ইডির তল্লাশি শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি দমকলমন্ত্রীর সুজিত। — নিজস্ব চিত্র।
পুর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে শুক্রবার দিনভর শ্রীভূমিতে দমকলমন্ত্রী সুজিত বোসের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে ইডি। প্রায় ১৪ ঘণ্টা অভিযান শেষে কেন্দ্রীয় এজেন্সির আধিকারিকরা মন্ত্রীর বাড়ি থেকে বেরোনোর পর নিজেও বাইরে বেরিয়ে আসেন সুজিত। অনুগামীদের হর্ষধ্বনির মধ্যে দিয়ে তিনি যান অনতিদূরে বিবেকানন্দের মূর্তিতে। সেখানে মাল্যদান করে ফিরে আসেন নিজের ক্লাব, শ্রীভূমি স্পোর্টিংয়ে। সেখানেই সাংবাদিকদের সামনে প্রথম প্রতিক্রিয়া দেন সুজিত। সুজিতের দাবি, বিবেকানন্দের জন্মদিবস উপলক্ষে তাঁর একাধিক কর্মসূচি ছিল। কিন্তু সকালেই ইডি বাড়িতে চলে আসায় সব কর্মসূচিই স্থগিত করে দিতে হয়। সুজিতের কথায়, ‘‘সকাল ৭টায় ছেলে এসে বলল, বাবা ইডি এসেছে বাড়িতে। আমি বললাম, ঠিক আছে, নীচে বসতে বলো।’’
শুক্রবার সকাল ৬টা ৪০ নাগাদ সুজিতের বাড়িতে ইডির দল গিয়েছে, এই খবর জানাজানি হওয়ার পর থেকেই মুখর হন বিজেপি নেতারা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কটাক্ষের সুরে শীতপোশাক প্রস্তুত রাখার পরামর্শ দেন প্রাক্তন সতীর্থ সুজিতকে। অন্য দিকে, মন্ত্রীর সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে তির্যক মন্তব্যে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দাবি করেন, সুজিত নাকি আগে রোল বিক্রি করতেন! প্রায় ১৪ ঘণ্টার ম্যারাথন তল্লাশি শেষে ইডি সুজিতের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই বিজেপিকে জবাব দিলেন দমকলমন্ত্রী। সেখানে নাম করে আক্রমণ করেন শুভেন্দু, সুকান্তদের। তিনি বলেন, ‘‘একটা কথা আপনারা মনে রাখবেন, কর্মক্ষেত্রে যদি কেউ এক পয়সা সুজিত বোসকে দিয়ে থাকেন, সুজিত বোস আজকেই রেজিগনেশন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দেবে।’’ এ কথা শুনেই সুজিতের অনুগামীরা হাততালি দিয়ে ওঠেন। ঢাকা পড়ে যায় মন্ত্রীর কণ্ঠস্বর। বস্তুত, এর পরেই সরাসরি শুভেন্দুকে আক্রমণে যান সুজিত। তিনি বলেন, ‘‘কাল চার দিনের জন্য গঙ্গাসাগরে যাচ্ছি। শীতের পোশাক আমি নেব। তার পর তো আমি ফিরছি। বিরোধী দলনেতা সবাইকে চোর বলছেন, আয়নায় নিজের মুখটা দেখুন! তোয়ালে পেঁচিয়ে টাকা নিয়েছেন। কত দিন বিজেপি আপনাকে গার্ড করবে?’’ এর পরেই সুজিত নিশানা করেন সুকান্তকেও। তাঁকে রাজনীতির লোক বলে মনে করেন না বলে দাবি করে সুজিত বলেন, ‘‘রোল বিক্রি করতাম। গর্বের সঙ্গে বিক্রি করতাম। কিন্তু কারও পকেট কাটতাম না। চুরি করতাম না। আপনার প্রধানমন্ত্রী তো চা বিক্রি করতেন। নিজেই তো বলেছেন। নিজের প্রধানমন্ত্রীকেও আপনি অপমান করছেন!’’
বেশ কিছু নথি ছাড়াও মন্ত্রীর মোবাইল ফোনটি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। এ কথা জানিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন সুজিত। তাঁর দাবি, তিনি দমকলের মতো গুরুত্বপূর্ণ এবং জরুরি বিভাগের মন্ত্রী। তাই তাঁর ফোন অত্যন্ত প্রয়োজন। কিন্তু তা-ও ফোনটি তাঁকে দিয়ে যায়নি ইডি বলেই অভিযোগ সুজিতের। যদিও ইডির তদন্তে পরিবারের সকলে মিলেই সমস্ত রকম সহায়তা করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে যে ভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে এলাকা ঘিরে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে ইডি, তা পছন্দ নয় বলেই জানিয়েছেন শহরের অন্যতম জনপ্রিয় দুর্গাপুজোর প্রধান উদ্যোক্তা তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy