Advertisement
২০ অক্টোবর ২০২৪
Mid day Meal

প্রাথমিক স্কুল খুললেই শুরু মিড-ডে মিল, তবু ভাতায় বঞ্চিত রাঁধুনিরা

মিড-ডে মিল রান্নার জন্য ওই কর্মীরা ভাতা বাবদ পান মাত্র দু’হাজার টাকা। আগে পেতেন দেড় হাজার টাকা। কয়েক মাস আগে সেই অঙ্ক বাড়িয়ে দু’হাজার করা হয়েছে।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:৫৬
Share: Save:

পুজোর ছুটির পরে আজ, শনিবার থেকে খুলে যাচ্ছে প্রাথমিক স্কুল। সেখানে পড়ুয়ারা পাবে মিড-ডে মিলও। কিন্তু প্রতি বছরের মতো এ বছরও মিড-ডে মিলের কর্মীরা পুজোর মাসে, অর্থাৎ অক্টোবরে মিড-ডে মিল রান্না করেও ভাতা পাবেন না। এখন মাধ্যমিক স্তরের স্কুল না খুললেও খুলে যাচ্ছে প্রাথমিক স্কুল। তাই প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কাজ করেও তাঁরা এই ভাতা থেকে বঞ্চিত হবেন কেন?

মিড-ডে মিল রান্নার জন্য ওই কর্মীরা ভাতা বাবদ পান মাত্র দু’হাজার টাকা। আগে পেতেন দেড় হাজার টাকা। কয়েক মাস আগে সেই অঙ্ক বাড়িয়ে দু’হাজার করা হয়েছে। কিন্তু কর্মীদের বহু দিনের অভিযোগ, এত কম পরিমাণ ভাতা দেওয়া হলেও বছরে ১২ মাসের জায়গায় ১০ মাসের ভাতা পান তাঁরা। স্কুলের গরমের ছুটি এবং পুজোর ছুটির সময়ে তাঁরা ভাতা পান না। এ নিয়ে একাধিক বার আন্দোলন করা হলেও এবং স্মারকলিপি জমা দিলেও কোনও ফল হয়নি। মিড-ডে মিলের কর্মীরা জানাচ্ছেন, এ বছর অক্টোবরে পুজোর ছুটির আগে সাত দিন মিড-ডে মিল রান্না করেছিলেন তাঁরা। আর পুজোর ছুটির শেষে ১৯-৩০ অক্টোবর পর্যন্ত মিড-ডে মিল রান্না করবেন। কিন্তু তার জন্য কোনও ভাতা মিলবে না।

সারা বাংলা মিড-ডে মিল কর্মী ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক মনোরমা হালদার বলেন, ‘‘বাচ্চাদের জন্য রান্না করব, তাদের খাবার পরিবেশন করব, অথচ আমরা কাজ করে ভাতা পাব না। এই বঞ্চনা আর কত দিন সহ্য করতে হবে? গরমের বা পুজোর ছুটি তো সরকারি ছুটি। তখন তো শিক্ষকেরা বেতন পান। তা হলে আমরা কেন ভাতা পাব না? ফের এই দাবি নিয়ে জেলায় জেলায় স্মারকলিপি দেব।’’

উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সম্পাদক নির্ঝর কুণ্ডু বলেন, ‘‘ক্লাবগুলিকে পুজোয় অনুদান দেওয়া হচ্ছে। অথচ, আর্থিক ভাবে অসচ্ছল রাঁধুনিদের বছরে দু’মাসের ভাতা দেওয়া হচ্ছে না। অক্টোবর মাসে কাজ করেও তাঁরা ভাতা পাচ্ছেন না। সরকারি কাজে নিযুক্ত মেয়েদের প্রতি এই বৈষম্য, বঞ্চনা আমরা, শিক্ষকেরা মেনে নিতে পারছি না। অবিলম্বে এঁদের জন্য উপযুক্ত সাম্মানিকের ব্যবস্থা করার দাবি রাখছি।’’ এআইইউটিইউসি-র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির রাজ্য সম্পাদক অশোক দাস বলেন, ‘‘২ লক্ষ ৪৫ হাজারের কিছু বেশি মিড-ডে মিল কর্মীকে পুজোর ছুটির অজুহাতে অক্টোবরের বেতন দেওয়া হবে না। অথচ তাঁরা প্রাথমিক স্কুলগুলি খুলে যাওয়ার পরেও ১২ দিন কাজ করবেন। এটা শুধু অমানবিক নয়, আইনবিরুদ্ধও। অবিলম্বে মিড-ডে মিলের কর্মীদের ১২ মাসের ভাতা দেওয়ার দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছি।’’

রাজ্য মিড-ডে মিল প্রকল্পের অধিকর্তা পারমিতা রায় বলেন, ‘‘এ নিয়ে হয়তো জেলা স্তরে আবেদন হতে পারে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে আমাদের কাছে রাজ্য স্তরে কোনও লিখিত আবেদন আসেনি। এলে নিশ্চয়ই চিন্তাভাবনা করব।’’ আর শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমরা অবগত আছি। আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

অন্য বিষয়গুলি:

subsidy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE