Advertisement
E-Paper

৪-৮ বছর বয়সি শিশু দত্তক নিতে দিতে হবে ১০ লক্ষ টাকা! বয়স, রং দেখেই ঠিক হয় ‘দর’

নিঃসন্তান দম্পতিকে দত্তক সন্তান পাইয়ে দেওয়ার নামে ব্যবসা ফেঁদে বসা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাথাদের গ্রেফতারের পরে এমনই নানা তথ্য জানতে পেরেছে হরিদেবপুর থানার পুলিশ।

সন্তান দত্তক পাইয়ে দেওয়ার নামে ব্যবসা ফেঁদে প্রতারণা।

সন্তান দত্তক পাইয়ে দেওয়ার নামে ব্যবসা ফেঁদে প্রতারণা। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২২ ০৬:২৫
Share
Save

বয়স অনুযায়ী দাম। ৪-৮ বছর বয়সি শিশু নিতে চাইলে দিতে হবে ৮-১০ লক্ষ টাকা! ৮-১৮ বছর বয়সিদের ক্ষেত্রে ‘দর’ ৫-৬ লক্ষ টাকা! গায়ের রং এবং চারিত্রিক গুণাবলী অনুযায়ী আলাদা আলাদা দর। তবে দরাদরি চলবে না। অন্তত ৪০ শতাংশ টাকা দিতে হবে অগ্রিম। এর পর বেশ কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হতে পারে। কারণ, লাইনে আছেন বহু নিঃসন্তান দম্পতি!

দত্তক সন্তান পাইয়ে দেওয়ার নামে ব্যবসা ফেঁদে বসা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাথাদের গ্রেফতারের পরে এমনই নানা তথ্য জানতে পেরেছে হরিদেবপুর থানার পুলিশ। ওই দম্পতি এবং শ্যালিকাকে জিজ্ঞাসাবাদের পরে বৃহস্পতি এবং শুক্রবার দিনভর একাধিক জায়গায় হানা দেয় পুলিশ। ওই সব জায়গা থেকেই শিশু দত্তকের চক্র চলত বলে তদন্তকারীদের দাবি। তদন্তে জানা গিয়েছে, সরকারি পোর্টালে যে ভাবে আবেদন করতে হয়, ঠিক সেই ভাবেই নেওয়া হয়েছিল আবেদনপত্র। নিঃসন্তান দম্পতিদের থেকে নেওয়া মুচলেকা রাখা হয়েছিল আলাদা ফাইলে। আয়ের হিসাব থেকে সন্তান দত্তক নেওয়ার জন্য শারীরিক সুস্থতা সংক্রান্ত নথিপত্রও নিয়ে নেওয়া হয়েছিল। পুলিশকে এক দম্পতি বলেন, ‘‘বছরখানেক আগে চার লক্ষ টাকা দিয়েছি। বাচ্চা পাওয়ার পরে আরও ছ’লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা। কিন্তু বাচ্চা পাব কি না, জানি না।’’

তদন্তে পুলিশ দেখছে, এই পথ যে বেআইনি, তা জানেন বেশির ভাগ দম্পতিই। হরিদেবপুর থানার এক তদন্তকারী অফিসার বলছেন, ‘‘আসলে নিয়মের কড়াকড়িআর দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে করতে অনেকেই এই পথে ধরছেন। সেই সুযোগে শহর ও শহরতলি জুড়ে গজিয়ে উঠছে শিশু দত্তকদেওয়ার ব্যবসা।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, আগে দত্তক নেওয়ার প্রক্রিয়াটি আদালতের অধীন ছিল। পরবর্তী কালে ‘জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট’ সংশোধন করে সেই প্রক্রিয়া জেলা প্রশাসনের আওতায় আনা হয়েছে। কেন্দ্রের নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রকের অন্তর্গত ‘সেন্ট্রাল অ্যাডপশন রিসোর্স অথরিটি’র (কারা) পোর্টালে গিয়ে অনলাইনে আবেদন করতে হয়। এর পরে শিশুকে কোনও পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার আগে ‘স্পেশ্যাল অ্যাডপশন এজেন্সি’র মাধ্যমে কঠোর ভাবে বিভিন্ন বিষয় দেখা হয়। যেমন, যাঁরা দত্তক নিতে চান, তাঁদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার এবং আর্থিক সঙ্গতির প্রমাণপত্র দাখিল করতে হয়। বিবাহিত দম্পতি ছাড়াও অবিবাহিত পুরুষ বা নারী দত্তক নিতে পারেন।

বিবাহিতদের ক্ষেত্রে দু’জনেরই সম্মতি থাকলে বিয়ের দু’বছর পর থেকে তাঁরা দত্তক নেওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হন। অবিবাহিত নারী, ছেলে বা মেয়েকে দত্তক নিতে পারেন। কিন্তু অবিবাহিত পুরুষ কন্যা দত্তক নিতে পারেন না। দম্পতির অন্তত এক জনের এবং সিঙ্গল পেরেন্টের সঙ্গে শিশুর বয়সের কমপক্ষে২৫ বছর পার্থক্য হতে হবে। দম্পতির মোট বয়সের যোগফল ১১০ বছরের কম এবং সিঙ্গল পেরেন্টের বয়স ৫৫ বছরের কম হতে হবে। সবশর্ত পূরণ করে ৪৬ হাজার টাকা দিলেইনির্দিষ্ট সরকারি হোম থেকে দত্তক নেওয়া সম্ভব। অভিযোগ, নিয়ম থাকে খাতায়-কলমে। চলতে থাকে বাচ্চা দত্তক দেওয়ার বেআইনি কারবার।

হরিদেবপুরের ঘটনারতদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রশিক্ষণের সময়ে মানবিক হওয়ার পাঠ দিয়ে শিক্ষকেরা বলে থাকেন, খুন হল শরীরের মৃত্যু। ধর্ষণ আত্মার মৃত্যু। নিঃসন্তানদের থেকে এ ভাবে টাকা হাতানোর ব্যবসা কোনও অংশেই কম অপরাধ নয়।’’

Haridevpur Child Adoption center

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।