প্রতীকী ছবি
কলকাতা পুর এলাকায় বাড়ি তৈরি করতে হলে পুর কর্তৃপক্ষের থেকে নকশা অনুমোদন বাধ্যতামূলক। তার জন্য এত দিন বিস্তর হ্যাপা পোহাতে হত শহরবাসীকে। এ বার নতুন নিয়মে নকশা অনুমোদন করতে হলে আর জমির দলিল নিয়ে পুর ভবনে ছুটতে হবে না। ঘুরতে হবে না কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, রেজিস্ট্রেশন দফতর, কেএমডিএ, বিএসএনএল বা ন্যাশনাল মনুমেন্ট অথরিটির দোরে দোরেও। পুরসভার দেওয়া একটিমাত্র আবেদনপত্র পূরণ করলেই নিয়মমাফিক বাড়ি তৈরির অনুমোদন পেয়ে যাবেন আবেদনকারী। সেই আবেদনপত্রকে বলা হচ্ছে কমন অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম (ক্যাফ)। কাল, শনিবার ওই আবেদনপত্র প্রকাশ্যে আনতে চলেছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
পুরসভা সূত্রের খবর, বাড়ি তৈরির অনুমোদন পেতে বছরের পর বছর নাকাল হতে হয় বহু বাসিন্দাকে। দ্রুত নকশা অনুমোদন করাতে পুরসভার কর্মী-অফিসারদের একাংশকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। ‘টক টু মেয়র’-এ এমন অভিযোগ একাধিক বার শুনতে হয়েছে মেয়রকে। সে সব মাথায় রেখেই বাড়ির নকশা অনুমোদনের প্রক্রিয়া আরও সরল করতে চায় পুর প্রশাসন। ফিরহাদ বলেন, ‘‘সম্প্রতি ইজ় অব ডুয়িং বিজ়নেস-এর তালিকায় নাম উঠেছে কলকাতার। ওই মূল্যায়নের প্রধান শর্তই হল শহরবাসীকে সুষ্ঠু পরিষেবা দেওয়া। আমাদের কাছে মাঝেমধ্যেই অভিযোগ আসে, বাড়ি তৈরির অনুমোদন নিতে ঘুষ দিতে হচ্ছে।’’ তিনি জানান, পরিষেবা পেতে মানুষের হয়রানি বন্ধ করতে বদ্ধপরিকর পুর কর্তৃপক্ষ।
তবে প্রশ্ন উঠেছে, আসন্ন পুরভোটে ভোটারদের মন টানতেই কি এই পদক্ষেপ? এ ব্যাপারে বিল্ডিং দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, কয়েক মাস ধরেই এ নিয়ে বৈঠক হয়েছে নবান্ন এবং পুর ভবনে। শুধু পুর অনুমতি নয়, নকশা অনুমোদনে ক্ষেত্র বিশেষে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক দফতরের অনুমোদনও লাগে। প্রক্রিয়াটি জটিল হওয়ায় অনেক বাসিন্দাকে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। ইজ় অফ ডুয়িং বিজ়নেসে এক ছাতার তলায় সব কাজের উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। এখানেও সেই পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে।
নকশা অনুমোদনের চলতি নিয়ম অনুযায়ী, আবেদনকারীকে প্রথমে পুর ভবনে জমির দলিল জমা দিতে হয়। বড় বাড়ি হলে প্রয়োজন হয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের ‘নো অবজেকশন’ শংসাপত্র। শহরের বিশেষ কিছু এলাকার ক্ষেত্রে আবার কখনও বিএসএনএল, কখনও ন্যাশনাল মনুমেন্ট অথরিটির অনুমোদন দরকার হয়। এ ছাড়া, জমি অন্য কারও হলে তাঁর থেকেও আপত্তি না থাকার মুচলেকা নিতে হয়। প্রতি ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট দফতরে ছুটতে হয় বিল্ডিং নির্মাতাকেই। ‘ক্যাফ’-এর ক্ষেত্রে আবেদনকারী ফর্ম পূরণ করে জমা দেবেন পুরসভায়। পুর প্রশাসনই বাকি সমস্ত দফতর থেকে নো অবজেকশন নেওয়ার কাজ করবে। আর আবেদনকারীর কাছ থেকে দলিলের নম্বর নিয়ে পুর অফিসারেরা সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রি অফিস থেকে জমির তথ্য সংগ্রহ করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy