বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের সেই জায়গায় শনিবার বেরোনো কাদাজল। নিজস্ব চিত্র।
মেট্রো প্রকল্পের জেরে বৌবাজারে একের পর এক বাড়ি ধসে পড়ার সেই বিপর্যয়ের এক বছর পূর্তি হয়েছে ৩১ অগস্ট। তার পরে ছ’দিনও পেরোয়নি, এর মধ্যেই শনিবার রাতে সেই বিপর্যয়ের স্মৃতি ফিরে এল ওই এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের মধ্যে। যার নেপথ্যে মাটি থেকে বেরোতে শুরু করা কাদাজল।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বৌবাজারের বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট ধরে শিয়ালদহে যাওয়ার পথে যে অংশে বাজার বসে, শনিবার সন্ধ্যায় সেখান থেকেই হঠাৎ তরল কাদামাটি বেরোতে শুরু করে। তাই দেখে আশপাশের কিছু ব্যবসায়ী ভয়ে ছুটতে শুরু করেন। কয়েকটি বাড়ির বাসিন্দারাও রাস্তায় নেমে আসেন। লালবাজার থেকে বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে জায়গাটি ঘিরে দেয়। পরিস্থিতি সামলাতে দ্রুত আসরে নামেন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেডের (কেএমআরসিএল) আধিকারিকেরা। বন্ধ করে দেওয়া হয় ওই অংশের সুড়ঙ্গ খননের কাজ। পুরকর্মীদের নামিয়ে কাদামাটি সাফ করার কাজ শুরু হয়।
রবিবার মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানান, সুড়ঙ্গে জল ঢোকা বা ধস নামার মতো কোনও বিপত্তি ঘটেনি। স্রেফ কিছুটা কাদাজল বেরিয়েছে। তাতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পূর্বমুখী সুড়ঙ্গ খননের কাজ করা টানেল বোরিং মেশিন ঊর্বির সামনের দিকের মাটি কাটার ব্লেডের (কাটার হেড) কাছে একটি ফোম (ফেনিল তরল) নিঃসরণের ব্যবস্থা রয়েছে। মাটি নরম করার জন্যই ওই তরল ব্যবহৃত হয়। মেট্রো সূত্রের খবর, শনিবার সুড়ঙ্গ খননের কাজ চলাকালীন তীব্র চাপে প্রচুর ফোম নিঃসরণের সময়ে আচমকা সামনে পরিত্যক্ত টিউবওয়েলের পাইপ এসে পড়ে। খনন কাজে পাইপ সে ভাবে বাধা না-হলেও প্রচুর পরিমাণ ফোম ওই পাইপ দিয়ে মাটির উপরে কাদাজলের আকারে বেরিয়েছিল। পরে সুড়ঙ্গ খনন বন্ধ রেখে মেট্রো কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সুরক্ষা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পরে রবিবার বিকেল থেকে ফের খননের কাজ শুরু হয়েছে।
মেট্রো সূত্রের খবর, পূর্বমুখী সুড়ঙ্গের শেষ পর্বের কাজ চলছে। ওই কাজ সম্পূর্ণ হলেই এসপ্লানেড থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত একটি সুড়ঙ্গ শেষ হবে। শেষ পর্বের জন্য মাঝে প্রায় সপ্তাহখানেক কাজ বন্ধ রেখে টিবিএম ঊর্বিকে বিশেষ ভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। যাতে শেষ পর্বে কোনও বিভ্রাট না ঘটে।
মেট্রো সূত্রের খবর, বৌবাজার থেকে শিয়ালদহ অভিমুখে যাওয়ার সময়ে মাটির উপরে একাধিক জীর্ণ বাড়ি এবং কিছু পথ পেরিয়ে উড়ালপুল রয়েছে। ওই অংশের কাজের সময়ে যাতে যন্ত্রে সমস্যা না হয় তা নিশ্চিত করতেই মেট্রো কর্তৃপক্ষ সচেষ্ট ছিলেন। কারণ ওই অংশে সুড়ঙ্গ নির্মাণের সময়ে যন্ত্রে কোনও বিপত্তি ঘটলে পুরো প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে। এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সম্ভাব্য সব রকম পরিস্থিতি সামলানোর উপযোগী করেই টিবিএম-কে প্রস্তুত করা হয়েছে।’’
মেট্রো কর্তৃপক্ষের আশা, সব ঠিক থাকলে অক্টোবরের মাঝামাঝি বা শেষে শিয়ালদহে পৌঁছবে ঊর্বি। তার পরে তাকে মাটি খুঁড়ে বার করে ফের বৌবাজার অভিমুখে বসিয়ে দুর্ঘটনাগ্রস্ত পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গ শেষ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy