ফাইল চিত্র।
সকাল সাড়ে ন’টা। লালবাজারের দেওয়া মোবাইল ফোন বেজে উঠল থানায়।
‘‘হ্যালো স্যর, একটা অভিযোগ জানাব।’’
ডিউটি অফিসার: কী অভিযোগ?
আমার বয়স হয়েছে। তার উপরে করোনার ভয়। থানায় না গিয়ে কি ফোনে অভিযোগ করতে পারি?
ডিউটি অফিসার: আপনার যা অভিযোগ আছে, তা কাগজে লিখে এই নম্বরেই হোয়াটসঅ্যাপ করে দিন। আমরা অভিযোগ নিয়ে নেব।
কিন্তু জিডি বা এফআইআর নম্বর কী ভাবে পাব?
ডিউটি অফিসার: জিডি বা এফআইআরের কপি আপনার মোবাইলেই হোয়াটসঅ্যাপ করে দেব।
ফোনের অপর প্রান্তের ওই ব্যক্তির নম্বর থেকে অবশ্য পরে কোনও অভিযোগ আসেনি। কিন্তু এমন তো কতই হয়। ফলে এ নিয়ে মাথাও ঘামাননি কেউ। আসল ঘটনা সামনে আসে এর কিছু পরে। ইস্ট ডিভিশনের অন্তর্গত ওই থানার সেই ডিউটি অফিসার জানতে পারেন, ফোন করা ব্যক্তি আসলে লালবাজারের এক পুলিশকর্তা! থানাকে লালবাজারের দেওয়া মোবাইলে ঠিক মতো অভিযোগ নেওয়া হচ্ছে কি না, তা জানতেই পরিচয় লুকিয়ে ফোন করেছেন তিনি। সূত্রের খবর, একাধিক থানাতেই এমন ফোন গিয়েছে।
গত কয়েক দিন ধরেই রাজ্যে সংক্রমণের লেখচিত্র ঊর্ধ্বমুখী। কলকাতায় সংক্রমণের হার অনেক বেশি। কলকাতা পুলিশের একাধিক কর্তা থেকে নিচুতলার কর্মীদের পর পর সংক্রমিত হওয়ার খবরও আসছে। ভবানীপুর, গল্ফ গ্রিন, প্রগতি ময়দান, বড়বাজার, মানিকতলা, কসবা, একবালপুর, বাঁশদ্রোণী-সহ একাধিক থানার কর্মীরা সংক্রমিত। শুধুমাত্র ভবানীপুর থানাতেই আক্রান্ত ৩০ জন। কোনও কোনও থানায় আক্রান্তের সংখ্যা এত বেশি যে, কাজ চালানোই কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই থানায় না এসে নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানানোর পরিষেবা দিন চারেক আগে চালু করেছে লালবাজার। প্রতিটি থানাকে নির্দিষ্ট নম্বর-সহ মোবাইল ফোনও দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু পরিষেবা নিয়ে কিছু অভিযোগ আসছিল। অভিযোগ ছিল, নিচুতলার পুলিশকর্মীদের একাংশের গাফিলতিতে নতুন পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মানুষ। এর সত্যতা যাচাই করতেই এই ফোন বলে মনে করা হচ্ছে। ইস্ট ডিভিশনের ওই থানার সেই ডিউটি অফিসার বললেন, ‘‘অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসায় প্রথমে বুঝতে পারিনি। পরে জানতে পারি, উনি লালবাজারের কর্তা।’’ যা শুনে উল্টোডাঙার বাসিন্দা অচিন্ত্য সমাদ্দার বললেন, ‘‘উপরতলার পুলিশ এ ভাবে নজরদারি চালালে মানুষের হয়রানি হয় না। কারণ, বহু ক্ষেত্রে নিয়ম থাকে খাতায়কলমে, বাস্তবে অস্তিত্ব থাকে না।’’
লালবাজারের এক পুলিশকর্তা অবশ্য বলছেন, ‘‘এই ধরনের নজরদারি নতুন নয়। আগেও অনেক ক্ষেত্রে এমন হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে থানা বা ট্র্যাফিক গার্ডগুলিতে ঠিক মতো কাজ হচ্ছে কি না, তা যাচাই করতে বিভিন্ন ভাবে পরীক্ষা করা হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy