নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এনকেডিএ)। —ফাইল চিত্র।
নিউ টাউনে সাপের উপদ্রব নিয়ে গত বছর চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছিল। দু’টি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। এ বার বর্ষার মরশুমের শুরুতেই সতর্ক হয়েছে নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এনকেডিএ)। গভীর জঙ্গল কাটতে শ্রমিকদের নিষেধ করা হয়েছে। তার বদলে ঘন জঙ্গল কাটতে ব্যবহৃত হচ্ছে জেসিবি। সাপে কামড়ালে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসার জন্য নিউ টাউনের চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালে ছ’টি শয্যাও তৈরি রাখা হয়েছে।
জলা ভরাট করে তৈরি হওয়ায় নিউ টাউনের বাস্তুতন্ত্রে তার প্রভাব পড়েছে। ফলে ওই শহরাঞ্চলে সাপের বসতি রয়েছে শুরু থেকেই। এখনও সেখানে অজস্র বড় বড় জমি ফাঁকা ও জঙ্গলাকীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। আবাসনে বা বাড়িতে সাপ ঢোকার ঘটনাও নতুন নয়। কিন্তু গত বছর পরীক্ষা দিতে এসে নিউ টাউনের রাস্তায় সাপের কামড়ে মারা যান এক পরীক্ষার্থী। নিউ টাউন লাগোয়া গ্রামেও সাপের কামড়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। সেই ছাত্রকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলেও উপযুক্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকার অভিযোগ ওঠে। ছাত্রটিকে এর পরে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলেও বাঁচানো যায়নি। এ ছাড়াও সাপের কামড়ের আরও দু’-তিনটি ঘটনা ঘটে এলাকায়।
এনকেডিএ আধিকারিকেরা জানান, বর্ষায় জঙ্গল কাটা যাচ্ছে না। তবে নাগরিক জীবনে এর প্রভাব যাতে না পড়ে, সে দিকে নজর রেখে কিছু জঙ্গল সাফাই করা হচ্ছে। পুজোর মধ্যে জঙ্গল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে বলে জানানো হয়েছে। এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘গত বছর ছাত্র-মৃত্যুর ঘটনার পরে সাপের উপদ্রব আচমকা ভয়ের জায়গায় চলে যায়। তার পরে নিউ টাউনের একটি হাসপাতালে সাপের ছোবল খাওয়া রোগীদের জন্য শয্যা বরাদ্দ করা হয়েছে। কারণ, প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রগুলিতে অ্যান্টিভেনম থাকলেও পরবর্তী চিকিৎসার পরিকাঠামো নেই। তবে প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে অ্যান্টিভেনম সর্বদা মজুত রাখা হয়।’’
এনকেডিএ জানাচ্ছে, নিউ টাউনে জঙ্গল কাটতে শ্রমিকদের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। একাধিক দলে তাঁদের ভাগ করে কাজে নিয়োগ করা হয়েছে। প্রতিটি দলে এক জন করে সুপারভাইজ়ার রয়েছেন। তাঁরা জল জমা, মশা নিয়ন্ত্রণ ও সাপের উপদ্রব নিয়ন্ত্রণের কাজ পর্যবেক্ষণ করছেন।
নিউ টাউন ঘুরে দেখা গেল, কোথাও কোথাও জঙ্গল এক মানুষ উচ্চতার সমান বড় হয়ে গিয়েছে। বিশেষত খালপাড়ের রাস্তায় জঙ্গল এতটাই ঘন যে, সাপের ভয়ে লোকজন সেই পথ এড়িয়ে চলছেন। আধিকারিকেরা জানান, বিপদ এড়াতে জেসিবি দিয়ে ঘন জঙ্গল কাটা হচ্ছে। নির্মাণস্থলগুলিতে কার্বলিক অ্যাসিড ছড়াতে ও শ্রমিকদের গামবুট পরতে বলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy