তদন্তকারীদের অনুমান, শিশু বিক্রি চক্রের জাল বিদেশেও ছড়িয়ে থাকতে পারে। —প্রতীকী চিত্র।
রবিবারই প্রথম নয়, এর আগে একাধিক বার বিহারের পটনা, গয়া থেকে শিশুদের এনে কলকাতায় বিক্রি করেছিল ধৃত মানিক হালদার। শিশু বিক্রির চক্রের তদন্তে প্রাথমিক ভাবে সিআইডি-র গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, কলকাতা থেকে ওই শিশুদের আবার হায়দরাবাদ-সহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হয়েছে।
এর পাশাপাশি তদন্তকারীদের অনুমান, শিশু বিক্রি চক্রের জাল বিদেশেও ছড়িয়ে থাকতে পারে। সিআইডি সূত্রের খবর, বছরকয়েক আগে মানিক কয়েক দিনের ব্যবধানে কঙ্গো এবং মলদ্বীপে গিয়েছিল। এসি মেকানিকের কাজের সূত্রে সে বিদেশে গিয়েছিল বলে মানিক জেরায় দাবি করলেও তদন্তকারীদেরঅনুমান, শিশু বিক্রির জন্যই সে বিদেশে যায়। ধৃতকে জেরা করে সেই তথ্য বার করার চেষ্টা চলছে বলে সিআইডি জানিয়েছে।
সূত্রের খবর, তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, গত আড়াই থেকে তিন বছরের মধ্যে চক্রটি এক-একটি শিশুকে দুই থেকে পাঁচ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করেছে। কাদের কাছে ওই শিশুদের বিক্রি করা হয়েছে এবং কাদের সঙ্গে মানিকের যোগাযোগ ছিল, তা জানার জন্য ধৃতের মোবাইলের কল রেকর্ড ও সমাজমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখছেন বিশেষজ্ঞেরা।
গত রবিবার দু’দিন বয়সি এক কন্যাশিশুকে বিহারের গয়া থেকে নিয়ে এসে শালিমার স্টেশনের বাইরে বিক্রি করার সময়ে সিআইডির হাতে ধরা পড়ে যায় শিশু বিক্রি চক্রের সঙ্গে যুক্ত দম্পতি মানিক এবং মুকুল হালদার। শিশুটিকে উদ্ধার করে হোমে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে সিআইডি হেফাজতে রয়েছে ধৃত দম্পতি।
সিআইডি জানিয়েছে, ওই শিশু বিক্রির সঙ্গে কলকাতার বেশ কয়েক জনও জড়িত। মানিককে জেরা করে তাদের খোঁজ শুরু হয়েছে। মানিক তিন বছরের বেশি সময় ধরে ওই শিশু বিক্রির ব্যবসা করছে। পেশায় এসি-র মেকানিক মানিকের যাতায়াত ছিল বিভিন্ন আইভিএফ সেন্টার এবং বেহালার একটি স্পার্ম ডোনেশন সেন্টারে। সেখানে যাতায়াতের সূত্র ধরেই মানিক ওই শিশু বিক্রির ব্যবসা শুরু করে বলে তদন্তকারীদের অনুমান। এর জন্য প্রথমে সে সমাজমাধ্যমে একটি পেজ খোলে। সেখানে নিঃসন্তান দম্পতিদের যুক্ত করা হয়।
এক তদন্তকারী অফিসার জানান, প্রথমে ওই দম্পতিদের থেকে তাঁদের বিভিন্ন তথ্য এবং নথি সংগ্রহ করা হত। এর পরে কারা শিশু কিনতে সত্যিই আগ্রহী, তা খুঁজে বার করে তাঁদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করত মানিক নিজে। এর পরেই ওই দম্পতিদের হাতে টাকার বিনিময়ে শিশুদের তুলে দেওয়া হত।
প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, বিহার থেকেই শিশুদের আনা হত। তবে কলকাতা থেকে কেনা শিশু বিক্রি করার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছে না সিআইডি। এ দিকে, ওই শিশু বিক্রির চক্রের বাকি মাথাদের গ্রেফতার করতে পটনা এবং গয়ায় যাচ্ছে সিআইডির একটি দল। তারা বিহারের পুলিশের সাহায্য নিতে পারে তদন্তে।
সূত্রের দাবি, শিশু বিক্রির চক্রের সঙ্গে এর আগেও নাম জড়িয়েছিল মানিকের। দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুর থানায় তিন বছর আগে একটি শিশু বিক্রির মামলায় মানিকের নাম উঠে আসে। তবে সে বার মানিককে গ্রেফতার করা যায়নি। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ওই মামলা নিয়ে ফের খোঁজখবর শুরু হয়েছে। সেটির তদন্ত নতুন করে শুরু করা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে মানিককে হেফাজতে নেবে জেলা পুলিশ।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, সদ্যোজাত শিশুদের পাচার করার সময়ে কেউ যাতে তাদের সন্দেহ না করে, তার জন্য মানিক ব্যবহার করত তার দ্বিতীয় স্ত্রী মুকুলকে। শিশু পাচারের সময়ে মুকুলকে মা সাজাত সে। এই কাজের জন্যই কয়েক বছর আগে মুকুলকে মানিক বিয়ে করে বলে সন্দেহ তদন্তকারীদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy