অমূল্য: এ ভাবেই নষ্ট হয় জল। বেলেঘাটা এলাকায়। নিজস্ব চিত্র
কলকাতা পুরসভার সরবরাহকৃত জলের কতটা নষ্ট হচ্ছে, এত দিন সেই সংক্রান্ত কোনও তথ্য থাকত না পুরসভায়। এ বার সেই তথ্য রাখার প্রস্তুতি শুরু হল। এই প্রকল্পের কথা পুর কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছিলেন আগেই। আপাতত পাখির চোখ পুরসভার এক থেকে ছয় নম্বর ওয়ার্ডে। পুরসভা সূত্রে খবর, দু’ বছরের মধ্যে এই ওয়ার্ডগুলির প্রতি বাড়িতে জলের মিটার বসানো হবে।
এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের সহায়তায় ২১৭ কোটি টাকার জলের অপচয় রোখার এই প্রকল্পের দায়িত্বে একটি বিদেশি সংস্থা। বেঙ্গালুরু ও দিল্লিতে জলের অপচয় রুখতে এবং সংরক্ষণেও কাজ করেছে এই সংস্থা। পুরসভার হিসেব বলছে, পলতা, গার্ডেনরিচ, জোড়াবাগান, ওয়াটগঞ্জ ও ধাপা থেকে দৈনিক ৩৮৭ মিলিয়ন গ্যালন জল সরবরাহ হয়। এ ছাড়াও রয়েছে ৩০০টি গভীর নলকূপের জল।
কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, টালা সংলগ্ন ওই ওয়ার্ডগুলিতে পুরসভা সব থেকে বেশি জল দেয়। যা দৈনিক ১৮ ঘণ্টা হিসেবে মোট ১৮ মিলিয়ন গ্যালন জল। তাই এই পাইলট প্রকল্পের অন্তর্গত হয়েছে এই ওয়ার্ডগুলি। প্রকল্পের মেয়াদ ছ’ বছর। প্রথম তিন বছরে জলের মিটার বসানো হবে। পরের তিন বছরে প্রকল্পটি চালু এবং রক্ষণাবেক্ষণ করবে ওই সংস্থা।
কলকাতা পুরসভার জল দফতর সূত্রের খবর, বাড়ি বাড়ি মিটার বসানো হলে পুরসভার কাছে তথ্য থাকবে প্রতি দিন কত জল ব্যবহার করছেন বাসিন্দারা। টালার মূল জলাধারেও থাকবে একাধিক মিটার। ফলে কত জল সরবরাহ হচ্ছে তার-ও হিসাব থাকবে। তা থেকে মিটারে নথিবদ্ধ বাসিন্দাদের মোট জল খরচ বাদ দিলেই মিলবে জলের অপচয়। পুরসভার জল দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘জাতীয় মাপকাঠি অনুযায়ী অপচয়ের পরিমাণ সরবরাহের ১৫ শতাংশ হওয়া উচিত। তার বেশি হলেই বোঝা যাবে সরবরাহ লাইনে কোনও সমস্যা আছে।’’ তাঁর দাবি, এ দেশে জলের অপচয় রোধের প্রকল্প নতুন নয়। তবে কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে মূল্যায়নে এ শহর প্রথম। মনে করা যাক, তথ্যের ভিত্তিতে ধরা পড়ল মোট জল অপচয় ২২ শতাংশ। সে ক্ষেত্রে তা কমিয়ে ১৫ শতাংশ না করতে পারলে সংস্থার মোট টাকার নির্দিষ্ট অংশ কাটা হবে।
সংস্থার তরফে থেকে সম্প্রতি বেঙ্গালুরু গিয়েছিলেন ওই ওয়ার্ডগুলির কাউন্সিলর, পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার ও কেএমডিএ আধিকারিকেরা। সফরে সামিল পাঁচ কাউন্সিলরের অভিজ্ঞতা বলছে, জল সরবরাহে তুলনায় অনেকটাই ভাল পরিস্থিতি কলকাতার। অথচ সংরক্ষণে পিছিয়ে এ শহর।
কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে ছিলেন, এক নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তরুণ সাহা। তিনি বলেন, ‘‘নিকাশির জলও নষ্ট করে না বেঙ্গালুরু। ওই শহরের কোনও জায়গায় সপ্তাহে মাত্র তিন দিন জল আসে, কোথাও বা এক দিন। সে ভাবেই বাসিন্দারা সংরক্ষণ করেন।’’ কাউন্সিলর পুষ্পালী সিংহ বলেন, ‘‘বিশাল জলাধারে জমা হয় বাড়ির নিকাশি জল। সেটা শোধন করে বাগান, কারখানায় পাঠানো হবে। পানীয় জলে আমাদের গঙ্গার মতোই ওদের ভরসা কাবেরির জলে।’’
কী ভাবছে কলকাতা? মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে জল সংরক্ষণ নিয়ে ভাবছি না। তবে এই প্রকল্প সফল হলে অবশ্যই গোটা শহরে সেই ব্যবস্থা চালু করা হবে। আগামী দিনে শহরবাসী যাতে আরও বেশি জল পান সেই ব্যবস্থা চালু হবে ধীরে ধীরে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy