Advertisement
১৮ অক্টোবর ২০২৪
Sealdah ESI Hospital

হাসপাতালে আগুন, খোলা আকাশের নীচে কিছু রোগী, শ্বাসকষ্টে ‘মৃত’ এক, মানতে নারাজ শিয়ালদহ ইএসআই

শিয়ালদহ ইএসআই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক ক্যানসার রোগী শ্বাসকষ্টে মারা গিয়েছেন বলে দাবি করেছে তাঁর পরিবার। পরিবারের দাবি, আগুন লাগার পরে কালো ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই রোগী।

(বাঁ দিকে) হাসপাতাল চত্বরে খোলা আকাশের নীচে এক রোগী। শিয়ালদহ ইএসআই হাসপাতালের দোতলা থেকে বেরিয়ে আসছে আগুন (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) হাসপাতাল চত্বরে খোলা আকাশের নীচে এক রোগী। শিয়ালদহ ইএসআই হাসপাতালের দোতলা থেকে বেরিয়ে আসছে আগুন (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৪ ১০:৫৯
Share: Save:

শিয়ালদহ ইএসআই হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের জের। আতঙ্ক ছড়াল রোগী এবং তাঁদের পরিজনদের মধ্যে। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার আগেই সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় রোগীদের। ওই হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন ৮০ জন রোগীর মধ্যে কয়েক জনকে মানিকতলা ইএসআই হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কয়েক জনকে হাসপাতালের অন্যত্র নিরাপদ স্থানে সরানো হয়।

শুক্রবার সকালে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর দেখা যায় হাসপাতাল চত্বরে খোলা আকাশের নীচেই রাখা হয়েছে কয়েক জন রোগীকে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই রোগীদের প্রত্যেককেই ভিতরে নিয়ে যাওয়া হবে। ফিরিয়ে আনা হবে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা রোগীদেরও। তার মধ্যে শিয়ালদহ ইএসআই-তে চিকিৎসাধীন এক ক্যানসার রোগী শ্বাসকষ্টে মারা গিয়েছেন বলে দাবি করেছে তাঁর পরিবার। পরিবারের দাবি, আগুন লাগার পরে কালো ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই রোগী। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে মৃত্যু হয় তাঁর। তবে শ্বাসকষ্টের জেরে ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছে, এমনটা মানতে নারাজ হাসপাতালের সুপার অদিতি দাস।

শুক্রবার ভোর ৫টা নাগাদ হাসপাতালের দোতলা থেকে কালো ধোঁয়া বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। খবর দেওয়া হয় দমকলকে। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের ১০টি ইঞ্জিন। দমকলের তরফে জানানো হয়, সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে। আগুন লাগার খরব পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছন রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু, তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। সেখানে পৌঁছয় নারকেলডাঙা থানার পুলিশও।

আগুনের সম্ভাব্য উৎসস্থল মেল সার্জারি ওয়ার্ডের আশপাশ থেকে তো বটেই, আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় তিনতলা থেকেও রোগীদের নামিয়ে আনা হয়। দমকলমন্ত্রী বলেন, “পুজোর কারণে অনেক রোগীই ছুটি পেয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। বড় ক্ষয়ক্ষতি কিংবা প্রাণহানি এড়ানো গিয়েছে। দমকলকর্মীরা সাহসের সঙ্গে কাজ করেছেন।” পুলিশ এবং দমকলের কাজের প্রশংসা করেন কুণালও।

দমকলের প্রাথমিক অনুমান, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রে (এসি) শর্ট সার্কিটের কারণেই এই অগ্নিকাণ্ড। তবে এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে তদন্ত চালাচ্ছে তারা। আগুন লাগায় হাসপাতালে বিস্তর পরিকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, শুক্রবার হাসপাতালের বহির্বিভাগ (আউটডোর) বন্ধ থাকবে। কর্তৃপক্ষের এই ঘোষণার আগেই দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই চিকিৎসার কারণে হাসপাতালে পৌঁছেছিলেন। তাঁদের ফিরে যেতে হয়। অন্য দিকে, আগুন লাগার খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছন চিকিৎসাধীন রোগীর পরিজনেরা। আতঙ্কে অনেকেই কেঁদে ফেলেন।

শুক্রবার বেলার দিকে হাসপাতাল পরিদর্শনে যান কলকাতার পুলিশ কমিশনার (সিপি) মনোজ বর্মা। তিনি সুপারের সঙ্গে কথা বলেন। পরে সুপার জানান, পুলিশের তরফে একটি ফরেন্সিক দল ঘটনাস্থলে এসে নমুনা সংগ্রহ করবে। কী কারণে এই অগ্নিকাণ্ড, তা খতিয়ে দেখা হবে। হাসপাতালের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে অভিযোগ তোলেন রোগীর পরিজনেরা। এই প্রসঙ্গে সুপার বলেন, “২০২২ সাল থেকে একটি ঠিকাদার সংস্থা অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার দায়িত্বে ছিল। কিন্তু দু’বছর পরেও তারা কাজ শেষ করতে পারেনি। এই নিয়ে আমরা অভিযোগও জানিয়েছি। ওই ব্যবস্থা থাকলে হয়তো আগুন দ্রুত নেভানো যেত।” পুলিশের কাছ থেকে ছাড়পত্র না পাওয়া পর্যন্ত আপাতত হাসপাতালের বহির্বিভাগ বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata fire ESI Sealdah Fire Brigade
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE