Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Dengue

ডেঙ্গির লাফে এক সপ্তাহেই আক্রান্ত ৪ হাজারের বেশি

গত সপ্তাহে রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১১ হাজার। স্বাস্থ্য মহলের অনুমান ছিল, এ বার সেই সংখ্যা ১২-১৩ হাজার ছাড়াবে।

জানুয়ারি থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে মোট ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১৫২৯২।

জানুয়ারি থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে মোট ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১৫২৯২। ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:১৪
Share: Save:

এক সপ্তাহে ডেঙ্গিতে সংক্রমিতের সংখ্যা চার হাজারেরও বেশি! রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই লাফিয়ে বাড়ছে। শেষ কয়েক সপ্তাহ এ হেন ধারাবাহিকতা পর্যবেক্ষণ করে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে স্বাস্থ্যকর্তাদের কপালেও। গত সপ্তাহে রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১১ হাজার। স্বাস্থ্য মহলের অনুমান ছিল, এ বার সেই সংখ্যা ১২-১৩ হাজার ছাড়াবে। কিন্তু এক লাফে তা যে ১৫ হাজারের ঘরে প্রবেশ করবে, অনেকেই আন্দাজ করেননি। জানুয়ারি থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে মোট ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১৫২৯২।

স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “শেষ এক সপ্তাহে কয়েকটি জেলার নির্দিষ্ট পুর ও পঞ্চায়েত এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্ত হু‌ হু করে বেড়েছে। যা দেখে বোঝা যাচ্ছিল, রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই বাড়বে।” প্রতি বৃহস্পতিবার রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতির রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। ২২ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয়েছে চলতি বছরের ৩৮তম সপ্তাহের রিপোর্ট। স্বাস্থ্য দফতরের অভ্যন্তরীণ ওই তথ্যাবলীতে দেখা যাচ্ছে, ৩৭তম সপ্তাহের চেয়ে ৪২২৪ জন বেশি আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮তম সপ্তাহে। অর্থাৎ, এক সপ্তাহে ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে চার হাজারেরও বেশি। পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে, প্রতিদিন গড়ে সাড়ে পাঁচশোর বেশি মানুষ মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। পরিসংখ্যান বলছে, গত এক সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনায়। সেখানে ৮৫৮ জন আক্রান্ত হয়ে মোট রোগী ২৬৩৯। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হলেও ২০১৯ সালের ৩৮তম সপ্তাহে ওই জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা যা ছিল, এ বার তার চেয়ে কম বলেই জানাচ্ছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা।

পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে তাঁরা আরও জানাচ্ছেন, ২০১৯ সালে রাজ্যে ডেঙ্গির মারাত্মক প্রকোপ দেখা গিয়েছিল। সেই বছরের ৩৮তম সপ্তাহে যে জেলাগুলিতে আক্রান্তের সংখ্যা অপেক্ষাকৃত কম ছিল, সেখানেও এ বছর মারাত্মক ভাবে প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। যেমন, উত্তর ২৪ পরগনার পরেই এখন তালিকায় নাম রয়েছে হাওড়ার। সেখানে এক সপ্তাহে ৫১৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। কলকাতায় এক সপ্তাহে ৪৬৭ জন, মুর্শিদাবাদে ৫০৫ জন, হুগলিতে ৪৯৭ জন, দার্জিলিঙে ২৬০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, প্রতি সপ্তাহে প্রতিটি জেলার পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে প্রয়োজন মতো বিভিন্ন জেলায় গিয়ে পরিস্থিতি দেখছেন খোদ স্বাস্থ্যসচিব। বুধবার হুগলির শ্রীরামপুরে গিয়ে মহকুমা স্তরে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসা পরিকাঠামো খতিয়ে দেখেন স্বাস্থ্যকর্তারা। উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল এবং শ্রীরামপুর মহকুমা হাসপাতালে ডেঙ্গি চিকিৎসার জন্য শয্যা বাড়ানো হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা ডেঙ্গি পরীক্ষার সুবিধাও চালু করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারও সমস্ত জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন স্বাস্থ্যকর্তারা। সূত্রের খবর, সেখানে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে মেডিক্যাল কলেজ স্তরের হাসপাতাল— সর্বত্রই ফিভার ক্লিনিক ঠিক মতো যেন চালু থাকে।

আরও জানানো হয়েছে, প্রতিটি জ্বরের ক্ষেত্রেই ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। ডেঙ্গির চিকিৎসার জন্য যে প্রোটোকল জারি করা হয়েছে, তা মেনে চলতে হবে। যে সমস্ত জায়গায় আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে দেখা যাবে, সেখানে পতঙ্গবিদদের নিয়ে গিয়ে কাজ করতে হবে। জানা যাচ্ছে, আগামী সপ্তাহে ডেঙ্গির বিষয়ে একটি এসওপি জারি করতে পারে স্বাস্থ্য দফতর। আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, গত পাঁচ-ছয় সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা বিশ্লেষণ করে এটা স্পষ্ট যে, কয়েকটি জেলায় ওই সময়ে আক্রান্তের সংখ্যার লেখচিত্র ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। সেই তালিকায় উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদ, জলপাইগুড়ি উল্লেখযোগ্য।

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue State health department
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy