প্রতীকী ছবি।
ধাপার জয়হিন্দ জলপ্রকল্পে জল পরিশোধনের কাজের জেরে তৈরি হয় প্রচুর পরিমাণ পলি। জল-মিশ্রিত ওই পলিমাটি দীর্ঘ দিন ধরে জমতে জমতে প্রায়ই বন্ধ করে দেয় বিভিন্ন নিকাশি নালার মুখ। সাধারণ পদ্ধতিতে ওই পলিমাটি পরিষ্কার করা কঠিন। এ বার তাই আধুনিক যন্ত্র বসিয়ে মাটি আর জল আলাদা করে সেই শুকনো মাটিকে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হবে।
কলকাতা পুরসভার জল সরবরাহ দফতরের ডিরেক্টর জেনারেল মৈনাক মুখোপাধ্যায় বললেন, “জয়হিন্দ জলপ্রকল্পের ট্রিটমেন্ট প্লান্টের জন্য এলাকায় প্রচুর কাদামাটি তৈরি হয়। সেই মাটি সরানো বেশ কঠিন। তাই নতুন একটি যন্ত্রের সাহায্যে মাটি ও জল প্রথমে আলাদা করা হবে। তার পরে সেই মাটি সরিয়ে ফেলা হবে।’’ পুর কর্তৃপক্ষ জানান, এই প্রকল্পের জন্য ব্যয় হবে প্রায় ১২৮ কোটি টাকা।
পুরসভার জল সরবরাহ দফতর সূত্রের খবর, শুধু জয়হিন্দ প্রকল্পে নয়, জল পরিশোধনের যে কোনও প্লান্টেই প্রচুর পরিমাণ পলি তৈরি হয়। মাটিতে সব সময়েই প্রচুর জল থাকায় তা কখনওই শুকোয় না। তবে পলতা বা গার্ডেনরিচে পুরসভার যে জলপ্রকল্প রয়েছে, সেখানে পলিমাটি থাকলেও নিকাশির মুখ প্রশস্ত হওয়ায় তা জমে থাকে না। কিন্তু ধাপায় নিকাশি নালার পরিসর বেশি নয়, তাই পলিমাটি পুরোটা বেরোতে পারে না। জমে থাকা সেই পলিই নিকাশির ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করে। পলিমাটি জমতে থাকলে ধীরে ধীরে ট্রিটমেন্ট প্লান্টের কার্যক্ষমতাও কমে যায়।
পুর আধিকারিকেরা জানান, বর্তমানে জয়হিন্দ প্রকল্পে প্রতিদিন তিন কোটি গ্যালন জল পরিশোধন করা হয়। জল পরিশোধনের এই পরিমাণ বাড়িয়ে পাঁচ কোটি গ্যালনে নিয়ে যেতে চায় পুরসভা। তার জন্য নতুন একটি প্রকল্প তৈরি হচ্ছে। জল পরিশোধনের কাজ বাড়লে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ পলি জমবে। সেই কারণেই নতুন যন্ত্র (সেন্ট্রিফিউজ) বসিয়ে পলি থেকে জল বার করা হবে। পরে শুকনো ওই মাটি সরিয়ে ফেলা সহজ হবে। মাটি থেকে যে জল বেরোবে, তা-ও পুনর্ব্যবহার করা যাবে বলে পুর কর্তৃপক্ষ জানান। পুরনো ও নতুন, দু’টি প্রকল্পের জন্য কেনা হচ্ছে দু’টি যন্ত্র।
নিকাশির সমস্যা কোথায়?
পুর কর্তৃপক্ষ জানান, বাইপাস সংলগ্ন মিলন মেলা এবং তপসিয়া অঞ্চলের জমা জল যে নিকাশি নালা দিয়ে গিয়ে খালে পড়ে, সেটি গিয়েছে জয়হিন্দ জলপ্রকল্পের পাশ দিয়ে। সেখানে পলিমাটি জমে থাকায় জল বেরোনোর ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়। পলিমাটি সরানোর পাশাপাশি কেএমডিএ-র একটি ভূগর্ভস্থ নিকাশি পাইপলাইন মেরামতির কথাও ভাবা হচ্ছে। সেই সঙ্গে বিকল্প কোনও পথ দিয়ে নিকাশির নতুন নালা তৈরি করা যায় কি না, তা নিয়েও চিন্তাভাবনা চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy