গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
জামিন পাওয়ার পর নিয়ম মেনে আদালতে হাজিরা না দেওয়াই কাল হল ঘুটিয়ারি শরিফের বাসিন্দা বছর একুশের সুলেমান গাজির। মঙ্গলবার ভোরবেলা ‘খবরাখবর’ নিয়েই রানিকুঠির ৮৮ বছরের বৃদ্ধ অমলকুমার বসুর বাড়িতে সঙ্গীকে নিয়ে হানা দিয়েছিল সুলেমান। একা বৃদ্ধকে বাগে পেতেও অসুবিধা হয়নি। চোর হলেও, বৃদ্ধের অসুবিধার কথা ভেবে গ্যাস বুকিংয়ের জন্য ২ হাজার টাকা আর মোবাইলের সিম ফেরত দিয়ে এসেছিল সে।
কিন্তু তার পরেও শেষ রক্ষা হল না। মাস সাতেক আগে জেল থেকে শেষ দফায় ছাড়া পাওয়ার পর নিয়ম করে আদালতে হাজিরা দিচ্ছিল না সুলেমান। তাই আদালত তার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল। বুধবার রাতে এ রকম আরও জামিন অযোগ্য পরোয়ানা যাদের নামে আছে তাদের খোঁজে বেরোয় কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের অফিসাররা।সুলেমানকেও পাকড়াও করা হয় তার বাঁশদ্রোণীর ‘ঠেক’ থেকে।
তখনও পুলিশ ঘুণাক্ষরেও জানত না সেই অমলবাবুর বাড়িতে হানা দিয়েছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সকালে আদালতে তোলার পর পুলিশ নিজেদের হেফাজতে সুলেমানকে নিয়ে আসার পর হঠাৎ ‘চোখখোলে’ এক গোয়েন্দার। লালবাজার সূত্রে খবর, বৃদ্ধ চোরের যে বর্ণনা দিয়েছিলেন তার ভিত্তিতে একটি স্কেচ তৈরি করা হয়েছিল। টেবিলে থাকা সেই স্কেচ আর সুলেমনের মুখের মিল দেখেই টনক নড়ে গোয়েন্দাদের। তাঁরা চেপে ধরেন সুলেমানকে। প্রথমে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও, ততক্ষণে তার ছবি অমলবাবুকে দেখিয়ে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছেন চোর সুলেমান ছাড়া আর কেউ নয়।
বাঁ দিকে সুলেমান গাজি এবং ডান দিকে সম্রাট মণ্ডল
আরও পড়ুন-বেলাগাম জীবনযাত্রাই টাকার লালসা বাড়িয়ে গিয়েছে টিয়ার! এমনটাই ধারণা পুলিশের
এরপর চেপে ধরতেই সুলেমান স্বীকার করে গোটা ঘটনার কথা। তার কাছ থেকেই জানা যায়, সম্রাট মণ্ডলের কথা। সে ওই কাজে সুলেমানকে সাহায়্য করেছিল। গোয়েন্দাদের একটি দল এর পর দৌড়য় ঘুটিয়ারি শরিফে সম্রাটকে পাকড়াও করতে। পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবারসন্ধ্যার মধ্যেই গ্রেফতার হয় সম্রাট। তবে একটা ধন্দ কাটছিল না গোয়েন্দারা। অমলবাবু যে তাঁরএক প্রতিবেশীর সঙ্গে ১ লাখ টাকা নিয়ে চুরির আগের দিনই কথা বলছিলেন, তা সুলেমান জানল কী করে? কারণ অমলবাবু পুলিশকে জানিয়েছিলেন, চোরেদের একজন এসে প্রথমেই ১ লাখ টাকা কোথায় আছে, তার খোঁজ করছিল।
আরও পড়ুন-বিদেশবাসের উচ্চাকাঙ্ক্ষা! আত্মীয় ডাক্তার পরিবারের সকলকে খুন করে লুঠের ছক কষেছিল টিয়া
পুলিশ সূত্রের খবর, সুলেমানকে এ নিয়ে প্রশ্ন করলে, গোয়েন্দাদের সে বলেছে, ‘‘বুড়ো যখন কথা বলছিল তখন তো আমি নীচে বাড়ির সামনে রাস্তায় রাউন্ডে ছিলাম।’’ সুলেমানের জবাবে এক গোয়েন্দা আধিকারিকের মন্তব্য,‘‘এতদিন জানতাম পুলিশ এলাকায় রাউন্ড দেয়। এখন তো দেখছি চোরও রাউন্ড দেয়!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy