পুজো থেকেও বাদ পার্থ।
দলের সমস্ত পদ এবং মন্ত্রিসভা থেকে আগেই বাদ পড়েছেন। এ বার পালা তাঁর এলাকার পুজো কমিটিগুলির। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করার পর থেকেই একে একে তাঁর সঙ্গে দূরত্ব রচনা করা হচ্ছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক দূরত্ব আগেই রচিত হয়েছিল সরকার এবং দলের তরফে। এ বার সামাজিক ক্ষেত্রেও সেই প্রক্রিয়া শুরু হল। বেহালার একের পর এক পুজো কমিটি থেকে পার্থকে বাদ দেওয়া শুরু হয়েছে।
বেহালা পূর্ব ও পশ্চিম মিলিয়ে ছোট-বড় প্রায় ২০০টি দুর্গোৎসব আয়োজিত হয়। বেহালা থেকে ঠাকুরপুকুর এলাকার মধ্যে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৭৫ শতাংশ পুজো কমিটির বিভিন্ন শীর্ষপদে ছিলেন পার্থ। কোনও পুজো কমিটির সভাপতি পদে ছিলেন তিনি। কোথাও চেয়ারম্যান, কোথাও প্রধান পৃষ্ঠপোষক, কোথাও প্রধান পরামর্শদাতা আবার কোথাও প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে রাখা হত বেহালা পশ্চিমের পাঁচ বারের বিধায়ককে। কিন্তু এসএসসি দুর্নীতি-কাণ্ডে ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর বেশির ভাগ কমিটি থেকেই তাঁকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে।
ঘটনাচক্রে, বেশ কিছু ক্ষেত্রে পুজো কমিটি তৈরি হয়ে পুজোর কাজকর্ম শুরুও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পার্থ গ্রেফতার হওয়ার পর তড়িঘড়ি কমিটির সংগঠকরা বৈঠক ডেকে পার্থকে কমিটি থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। বস্তুত, তাঁরা মনে করছেন, এ ছাড়া তাঁদের কাছে আর কোনও উপায়ও নেই।
বেহালার পুরনো পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম বনমালী নস্কর রোডের বেহালা ক্লাব। এ বার তাদের পুজোর ৭৮তম বর্ষ। ২০০১ সালে প্রথম বার বিধায়ক হওয়ার পর থেকেই এই পুজো কমিটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন পার্থ। তাঁকে রাখা হয়েছিল প্রধান উপদেষ্টা পদে। সেই পদ থেকে তাঁকে সরানো হয়েছে। বেহালা নূতনদলের পুজোয় প্রতি বছর নিত্যনতুন পদে বসানো হত বিধায়ক পার্থকে। এ বারও তাঁকে একটি বিশেষ পদে বসানোর কথা ভেবেছিল পুজো কমিটি। কিন্তু গ্রেফতারির পর কমিটির কোনও পদে তাঁকে না রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বেহালা নূতনদলের এক কর্মকর্তার কথায়, ‘‘যে ঘটনা ঘটে গিয়েছে, তাতে আর পার্থ’দাকে পুজো কমিটিতে রাখা সম্ভব হচ্ছে না।’’
বড়িশা অঞ্চলের একতা সঙ্ঘের পুজোতেও দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় ধরে সভাপতি পদে ছিলেন পার্থ। কিন্তু এ বার সভাপতি পদে তাঁকে না-রাখার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। বড়িশা শীলপাড়া এলাকার উদয়ন পল্লির পুজো থেকেও বাদ গিয়েছেন বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক।
বেহালা দেবদারু ফটকের পুজোর এ বার সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষ। প্রায় দু’দশক ধরে ওই পুজো কমিটির চেয়ারম্যান পদে ছিলেন পার্থ। ওই পুজো কমিটিও স্থানীয় বিধায়ককে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। ঘটনাচক্রে, এই পুজোটি তৃণমূল বিধায়ক তথা অভিনেতা সোহম চক্রবর্তীর পাড়ার পুজো বলেই পরিচিত। বড়িশা সর্বজনীন পুজো কমিটির কোনও পদে পার্থকে না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বড়িশা অঞ্চলের এক বড় আবাসনের পুজোয় প্রতি বছর অষ্টমীর ভোগ খেতে যেতেন স্থানীয় বিধায়ক পার্থ। আবাসনের সেই পুজোর সঙ্গে আরও বেশ কয়েকটি আবাসনেরও পুজোর সভাপতি ছিলেন পার্থ। সেখান থেকেও বাদ পড়তে চলেছেন তিনি।
একটা সময় পর্যন্ত বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রের আয়োজিত বিভিন্ন শারদোৎসবেই নিজেকেই সীমাবদ্ধ রাখতেন পার্থ। কিন্তু ২০১৭ সালে বেহালা পূর্বের তৎকালীন বিধায়ক শোভন চট্টোপাধ্যায় বেহালা ছেড়ে চলে যাওয়ার পর একাধিক পুজো কমিটির পদে নেওয়া হয়েছিল বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক পার্থকে। এ বার সেই সব পুজো কমিটিও পার্থের বদলে কমিটিতে আনতে চলেছে স্থানীয় কাউন্সিলরদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy