ছবি: সংগৃহীত
পকেটে বা হাতব্যাগে স্মার্টফোন নিয়ে চলাফেরা করা মেট্রোযাত্রীরা সাবধান! রীতিমতো টোকেন বা স্মার্ট কার্ড নিয়েই মেট্রোয় যাতায়াত করছে মোবাইল চোরেরা! প্ল্যাটফর্মে বসানো সিসি ক্যামেরার চেয়েও তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে যাত্রীদের উপরে নজর রাখছে তারা।
জরুরি কথোপকথন সেরে কিংবা হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজ দেখে কে কোথায় ফোন রাখলেন, তা কম্পিউটারের মতো মাথায় গেঁথে রাখছে তারা। তার পরে ভিড়ের মধ্যে সেই যাত্রীকে অনুসরণ করে তাঁকে অন্যমনস্ক হতে দেখলেই মুহূর্তে উধাও হয়ে যাচ্ছে মোবাইল হাতিয়ে। যাত্রী যত ক্ষণে চুরির বিষয়টি খেয়াল করছেন, চোর তত ক্ষণে পগার পার। ফোনও বন্ধ।
গত কয়েক মাসে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর একাধিক স্টেশনে যাত্রীদের এমন অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হয়েছে। মেট্রোর মতো সুরক্ষিত ঘেরাটোপে এ ভাবে মোবাইল চোরেদের দৌরাত্ম্য দেখে হতবাক যাত্রীরা। গত বুধবার নোয়াপাড়ার বাসিন্দা শীর্ষেন্দু ভট্টাচার্য নামে এক যাত্রী অনেকটা এ ভাবেই চাঁদনি চক স্টেশনে তাঁর দামি মোবাইলটি খুইয়েছেন। প্ল্যাটফর্মে ঢোকার সময়ে বাড়িতে ফোন করেছিলেন তিনি। তার পরে জরুরি মেসেজ দেখে পকেটে ফোনটি রেখেছিলেন। মেট্রোর দরজা পর্যন্ত গিয়েও ভিড়ের চাপে তাতে উঠতে পারেননি তিনি। মেট্রো চলে যাওয়ার কিছু ক্ষণ পরে বুঝতে পারেন, পকেটে ফোনটি আর নেই। কয়েক বার ফোন করার পরেই বন্ধ হয়ে যায় সেটি। এ নিয়ে পুলিশ এবং মেট্রো কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন শীর্ষেন্দুবাবু।
মেট্রো সূত্রের খবর, প্রথম দিকে মোবাইল চুরির ঘটনা মূলত রবীন্দ্র সদন থেকে রবীন্দ্র সরোবর স্টেশনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন অন্যান্য স্টেশনেও তা শুরু হয়েছে। ভিড়ের সময়কেই বেছে নিচ্ছে চোরেরা। কয়েকটি ঘটনায় অভিযুক্তেরা ধরা পড়লেও যাত্রীরা এ নিয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করতে না চাওয়ায় তদন্ত এগোনো যায়নি। কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় দাগি চোরেদের চিহ্নিত করার কাজও ব্যাহত হচ্ছে।
সপ্তাহ দুয়েক আগে কবি সুভাষমুখী একটি নন-এসি ট্রেন যতীন দাস পার্ক স্টেশন ছেড়ে বেরোনোর মুখে এক মহিলা যাত্রীর ব্যাগ থেকে ফোন চুরির চেষ্টা করে এক দুষ্কৃতী। বিষয়টি টের পেয়ে ট্রেনের মধ্যেই প্রবল জোরে চিৎকার করে ওঠেন মহিলা। সঙ্গে সঙ্গে মোবাইলটি নীচে ফেলে দেয় ওই দুষ্কৃতী। কিছুক্ষণ পরে কামরার মেঝে থেকে উদ্ধার হয় ওই ফোন। যাত্রীদের হট্টগোল শুনে আরপিএফ কর্মীরা অভিযুক্তকে নামিয়ে নিয়ে যান। কিন্তু মোবাইল ফেরত পেয়ে যাওয়ায় ওই মহিলা এ নিয়ে আর পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে চাননি।
এই প্রসঙ্গে মেট্রোর এক আধিকারিক জানান, চোরেদের নির্দিষ্ট একটি চক্র এই কাজে সক্রিয় হলেও তাদের সকলকে চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষা করার সময়ে ফোন এলে অনেক সময়েই যাত্রীরা অন্যমনস্ক হয়ে যান। তিনি কথা শেষ করে ফোন পকেট বা ব্যাগে রাখার পরেই হানা দিচ্ছে চোর। কিছু ক্ষেত্রে একই দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে একাধিক বার মোবাইল চুরির অভিযোগ এসেছে।
কিন্তু চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না কেন? মেট্রো সূত্রের খবর, চোরেদের চিহ্নিত করে তাদের ছবি এবং নামের তালিকা সব স্টেশনে পাঠানোর মতো ব্যবস্থা করে উঠতে পারেননি মেট্রো কর্তৃপক্ষ। এ ক্ষেত্রে পুলিশের সহায়তা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
ভারতীয় রেলে ‘ফেস রিকগনিশন’ ক্যামেরার ব্যবহার নিয়ে সম্প্রতি চর্চা শুরু হলেও মেট্রোয় এমন ক্যামেরা এখনও চালু হয়নি। ফলে সন্দেহজনক যাত্রীদের প্রবেশপথে আটকে দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। তাই ফোন চুরি যাওয়ার ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে যাত্রীদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy