Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Mohun Bagan

ধর্মের বিভাজনের বিরুদ্ধে ফের টিফো গ্যালারিতে

সল্টলেকে টিফো নিয়ে পুলিশের ‘রহস্যজনক’ বাধা দেওয়ার পরে খানিক সতর্ক ছিল সবুজ-মেরুন শিবিরও।

বার্তা: রবিবারের ম্যাচে মোহনবাগান সমর্থকদের টিফো। নিজস্ব চিত্র

বার্তা: রবিবারের ম্যাচে মোহনবাগান সমর্থকদের টিফো। নিজস্ব চিত্র

ঋজু বসু
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৩৪
Share: Save:

প্রতিবাদের দিনকালে খেলার মাঠও এখন বার্তা দেওয়ার মঞ্চ। তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল সল্টলেক স্টেডিয়ামে আই লিগের সাম্প্রতিক মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল টক্করেই। রবিবার কল্যাণী স্টেডিয়ামে সবুজ-মেরুন বাহিনীর পরের ম্যাচটিও গ্যালারির ‘টিফোয়’ খেলার বাইরে বৃহত্তর বার্তাই মেলে ধরল।

তবে ম্যাচের শেষে সোশ্যাল মিডিয়ায় কট্টর মোহনবাগানিদের একাংশ, ‘মেরিনার্স বেসক্যাম্প’ তাদের টিফোর ভিডিয়োটি উৎসর্গ করেছে বিধাননগর পুলিশকে। প্রবল করতালির মধ্যে উন্মোচিত টিফোর ছবি, মোহনবাগানের পতাকার নীচে সারিবদ্ধ মানুষের ভিড়ে টিকিধারী ব্রাহ্মণ, টুপিধারী মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টানের ছবি। টিফোর বার্তায় বলা হয়েছে— ‘ডিভাইডেড বাই রিলিজিয়ন, ইউনাইটেড বাই মোহনবাগান’ (ধর্ম ভাগ করেছে, মিলিয়েছে মোহনবাগান)। আর একটি টিফোর ছবিতেও বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতীক। সঙ্গে লেখা, ‘মোরা একই দলে শিখ ঈশাই হিন্দু মুসলমান/ মোহনবাগান ধর্ম যাহার, খেলাই তাহার প্রাণ’! টিফোটি তৈরি করেছে বজবজের মোহনবাগান সমর্থকদের একাংশ। ফেসবুকে এই টিফো নিয়ে পরোক্ষে পুলিশকে ঠেস দিতেও ছাড়ছেন না অনেকে। এক জায়গায় লেখা হয়েছে, ‘এই টিফো নিয়ে ডার্বির দিন যুবভারতীতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পুলিশের দাবি, এটা নাকি মানুষের ধর্মীয় আবেগে আঘাত করতে পারে।’

প্রসঙ্গত, উস্কানি ছড়াতে পারে এই আশঙ্কায় গত ১৯ জানুয়ারি মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল ম্যাচে ওই দু’টি টিফো নিয়ে দর্শকদের গ্যালারিতে ঢুকতে দেননি বিধাননগর উত্তর থানার ওসি সোমদেব বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা। বিধাননগরের সিপি লক্ষ্মীনারায়ণ মিনাও পরে বলেন, ‘‘এটা পুলিশের তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তের বিষয়।’’ বিষয়টির মধ্যে আর ঢুকতে চাননি তিনি। কল্যাণীর ম্যাচের পরে সর্বসমক্ষে প্রকাশিত টিফো দু’টির ছবি সিপি-কে পাঠিয়ে জানতে চাওয়া হয়, এর মধ্যে কি কোনও রকম উস্কানি ছিল? বার্তাটি দেখলেও সিপি তার কোনও জবাব দেননি।

তবে সল্টলেকে টিফো নিয়ে পুলিশের ‘রহস্যজনক’ বাধা দেওয়ার পরে খানিক সতর্ক ছিল সবুজ-মেরুন শিবিরও। কল্যাণীতে এ দিন বেলা ১২টার মধ্যেই আন্দুলে টিফোর আঁতুড়ঘর থেকে মাঠে পৌঁছে যান প্রসেনজিৎ সরকার, শুভম দাস, সোমজিৎ রায়চৌধুরীরা। বজবজের টিফোটিও পৌঁছে যায় প্রায় একই সময়ে। সল্টলেকের ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের ফেস্টুন ‘রক্ত দিয়ে কেনা মাটি, কাগজ দিয়ে নয়’ আলাদা মাত্রা জুড়েছিল। জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে জটিলতার পটভূমিতে তা অনেকেই কড়া বার্তা বলে মনে করেন।

দলের খেলা থাকলে গ্যালারিতে নিয়মিত হাজির থাকা বহু মোহনবাগান সমর্থক মনে করেন, সমসময়ের সমাজ-রাজনীতি নিয়ে বার্তা ছড়ানোটাও একটা মানবিক তাগিদ। প্রিয় দলকে সমর্থনের আঙ্গিকের মধ্যে দিয়ে সেই কাজটা করে যেতে চান তাঁরা। ‘‘অনেক অভিনব ভাবনা মাথায় আছে।’’— বলছেন প্রসেনজিতেরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Mohun Bagan Tifo Religious Discrimination
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy