প্রতীকী ছবি।
প্রায় তিন বছর আগে চিন থেকে জাহাজে কলকাতা বন্দরে এসে পৌঁছেছিল ডালিয়ান সংস্থার তৈরি মেট্রো রেক। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতায় তিন বছরেও ওই রেকের পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। মেট্রো কর্তৃপক্ষও এ নিয়ে বিশেষ উচ্চবাচ্য করেননি। এ দিকে, অন্তর্বর্তী সময়ে চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি থেকে এসে পৌঁছনো দেশি রেক তার যাবতীয় খামতি দূর করে পরিষেবা দেওয়ার প্রশ্নে এগিয়ে গিয়েছে। তবে, দক্ষতার প্রশ্নে কিছুটা পিছিয়ে পড়া ডালিয়ান রেক সচল হয়ে কলকাতায় ছোটার সম্ভাবনা ক্রমেই উজ্জ্বল হচ্ছে।
২০১৯ সালের মার্চে এসে পৌঁছনো ডালিয়ান রেক নিয়ে প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হতে না হতেই অতিমারি এসে পড়ায় সব কাজ থমকে গিয়েছিল। নির্মাণ সংস্থার চিনা আধিকারিকেরাও দেশে ফিরে যান। মাঝের সময়ে দু’বছর ওই রেকের প্রায় কোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যায়নি। মেট্রো সূত্রের খবর, নতুন রেক এসে পৌঁছনোর পরে রেলের মানক সংস্থা ‘রিসার্চ, ডিজ়াইন অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অর্গানাইজ়েশন’ (আরডিএসও)-এর নির্দেশ মেনে ৩২ রকমের পরীক্ষা করতে হয়। সব পরীক্ষার ফল খতিয়ে দেখে কোথাও সমস্যা থাকলে তা মেরামত করতে হয়। যাবতীয় ফল ইতিবাচক হলে তার পরেই রেক ব্যবহারের ছাড়পত্র মেলে।
মেট্রো সূত্রের খবর, ডালিয়ান সংস্থার তৈরি প্রোটোটাইপ রেকের প্রথম ৬-৭টি পরীক্ষা ২০১৯ সালে মিটে গেলেও অতিমারি-পর্বে কোনও পরীক্ষা করা যায়নি। চলতি বছরের শুরু থেকে ফের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়। ইতিমধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে চিনা সংস্থার সঙ্গে মেট্রোর চুক্তির মেয়াদ ফুরিয়ে যায়। পরে মেয়াদ রেল বোর্ডের অনুমতিক্রমে বাড়ানো হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে ডালিয়ান রেকের দু’টি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা বাকি ছিল— ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক এমিশন ও অসিলেশন বা দুলুনি মাপার পরীক্ষা। মেট্রো সূত্রের খবর, ডালিয়ান রেকের বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য ব্যবস্থাপনা জাপানের তোশিবা সংস্থার তৈরি। রেক পাঠানোর আগে প্রথম পরীক্ষার কিছুটা সম্পন্ন হয়েছিল। কলকাতায় রেকগুলি পৌঁছনোর পরে দ্বিতীয় পর্বের পরীক্ষাও সম্পন্ন হয়েছে। ওই পরীক্ষায় দেখা হয়, মেট্রোর রেক থেকে বেরিয়ে আসা তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরণ ট্রেন চলাচলের সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য ব্যবস্থাপনাকে কতটা প্রভাবিত করছে। গত ১৩ এপ্রিল রাতে একপ্রস্ত মহড়া-দৌড়ও সম্পন্ন হয়েছে ডালিয়ান রেকের। এখন বাকি শুধুমাত্র অসিলেশন ট্রায়াল বা দুলুনির পরীক্ষা। রেকটিকে ঘণ্টায় সর্বাধিক ৯০ কিলোমিটার গতিতে ছুটিয়ে দেখা হবে সেটির দুলুনির পরিমাণ কেমন। মেট্রো আধিকারিকদের দাবি, সব ঠিক থাকলে মে মাসের মধ্যে যাবতীয় পরীক্ষা সম্পূর্ণ করে ছাড়পত্র পেতে পারে ডালিয়ানের প্রোটোটাইপ রেক।
এই রেক ছাড়পত্র পেলে ধাপে ধাপে আরও ১৩টি রেক আসবে মেট্রোয়। চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি থেকে যে ১৮টি রেক আসার কথা ছিল, তা ইতিমধ্যেই এসে গিয়েছে। পরের ধাপে ডালিয়নের রেকগুলিকে কাজে লাগানোই মেট্রো কর্তৃপক্ষের লক্ষ্য। কারণ, ২০২৩ সাল থেকে ধাপে ধাপে নোয়াপাড়া-বিমানবন্দর, নিউ গড়িয়া-রুবি, জোকা-তারাতলা মেট্রোয় পরিষেবা শুরু হওয়ার কথা। ফলে প্রচুর রেকের প্রয়োজন পড়বে তখন। সে কথা মাথায় রেখেই তৎপরতা শুরু হয়েছে মেট্রোয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy