টালি নালা।
টালি নালা পুনরুজ্জীবন প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে কলকাতা পুরসভা এবং রাজ্য সরকারকে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প দু’ভাগে ভাগ করে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন ‘ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা’ (এনএমসিজি) কর্তৃপক্ষ। সেই মতো বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) কিছু দিন আগে জমা দিয়েছে রাজ্য। বর্তমানে সেই প্রকল্পের মূল্যায়ন করছে এনএমসিজি।
তবে, উল্লেখযোগ্য ভাবে তারা এ-ও জানিয়েছে, প্রস্তাব অনুমোদিত হওয়ার আগে পর্যন্ত নিকাশি নালার বর্জ্য-দূষণ ঠেকানো উচিত রাজ্য সরকারের। সেই সঙ্গে বর্তমান ও প্রস্তাবিত যে সমস্ত নিকাশিপরিশোধন প্লান্টের (এসটিপি) কথা বলা হচ্ছে, তার মাধ্যমে টালি নালার দূষণ যাতে দ্রুত হারে কমে, তার জন্যও রাজ্যকে সুপারিশ করেছে এনএমসিজি।
প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই এনএমসিজি দাবি করেছে যে, খাল সংস্কারে রাজ্য সরকার নিজেদের দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করে না। উল্টে কেন্দ্রের অনুদান এবং কী ভাবে কেন্দ্র বা রাজ্যের অর্থসাহায্যে এসটিপি তৈরি করা যায়— সে দিকেই শুধু ‘নজর’ রাজ্যের। টালি নালা, খালের সংস্কার-সহ সার্বিক বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে এনএমসিজি-র এই মূল্যায়নকে যথেষ্ট ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
তা ছাড়া, এনএমসিজি কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, এমনিতে টালি নালার সংস্কারের বিষয়টি অনেক দিন ধরেই চলছে। তবে বিচ্ছিন্ন ভাবে সেই সংস্কারের কাজ করা হলেও সার্বিক পুনরুজ্জীবন প্রকল্প বলতে যা বোঝায়, তা এখনও করা হয়ে ওঠেনি। বছর পাঁচেক আগে জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে টালি নালা সংস্কারে উদ্যোগী হয়েছিল এনএমসিজি। এ বিষয়ে বিশ্ব ব্যাঙ্কের অর্থসাহায্যও চেয়েছিল তারা। প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্ব ছিল কলকাতা পুরসভা এবং ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট প্রোগ্রাম ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ’-এর (ডব্লিউবিএসপিএমজি) উপরে। ২০১৮ সালের এপ্রিলে টালি নালা সংস্কারে প্রথম দরপত্র আহ্বান করে পুরসভা। কিন্তু দখলদারি, প্রস্তাবিত পাম্পিং স্টেশন তৈরির জন্য পর্যাপ্ত জমির অভাব, ওই পাম্পিং স্টেশন সংলগ্ন বসতি এলাকা, পুরনো ঐতিহ্যশালী বাড়ির অবস্থান-সহ একাধিক কারণ প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে মূল বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এই কারণগুলির জন্য কোনও সংস্থার তরফেই তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি।
শেষ পর্যন্ত কেন্দ্র, এনএমসিজি, রাজ্য, কলকাতা পুরসভার কর্তাদের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠকের পরে ফের দরপত্র আহ্বান করা হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে। তাতে সাড়া মিললেও প্রকল্প রূপায়ণের জন্য প্রস্তাবিত অর্থের পরিমাণ বরাদ্দকৃত অর্থের থেকে প্রায় ৯০ শতাংশ বেশি হয়! যার ফলে স্বাভাবিক ভাবেই বিশ্ব ব্যাঙ্ক তা বাতিল করে দেয়। বিশ্ব ব্যাঙ্কের তরফে খরচের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে নতুন ভাবে বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট জমা দিতে পরামর্শ দেওয়া হয় পুরসভা এবং ডব্লিউবিএসপিএমজি-কে।
সেই মতো পুরসভা, ডব্লিউবিএসপিএমজি নতুন প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করে এনএমসিজি-র কাছে জমা দেয়। সেই রিপোর্ট দেখে এনএমসিজি রাজ্যকে জানায়, পুনরুজ্জীবন প্রকল্প দু’ভাগে ভাগ করতে। প্রথম ভাগে প্রধান পাম্পিং স্টেশন এবং নিকাশি নালা, টালি নালায় যে সমস্ত নালা পড়েছে সেখানে কন্ট্রোল গেট তৈরি, প্রস্তাবিত এসটিপি-র জন্য মূলধন এবং রক্ষণাবেক্ষণ ও কাজের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ খরচের পরিকল্পনা। দ্বিতীয় ভাগে রয়েছে প্রস্তাবিত নিকাশি নালা সংস্কার ও বর্তমান নিকাশি নালার পরিকাঠামোর জন্যঅর্থ খরচ। এই প্রথম ভাগটি বর্তমানে মূল্যায়ন করছেন এনএমসিজি কর্তৃপক্ষ। তার জন্য কর্তৃপক্ষের তরফে তা আইআইটি রুরকির কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy