মুকুল রায় ফাইল চিত্র
তৃণমূলে যখন তিনি অঘোষিত দু’নম্বর ছিলেন, তখন তাঁর দায়িত্ব ছিল নির্বাচন কমিশনকে সামলানো। তৃণমূলে ফিরে আসার পরেও মুকুল রায়ের মূল দায়িত্ব সেটাই হতে চলেছে। এমনই খবর দলের শীর্ষনেতৃত্ব সূত্রে। আনুষ্ঠানিক ভাবে সেই দায়িত্ব ঘোষণা করা হবে কি না, তা ঠিক করবেন দলের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মুকুল যে কমিশন ‘সামলানোর’ দায়িত্বে থাকবেন, তা একাধিক প্রথম সারির নেতা জানাচ্ছেন। প্রসঙ্গত, মুকুল নিজে অন্তরালে থেকে সাংগঠনিক কাজ করতেই বেশি স্বচ্ছন্দ। বিজেপি-তে থাকার সময়েও তাঁকে নির্বাচন কমিশনে যেতে দেখা গিয়েছে। তবে তা প্রতিনিধিদলের এক সদস্য হিসেবে। প্রতিনিধিদলের ‘নেতৃত্বে’ নয়।
মুকুলকে যে দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির পদ দেওয়া হতে পারে, তা তিনি তৃণমূলে যোগ দেওয়ার দিনই লিখেছিল আনন্দবাজার ডিজিটাল। দিন যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই দিকেই বিষয়টি এগোচ্ছে বলে দলীয় সূত্রের খবর, যা থেকে এই বার্তা দেওয়া হবে যে, বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতিকে নিয়ে এনে তৃণমূল সমমর্যাদায় তাঁকে দলে পুনর্বাসন বা পুনঃপ্রতিষ্ঠা দিল। শোনা যাচ্ছে, মুকুলকে ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনেরও দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। কিন্তু ত্রিপুরায় অতীতে তিনি সফল হয়েছিলেন না ব্যর্থ, তা নিয়ে দলের মধ্যে মতান্তর রয়েছে। দলের এক সাংসদের মতে, ‘‘মুকুল’দা ত্রিপুরায় খুব সফল হয়েছিলেন বলা যাবে না। ওঁকে ত্রিপুরার দায়িত্ব দেওয়াটা খুব কাজের হবে বলে মনে হয় না।’’ আবার অন্য এক প্রবীণ নেতার মতে, ‘‘মুকুল ত্রিপুরায় মোটেই খারাপ করেনি। ওকে দায়িত্ব দেওয়া যেতেই পারে।’’
মুকুলকে ত্রিপুরার দায়িত্ব দেওয়া হবে কি না, সে বিষয়েও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন মমতাই। বিজেপি থেকে যেদিন মুকুল সপুত্র তৃণমূলে যোগ দেন, সেদিনই মমতা বলেছিলেন, ‘‘মুকুল আগে যেমন দায়িত্ব নিয়ে কাজ করত, এখনও তেমনই করবে।’’ তবে মমতা মুকুলের নামের সঙ্গে বিজেপি-তে তাঁর পদটিও উল্লেখ করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘বিজেপি-র সহ-সভাপতি তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন।’’ মুকুল এবং তাঁর পুত্র শুভ্রাংশু যে তৃণমূলে আসবেন, তা নিয়ে দলের শীর্ষতম মহলে আলোচনা বেশ কয়েকদিন ধরেই চলছিল। কিন্তু যোগদানের দিন একটি বিষয় অনেকের নজর এড়ায়নি— মুকুল এবং শুভ্রাংশুর হাতে দলের পতাকা দেওয়া হয়নি। তাঁদের শুধু উত্তরীয় পরানো হয়েছে।
তৃণমূলের একাংশ বলছে, যে কেউ দলে যোগ দিলেই তাঁর বা তাঁদের হাতে দলের পতাকা তুলে দেওয়া হয়। শুধু তৃণমূল নয়, সমস্ত দলের ক্ষেত্রে এটাই রীতি। এই প্রথম একটি ক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম দেখা গেল। এটি কোনও সঙ্কেত কি না, তা নিয়ে ওই অংশ মাথা ঘামাচ্ছে। যদিও তৃণমূলের অন্য একাংশের মতে, মুকুল-শুভ্রাংশু আদতে তৃণমূল পরিবারেরই সদস্য। তএই অংশের এক নেতার কথায়, ‘‘দু’জনেই আমাদের পরিবারের পুরোন সদস্য। ফলে তাদের হাতে আলাদা করে দলের পতাকা তুলে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। যাঁরা প্রথম থেকেই অন্য দলে ছিলেন এবং পরে তৃণমূলে আসেন অথবা যাঁরা রাজনীতিতে যোগই দিচ্ছএন তৃণমূলের হাত ধরে, তাঁদের ক্ষেত্রে পতাকা তুলে দেওয়ার রেওয়াজ আছে।’’
বস্তুত, ওই নেতার মতে, মুকুল এবং শুভ্রাংশু যে বিজেপি-তে গিয়েছিলেন, সেটাই মনে করতে বা মনে করিয়ে দিতে চাওয়া হচ্ছে না। তাঁর কথায়, ‘‘মুকুল-হাপুন (শুভ্রাংশুর ডাকনাম) দু’জনের কাছেই তৃণমূল হল আদি বাড়ি। বলা যেতে পারে, ওরা কিছুদিন অন্য বাড়িতে ছিল। কিন্তু আবার পুরোন ঘরে ফিরে এসেছে। বিজেপি ওদের কাছে নুতন বাড়ি ছিল। তৃণমূল নয়। তাই আনুষ্ঠানিক ভাবে হাতে পতাকা তুলে দিলে সেটা আরও চোখে লাগত!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy