পাপ্পু সাউ ও পূজা মাহাতো। —ফাইল চিত্র।
ঘর থেকে ভেসে আসছিল একটি শিশুর কান্নার আওয়াজ। তা শুনে প্রতিবেশীরা খবর দেন তার দাদু-দিদিমাকে। তড়িঘড়ি সকলে এসে দেখেন, বারান্দায় সিলিং থেকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলছেন বাচ্চাটির বাবা। আর ঘরে গলার নলি কাটা অবস্থায় পড়ে আছেন মা!
রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে রহড়া থানার পাতুলিয়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হলেন পাপ্পু সাউ (৩৫) এবং তাঁর স্ত্রী পূজা মাহাতো (৩০)। ওই দম্পতির দুই মেয়ে। এক জনের বয়স আট বছর, অন্য জন তিন বছরের। ঘটনার সময়ে আট বছরের মেয়েটি তার দাদু-দিদিমার কাছে ছিল। বাড়িতে ছিল শুধু তিন বছরের মেয়েটি। তার কান্নার আওয়াজই এ দিন শুনতে পান প্রতিবেশীরা। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের উপ-নগরপাল (সেন্ট্রাল) আশিস মৌর্য বলেন, ‘‘পরিবারের বক্তব্য শুনেছি। কিছু তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে। ফরেন্সিক দলকেও খবর দেওয়া হয়েছে। ঘটনার নেপথ্যে কী কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ১১ বছর আগে পাপ্পুর সঙ্গে বিয়ে হয় পূজার। আগে আমদাবাদে কাজ করতেন পাপ্পু। লকডাউনের সময়ে তিনি রাজ্যে ফিরে আসেন। পাতুলিয়ার বটতলা এলাকায় নিজের বাড়িতেই সপরিবার থাকতেন ওই যুবক। বর্তমানে টেটো চালাতেন। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই পাপ্পুদের পরিবারে অশান্তি চলছিল। এ দিন দম্পতির তিন বছরের মেয়ের কান্নার আওয়াজ শুনে প্রতিবেশীরা বিষয়টি জানান তার দাদু-দিদিমাকে। তাঁরা বার বার ফোন করলেও ধরেননি পাপ্পু বা পূজা। তখনই সন্দেহ হয় তাঁদের। বাড়িতে এসে দেখা যায়, দরজা বন্ধ। এর পরে ভিতরে ঢুকে বারান্দার সিলিং থেকে পাপ্পুর ঝুলন্ত দেহ দেখেন তাঁর শ্বশুর-শাশুড়ি। ঘর থেকে উদ্ধার হয় পূজার রক্তাক্ত দেহ। তাঁর গলার নলি কাটা ছিল। খবর পেয়ে আসে রহড়া থানার পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, স্ত্রীর গলা কেটে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন পাপ্পু। দম্পতির বাড়ির পাশে একটি ফাঁকা জায়গা থেকে ধারালো একটি অস্ত্র উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন পাতুলিয়া পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান কিশোর বৈশ্য। তিনি বলেন, ‘‘খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। ঠিক কী হয়েছে, পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। পাশের বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজও পরীক্ষা করা হচ্ছে। পাওয়া গিয়েছে রক্তমাখা চপারটিও।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy