ধৃতকে রবিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। প্রতীকী ছবি।
ভোরে রেলিং কেটে চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ল চোর। মধ্য কলকাতার ফুটপাতের বাসিন্দা ওই ব্যক্তিকেই রেলিং চুরি চক্রের মাথা বলে মনে করছে পুলিশ। ধৃতের নাম ভোলা সাহু ওরফে লম্বু। ধৃতকে রবিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
বেশ কিছু দিন ধরেই অভিযোগ আসছিল যে, বি বা দী বাগ এলাকার রাস্তা থেকে গায়েব হয়ে যাচ্ছে সুদৃশ্য রেলিং! ঐতিহ্যশালী (হেরিটেজ) একাধিক ভবনের সামনে থেকে দিনের পর দিন রেলিং কেটে চুরি করার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় কলকাতার নগরপালকে চিঠি লিখেছিলেন স্থানীয় পুর প্রতিনিধি। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করে। এর পরেই রবিবার ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ দুষ্কৃতীর নাগাল পায় পুলিশ।
বি বা দী বাগ এলাকায় রাজভবন, আকাশবাণী ভবন, এজি বেঙ্গল থেকে শুরু করে একাধিক ঐতিহ্যশালী ভবন রয়েছে। সুদৃশ্য রেলিং দিয়ে ওই সব এলাকা কলকাতা পুরসভার তরফে আগেই সাজানো হয়েছিল। সম্প্রতি নগরপালকে লেখা চিঠিতে স্থানীয় কংগ্রেস পুর প্রতিনিধি সন্তোষ পাঠক উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছিলেন, বেশ কিছু দিন ধরে ওই সুরক্ষিত এলাকা থেকে রেলিং কেটে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে এক বা একাধিক দুষ্কৃতী। যা খুবই উদ্বেগজনক।
কলকাতা পুরসভার ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের ওই পুর প্রতিনিধির অভিযোগ, ‘‘হেরিটেজ এলাকার ওই সমস্ত রেলিং কেবল সৌন্দর্যই বাড়ায় না, ফুটপাতের সীমানাও বটে। ফলে ব্যস্ত ওই রাস্তার ফুটপাত দিয়ে পথচারীরাও নিশ্চিন্তে হাঁটতে পারেন। দিনের পর দিন আমার ওয়ার্ডের হেরিটেজ এলাকা থেকে রেলিং চুরি হওয়ার ঘটনা উদ্বেগজনক।’’ কিন্তু গোটা এলাকা সিসি ক্যামেরায় মোড়া। ২৪ ঘণ্টা রাস্তায় পুলিশ টহল দেয়। তা হলে কী ভাবে এমন ঘটছে? পুর প্রতিনিধির মতে, কলকাতা পুুলিশের সদর দফতর লালবাজারের কাছেই এমন ঘটনা ঘটলে শহরেরঅন্যত্র কী অবস্থা হচ্ছে, সহজেই বোঝা যাচ্ছে।
দিন কয়েক আগে মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছিলেন, শহরের বিভিন্ন এলাকার রেলিং, পাইপ চুরি হয়ে যাচ্ছে। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে কলকাতার নগরপালকে চিঠি লিখেছেন তিনি। সন্তোষ জানান, নগরপাল ছাড়াও কলকাতার মেয়র, পুর কমিশনার, কলকাতা পুলিশের ডিসি (সেন্ট্রাল), ডিসি (ট্র্যাফিক)-সহ হেয়ার স্ট্রিট থানার ওসি-কে চিঠির প্রতিলিপি পাঠিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, ‘‘কে বা কারা রেলিং কেটে চুরি করছে, তা পুলিশ তদন্ত করে বার করুক। এক জনকে নয়, পুরো দলকে ধরতে হবে। না হলে আগামিদিনে এদের দৌরাত্ম্য বাড়তেই থাকবে।’’
হেয়ার স্ট্রিট থানা সূত্রের খবর, রবিবার ভোরে কাউন্সিল হাউস স্ট্রিটের কাছে রেলিং কাটার সময়ে দীনবন্ধু কেশ নামে কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিক ভোলাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। ধৃতকে জেরা করে লালদিঘি সংলগ্ন এলাকা থেকে একাধিক রেলিং উদ্ধার করেন তদন্তকারীরা। ওই রেলিংগুলি রাজভবন এলাকা থেকে চুরি করেছিল বলে ধৃত জানিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ওই চক্রের চাঁই। তাকে জেরা করে বাকি সদস্যদের খোঁজ শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy