—প্রতীকী চিত্র।
নববর্ষের সকালে বরাহনগরে একই পরিবারের তিন সদস্যের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য ক্রমশ দানা বাঁধছে। তদন্তে নেমে ধোঁয়াশায় পুলিশও। তবে সব সূত্র মিলিয়ে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। সোমবার ঘটনাস্থলে এসে ব্যারাকপুরের নগরপাল অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘খুবই গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। অনেক তথ্য মিলেছে, তাতে কিছু সন্দেহ উঠে আসছে। শীঘ্রই ঘটনার কিনারা হবে বলে আশা করছি।’’
ঘটনার সকালে ওই বাড়ি থেকে কয়েকশো মিটার দূরে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি চিঠি উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। এক নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের যুব সভাপতি অশোক বিশ্বাসের দাবি, ‘‘কাগজটা পার্টি অফিসের সামনে পড়ে ছিল। খুলে দেখি, তাতে হালদার বাড়ির খুনের কথা লেখা। পুলিশ চিঠিটি নিয়ে গিয়েছে।’’ সূত্রের খবর, চিঠিতে কেউ এক জন দাবি করেছেন, তাকে খুনের কাজে ব্যবহার করেও পুরো টাকা দেওয়া হয়নি। অভিজিৎদেরই ঘনিষ্ঠ কয়েক জন আত্মীয়কে দায়ী করা হয়েছে। যদিও পুলিশ চিঠি উদ্ধারের কথা স্বীকার করেনি।
রবিবার বরাহনগরের এক নম্বর ওয়ার্ডের নিরঞ্জন সেন নগরে একই বাড়ি থেকে বৃদ্ধ শঙ্কর হালদার, তাঁর ছেলে অভিজিৎ ও নাতি দেবার্পণের দেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। তিন জনের শরীরেই ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। জানা গিয়েছে, শঙ্করের গলা কাটা ছিল। দেবার্পণের দুই কব্জির কাছে এবং বুকে ক্ষত মিলেছে। অভিজিতের পেটের একাধিক ক্ষত দিয়ে ভিতরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বাইরে বেরিয়ে এসেছিল। রহস্যজনক ভাবে, অভিজিতের পেটে শাড়ির পাড় বাঁধা ছিল। প্রশ্ন হল, ক্ষত থেকে রক্ত বেরোনো বন্ধ করতে কি অভিজিৎ নিজেই তা বেঁধেছিলেন? না কি, খুনিরা তাঁকে শাড়ির পাড় দিয়ে বেঁধেছিল?
প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের মনে হয়েছিল, বাবা ও ছেলেকে প্রথমে খুন করে তার পরে আত্মঘাতী হয়েছেন অভিজিৎ। কিন্তু নগরপালের কথায়, ‘‘খুন করে আত্মহত্যা, না কি অন্য কেউ তিন জনকে খুন করেছে, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সব সম্ভাবনাই তদন্তে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ এ দিন ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। রাতে খাওয়ার থালা-বাসন উদ্ধার করে সেগুলিও পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এ দিন শঙ্করদের বাড়ির ভাড়াটেদের এবং রান্নার মহিলাকে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়।
সূত্রের খবর, এখনও বেশ কিছু বিষয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে তদন্তকারীদের মনে। প্রথমত, বাড়ির বাইরে তিনটি ও শঙ্করদের খাবার ঘরে একটি সিসি ক্যামেরা থাকলেও তার ফুটেজ যে যন্ত্রে (ডিভিআর) সংরক্ষিত হয়, সেটি কোথায়? যদিও প্রতিবেশীদের দাবি, এলাকায় চুরি হলে অভিজিতের বাড়িতে এসে তাঁরা ফুটেজ দেখতেন। আবার, তদন্তে পুলিশ জেনেছিল, ওই বাড়িতে চারটি ফোন ছিল। যার একটির সন্ধান মেলেনি।
দ্বিতীয়ত, অভিজিৎদের কোল্যাপসিবল গেটে বাইরে থেকে তালা দেওয়া ছিল। পুলিশ এসে তালা ভাঙে। প্রশ্ন উঠছে, অভিজিৎ যদি সব ঘটিয়ে থাকবেন, তা হলে তিনি তালা বাইরে থেকে দিলেন কেন? তবে এ দিন খাবার ঘর থেকেই ওই তালার একটি চাবি পুলিশ উদ্ধার করে। কিন্তু ওই তালার দ্বিতীয় কোনও চাবি অন্য কারও কাছে ছিল কি না, খুঁজছে পুলিশ। আগে উদ্ধার হওয়া ছুরিটি ওই বাড়িতে ব্যবহার হত কি না, তা-ও জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy