জাতীয় পরিবেশ আদালত। ফাইল চিত্র।
কঠিন ও তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতার জন্য গত সেপ্টেম্বরে রাজ্য সরকারকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা পরিবেশগত ক্ষতিপূরণ ধার্য করেছিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। তারা এ-ও বলেছিল, পৃথক তহবিল তৈরি করে বর্জ্যের ব্যবস্থাপনায় ওই টাকা খরচ করতে হবে। যার পরিপ্রেক্ষিতে গত ডিসেম্বরে রাজ্যের মুখ্যসচিবের তরফে জানানো হয়েছিল, আদালতের নির্দেশ মেনে পরিবেশগত ক্ষতিপূরণের টাকা দিয়ে একটি পৃথক তহবিল গড়া হয়েছে। কিন্তু তার পরেও কি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে রাজ্যের টনক নড়েছে?—পরোক্ষে সেই প্রশ্নই এ বার তুলল জাতীয় পরিবেশ আদালত।
সরস্বতী নদী সংক্রান্ত মামলার সাম্প্রতিক রায়ে পরিবেশগত ক্ষতিপূরণের প্রসঙ্গটি তুলে এনেছে তারা। তার পরে মন্তব্য করেছে, গত ডিসেম্বরে তহবিল গঠন করে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় যে খরচের কথা রাজ্যের তরফে বলা হয়েছে, তার প্রতিফলন সরস্বতী নদী সংক্রান্ত মামলায় দেখা যাচ্ছে না। এটাও বোঝা যাচ্ছে না, কঠিন ও তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজ ঠিক মতো হচ্ছে কি না। তার পরেই আদালত ফের নির্দেশ দিয়েছে, সরস্বতী নদীকে দূষিত করছে, এমন কঠিন ও তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে। সেই কারণে রাজ্য সরকারি দফতরের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ ‘ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা’ এবং রেলের সঙ্গে বৈঠক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, সরস্বতী নদীর পাড় কী ভাবে দখলমুক্ত করা যায়, নদীর উপরে গজিয়ে ওঠা বিভিন্ন নির্মাণ জলের প্রবাহকে কতটা রুদ্ধ করছে— এমন বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আগামী এক মাসের মধ্যে সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠকেরও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এ ব্যাপারে একটি ‘অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট’ও আগামী চার মাসের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে।
যদিও এই নির্দেশ পালনে সরকারি ভূমিকা নিয়ে সংশয়ী পরিবেশকর্মীদের একাংশ। সংশ্লিষ্ট মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্তের কথায়, ‘‘জাতীয় পরিবেশ আদালত নিজেই বলছে, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার তহবিল গঠনে রাজ্যের কথার সঙ্গে কাজের মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এখানে তো রাজ্যের ভাবমূর্তির প্রশ্নও জড়িত। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে, তার পরেও রাজ্য সরকারের বিন্দুমাত্র টনক নড়েনি!’’ আর এক পরিবেশবিজ্ঞানী বলছেন, ‘‘একই কথা বার বার জাতীয় পরিবেশ আদালতকে বলতে হচ্ছে। কঠিন ও তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা যে ঠিক মতো প্রয়োজন, তা বার বার মনে করিয়ে দিতে হচ্ছে। এর ফলে রাজ্য সরকারের দায়িত্বজ্ঞানহীনতাই প্রকাশ পাচ্ছে।’’ যদিও প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে সমস্ত কাজ করা হচ্ছে। তবে এটা এক দিনের কাজ নয়। তাই সমন্বয়ের ক্ষেত্রে কোথাও একটু খামতি থেকে যাচ্ছে, যা দ্রুত ঠিক করে নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy