—প্রতীকী ছবি।
চার বছর হল সংবিধানের ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ রদ হয়েছে জম্মু-কাশ্মীরে। কিন্তু নতুন প্রজন্মের জীবনে তার কোনও সুফল এখনও দেখা যাচ্ছে না। কেন্দ্রীয় সরকারের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ মন্ত্রকের অধীনে একটি সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে তেমনটাই জানাচ্ছেন কাশ্মীরের নব প্রজন্ম। তাঁদের মতে, ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ হওয়ার পরে কাশ্মীরে হিংসার ঘটনা কমেছে। তবে নতুন প্রজন্মের কাছে চাকরির সুযোগ তেমন বাড়েনি।
মধ্যমগ্রামের গঙ্গানগরে ভারত স্কাউটস ও গাইড, নেহরু যুব কেন্দ্রের তরফে কাশ্মীরের নতুন প্রজন্মের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গার সাংস্কৃতিক বিষয়ক আদানপ্রদানের শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ নেহরু যুব কেন্দ্রের পশ্চিমবঙ্গ ও কলকাতা শাখা ওই শিবিরের উদ্যোক্তা। সেখানে জম্মু-কাশ্মীরের অনন্তনাগ, কুপওয়ারা, বারামুলা, বদগাম, শ্রীনগর ও পুলওয়ামা জেলা থেকে ১২০ জন তরুণ-তরুণী শিবিরে যোগ দিতে এসেছেন। রবিবার থেকে শুরু হয়েছে সেই শিবির। চলবে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত।
এ দিন অনুষ্ঠানের উদ্বোধনে বিএসএফের ডিআইজি এস এস গুলেরিয়া বলেন, ‘‘আমি যে কাশ্মীর দেখেছি, আজকের প্রজন্মের কাশ্মীরের সঙ্গে তার তুলনা চলে না। সেই সময়ে কাশ্মীর পর্যটকদের কাছে ভূস্বর্গ ছিল। কিন্তু পরে কাশ্মীরের উপরে যেন গ্রহণ লেগে যায়। বহু বছর নানা হিংসায় জর্জরিত থেকেছে কাশ্মীর। তবে গত কয়েক বছরে পরিস্থিতি বদলেছে।’’
নেহরু যুব কেন্দ্র আয়োজিত এই শিবিরে বিতর্কিত বিষয় সরিয়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু শিবিরের বাইরে এসে কাশ্মীরের যুবকেরা সেখানকার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন। তাঁরা জানান, সাংস্কৃতিক বিনিময়ে তাঁরা এখানকার প্রজন্মকে কাশ্মীরে আহ্বান জানাবেন। পুলওয়ামার বাসিন্দা কিংবা অনন্তনাগের যুবক, সকলেরই এক বক্তব্য। তাঁদের মতে, জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দাদের অন্য রাজ্যের মানুষ সন্দেহের চোখে দেখেন। তাঁরা সেই ধারণাই বদলাতে চান। তাঁদেরই এক জনের কথায়, ‘‘এখানে আমরা সাংস্কৃতিক, ক্ষুদ্র ও কুটীর শিল্প-সহ একাধিক বিষয়ের উপরে আলোচনা ও মত বিনিময় করব। একই সঙ্গে আমরা চাই, এখানকার মানুষ কাশ্মীরে আসুন। আমি দিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে বুকে পুলওয়ামা লিখে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম। দেখলাম, আমাকে অন্য চোখে দেখা হচ্ছে।’’
কিন্তু এখন তো পরিস্থিতি আগের মতো আতঙ্কের নয়। ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের বিষয়টি ওখানকার বাসিন্দারা কী ভাবে দেখছেন?
শিবিরে উপস্থিত কয়েক জন জানালেন, ৩৭০ অনুচ্ছেদ জারির সময়ের সঙ্গে বর্তমান সময়ের বিশেষ ফারাক নেই। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘রাজনৈতিক বিষয় জানি না। তবে এখনও পরিবারের দায় নিতে হলে শিক্ষিত নতুন প্রজন্মকে রাজ্যের বাইরে যাওয়ার কথাই ভাবতে হয়। কারণ, এখনও চাকরির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কোনও পরিবর্তন হয়নি সেখানে। ক্ষুদ্র ও কুটীর শিল্পই স্থানীয়দের ভরসা।’’
বরং ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ হয়ে যাওয়ার পরে বাইরের কোনও বড় সংস্থা কাশ্মীরে গিয়ে জমি কিনে বৃহৎ শিল্প গড়লে স্থানীয় ব্যবসায়ীরাই চাপে পড়ে যাবেন বলে দাবি কাশ্মীরি যুব সম্প্রদায়ের একাংশের। এক তরুণীর কথায়, ‘‘কাশ্মীরে গিয়ে মানুষ শিকারা চড়েন, হাউসবোটে থাকেন। সে সবই স্থানীয় ব্যবসা। এখন নতুন নিয়মে বাইরে থেকে বড় পুঁজি নিয়ে গিয়ে কেউ ব্যবসা শুরু করলে স্থানীয়দের চাপে পড়ার আশঙ্কা তো হবেই।’’
তবে এ সব চিন্তা ছেড়ে আপাতত কাশ্মীরের নবীন প্রজন্ম চাইছে, এ রাজ্যের সংস্কৃতি ও ক্ষুদ্র ব্যবসার সঙ্গে পরিচিত হতে এবং নিজস্ব সংস্কৃতি ও কুটীর শিল্পকে তুলে ধরতে। নেহেরু যুব কেন্দ্রের ডেপুটি ডিরেক্টর রাজীব মজুমদার জানান, সাংস্কৃতিক আদানপ্রদানের জন্য় সব ধরনের সহায়তা তাঁরা করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy