Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

দেবাঞ্জনের খুনে ধৃত মূল অভিযুক্ত

দেবাঞ্জনের বাবা অরুণবাবুর অভিযোগ ছিল, বেশ কিছু দিন আগে প্রিন্স তাঁর ছেলেকে গুলি করে খুনের হুমকি দিয়েছিল। তার পরেই নবমীর রাতে, অর্থাৎ গত ৭ অক্টোবর দেবাঞ্জন খুন হন।

প্রিন্স সিংহ।

প্রিন্স সিংহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৯ ০২:১৮
Share: Save:

দমদমের দেবাঞ্জন দাসকে খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত প্রিন্স সিংহকে শনিবার সন্ধ্যায় বজবজ থেকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শুক্রবার রাতে তার এক বন্ধু বিশাল মারুও দমদম থেকে গ্রেফতার হয়েছিল। পুলিশ জানায়, দেবাঞ্জনের বান্ধবীর প্রাক্তন প্রেমিক ছিল প্রিন্স।

দেবাঞ্জনের বাবা অরুণবাবুর অভিযোগ ছিল, বেশ কিছু দিন আগে প্রিন্স তাঁর ছেলেকে গুলি করে খুনের হুমকি দিয়েছিল। তার পরেই নবমীর রাতে, অর্থাৎ গত ৭ অক্টোবর দেবাঞ্জন খুন হন। ঘটনার দু’দিন পর থেকেই নিখোঁজ ছিল দমদমের বাসিন্দা প্রিন্স। তদন্তে নেমে পুলিশ ওই যুবকের মোবাইলের কল লিস্ট পরীক্ষা করে দেখে, সে বজবজ থেকে কয়েক বার দাদা দীপক সিংহের সঙ্গে কথা বলেছে। শুক্রবার রাতে দীপককে নিয়ে বজবজে তাঁদের মাসির বাড়িতে হানা দিলেও প্রিন্সকে পাওয়া যায়নি।

শনিবার সন্ধ্যায় ফের তল্লাশি চালিয়ে বজবজের বীণা সিনেমা হলের কাছ থেকে ওই যুবককে গ্রেফতার করে বজবজ ও নিমতা থানার পুলিশ। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা বলেন, ‘‘মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তার এক বন্ধুও ধরা পড়েছে। এই ঘটনায় আর কারা জড়িত, ধৃতদের জেরা করে তা জানার চেষ্টা চলছে।’’

ঘটনার রাতে সল্টলেকের যে রেস্তরাঁয় বান্ধবী ও বন্ধুদের সঙ্গে দেবাঞ্জন গিয়েছিলেন, সেখানকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে ওই তরুণের পাঁচ সঙ্গীকে শনাক্ত করেন তদন্তকারীরা। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, দেবাঞ্জন ও তাঁর বান্ধবী-সহ মোট ১৭ জন সল্টলেকের ওই রেস্তরাঁয় গিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১৩ জন তরুণ ও চার জন তরুণী ছিলেন। দেবাঞ্জনের কলেজের বন্ধু রোহন দেবনাথ, সোহম বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁরা রেস্তরাঁয় ঢুকে দেখেন, আগে থেকেই সেখানে বন্ধুদের নিয়ে রয়‌েছে বিশাল। কিছু ক্ষণের জন্য সে বেরিয়ে গেলেও পরে আবার ফিরে আসে। যদিও দেবাঞ্জন বা অন্যদের সঙ্গে কোনও কথা হয়নি বিশালের।

ওই বন্ধুদের থেকে পুলিশ জেনেছে, রাত দেড়টা নাগাদ রেস্তরাঁ থেকে বেরিয়ে বান্ধবীকে নিমতায় পৌঁছে দিতে গিয়েছিলেন দেবাঞ্জন। রোহন বলেন, ‘‘আমরা সকলেই একসঙ্গে বেরিয়েছিলাম। তবে অ্যাপ-ক্যাবের জন্য রাস্তায় অপেক্ষা করার সময়ে দেখি, বি‌শালও তার বন্ধুদের সঙ্গে বাইরে দাঁড়িয়ে।

গাড়ি আসতেই আমরা চলে গিয়েছিলাম।’’ যে দেওয়ালে দেবাঞ্জনের গাড়ি ধাক্কা মেরেছিল, এ দিন সেটি পরীক্ষা করে দেখেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদের অনুমান, প্রায় দেড়শো মিটার দূর থেকে গাড়িটি এসে পাঁচিলে ধাক্কা মেরেছিল। সেই সময়ে গাড়ির গতি ছিল ৫০-এর কাছাকাছি।

ফরেন্সিক সূত্রের খবর, দেবাঞ্জনকে একটি গুলিই করা হয়েছিল। সেটি ডান হাতের কনুই ফুটো করে ঘাড়ের ডান পাশ দিয়ে ঢুকে বাঁ দিক ফুঁড়ে বেরিয়ে যায়। তদন্তকারীরা মনে করছেন, বিরাটির স্কুল রোড দিয়ে দেবাঞ্জন গাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময়ে কোনও ভাবে তাঁকে দাঁড় করানো হয়েছিল।

তবে গাড়ি থামালেও ইঞ্জিন বন্ধ করেননি ওই তরুণ। গুলি লাগায় গিয়ার থেকে হাত সরে যেতেই গাড়িটি এগিয়ে গিয়ে সামনের পাঁচিল ও বাতিস্তম্ভে ধাক্কা মেরেছিল। আর তাতেই গাড়িটির বাঁ দিক দুমড়ে মুচড়ে যায়।

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Murder Nimta Murder Case Debanjan Das Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy