দিচ্ছে?’
পরিবেশবিদেরা জানাচ্ছেন, এ রকম আলোচনা কেন এখন এত প্রাসঙ্গিক, তা কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্য দেখলেই বোঝা যাবে। পর্ষদের তথ্য অনুযায়ী, বায়ু সূচকের নিরিখে জানুয়ারির প্রথম ২৫ দিনের মধ্যে শহরের বাতাসের মান দু’দিন ছিল ‘খুব খারাপ’, দশ দিন ছিল ‘খারাপ’ এবং ‘মাঝারি’ দূষণ ছিল ১২ দিন। ‘সন্তোষজনক’ ছিল মাত্রই একটি দিন। রবিবারও বাতাসের মান ‘খারাপ’ ছিল বলে দূষণ পর্ষদ সূত্রের খবর। ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহ-সভাপতি অজয় মিত্তল বললেন, ‘‘ঠিক কী ধরনের বাতাসে শ্বাস নিচ্ছি, তা সকলের সামনে তুলে ধরতেই এই আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: শর্তসাপেক্ষে বাড়ির অনুমতি মৎস্য দফতরের জমিতে
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ধারাবাহিক ভাবে বাতাসের মান খারাপ থাকার ফলে দুই ধাপে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শরীর। প্রথমটি হল তাৎক্ষণিক ধাপ, যেখানে খুসখুসে কাশি, নাক থেকে ক্রমাগত জল পড়তে থাকা, গলা জ্বালা-সহ একাধিক উপসর্গ থাকে, যা কিছুতেই সারতে চায় না। আর দ্বিতীয়টি হল দীর্ঘকালীন ক্ষতি। তাতে ফুসফুসের ক্ষমতা কমে যাওয়ার পাশাপাশি সহজে ফুসফুসে সংক্রমণ, এমনকি ক্যানসার পর্যন্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
আরও পড়ুন: দু’মাসের মেয়েকে মেরে ম্যানহোলে, গ্রেফতার মহিলা
চিকিৎসকদের এ-ও বক্তব্য, বাতাসের মানের অবনতির ফলে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে শিশু ও বয়স্কদের। কারণ, শিশুদের ফুসফুস অপরিণত অবস্থায় থাকে, আর বয়স্কদের ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কমে যায়। তাঁরা এ-ও জানাচ্ছেন, মাঝবয়সিদের ক্ষেত্রে যে ক্ষতি হচ্ছে না, এমনটা নয়। শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক সংযুক্তা দত্ত বলেন, ‘‘মাঝবয়সিদের কী ক্ষতি হচ্ছে, সেটা দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে ধরা পড়বে। অর্থাৎ, বয়স হলে আমরা বুঝতে পারব, বাতাসের মান কতটা ক্ষতি করেছে। কারণ, শহরের বাতাসের মান যা দাঁড়িয়েছে, তাতে অল্প অল্প করে বিষ প্রতিনিয়ত আমাদের শরীরে ঢুকছে।’’ আর এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘শ্বাসকষ্ট নিয়ে আমাদের কাছে আসা শিশুদের সংখ্যা অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গিয়েছে। এগুলো আসলে ইঙ্গিত যে, ঠিক কোন জায়গায় আমরা দাঁড়িয়ে রয়েছি!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy