প্রতীকী ছবি।
ছ’দিনের মাথায় উদ্ধার হল নিখোঁজ শিশুকন্যার দেহ। শনিবার গভীর রাতে নরেন্দ্রপুর থানার উত্তর খেয়াদা থেকে ওই শিশুর পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশের দাবি, ছ’বছরের শিশুটিকে পেয়ারা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। বারুইপুরের জেলা পুলিশ সুপার রশিদ মুনির খান জানিয়েছেন, এই ঘটনায় আসগর আলি নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জেরায় দোষ কবুল করেছে অভিযুক্ত।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গত সোমবার দুপুরের পর থেকে খোঁজ মিলছিল না শিশুটির। তার মা প্রতিবেশী আসগরের বিরুদ্ধে মেয়েকে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকে এলাকাছাড়া ছিল ওই যুবকও। শিশুটির প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, ঘটনার দিন সকাল থেকে সে আসগরের সঙ্গে ছিল। তাকে নিয়ে আসগরকে বাড়ির পাশে জঙ্গলের দিকে যেতে দেখা গিয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন এলাকার কয়েক জন বাসিন্দা। বাসিন্দাদের সেই বক্তব্যের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের সন্দেহ হয়, বাচ্চাটিকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। সে কারণে মঙ্গল ও বুধবার পুলিশ কুকুর এনে জঙ্গলে তল্লাশি চালানো হয়। তখন কয়েকটি সাপ নজরে পড়ে তদন্তকারীদের। পরে শুক্রবার কলকাতা পুলিশের ড্রোন ক্যামেরা এনে চলে তল্লাশি। কিন্তু তাতেও কিছু পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি খোঁজ শুরু হয় আসগরের। ভাঙড় ও হাওড়ায় তার কয়েক জন আত্মীয়ের বাড়িতে সন্ধান চালায় পুলিশ। কিন্তু ওই যুবকের খোঁজ মেলেনি।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দু’য়েক আগে গুলি চালিয়ে ছিনতাইয়ের একটি ঘটনায় অভিযুক্ত ছিল আসগর। সে সময়ে তাকে পার্ক সার্কাস স্টেশন থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
সম্প্রতি সোনু নামে আসগরের এক শাগরেদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, শিয়ালদহ, বালিগঞ্জ, সোনারপুর ও মল্লিকপুর স্টেশনে ডেরা রয়েছে আসগরের। এর পরেই শনিবার বারুইপুর জেলা পুলিশের স্পেশ্যাল অপারেশন্স গ্রুপ এবং নরেন্দ্রপুর থানার অফিসারদের নিয়ে চারটি দল গঠন করা হয়। ওই দিন দুপুর থেকে তারা চারটি স্টেশনে তল্লাশি শুরু করে। শেষে রাতে শিয়ালদহ স্টেশনে খোঁজ পাওয়া যায় আসগরের। তখনই তাকে গ্রেফতার করা হয়। শিশুকন্যাটির বাড়ি থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূরে জঙ্গলে কোথায় তার দেহ রয়েছে, রাতেই তদন্তকারীদের নিয়ে গিয়ে দেখায় অভিযুক্ত।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই শিশুটির বাবা পেশায় বাসের খালাসি। আসগরও বাসের খালাসির কাজ করে। সেই সূত্রেই শিশুটির বাড়িতে তার যাতায়াত ছিল। সোমবার বাচ্চাটির হাতে দু’টি পেয়ারা দিয়ে তাকে জঙ্গলে নিয়ে গিয়েছিল আসগর। সেখানে পাঁচিল ঘেরা একটি জায়গা রয়েছে। উল্টো দিকে রয়েছে একটি জামরুল গাছ।
পুলিশের দাবি, জেরায় অভিযুক্ত জানিয়েছে, জামরুল খাওয়ানোর টোপ দিয়ে শিশুটিকে পাঁচিলের উপরে বসায় সে। তার পরে নিজে পাঁচিল টপকে তাকে ও-পারে নিয়ে যায়। তদন্তকারীদের কথায়, ধর্ষণের সময়ে শিশুটি চিৎকার করে উঠেছিল। তখন তার মুখ চেপে ধরে আসগর। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, ওই সময়ে সে মত্ত অবস্থায় ছিল। প্রাণপণে মুখ চেপে ধরায় আসগরের হাতের চাপে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যায় বাচ্চাটি।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘ধৃতকে হেফাজতে রেখে মামলার বিচার প্রক্রিয়া চালানোর জন্য আদালতে আর্জি জানানো হবে। যত দ্রুত সম্ভব চার্জশিট দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy