দগ্ধ: দমদম ক্যান্টনমেন্ট লাগোয়া বাজারে চলছে সাফাইয়ের কাজ (বাঁ দিকে)। পোড়া বাজারে বসে হতাশ দোকানিরা। রবিবার (ডান দিকে)। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
রবিবার মানেই তাঁদের বাড়তি ব্যস্ততা। তাই শনিবার শেষ রাতেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে আড়ত বা বড়বাজার থেকে আনাজ-মাছ কিনে ভোর ভোর বাজারে বসে পড়তেন তাঁরা। আজ সেই বাজারে কোনও ব্যস্ততা নেই। শুক্রবার রাতের ভয়াল আগুনে ছাই হয়ে গিয়েছে পুরো বাজারটাই।
রবিবার সকালে দমদম ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন লাগোয়া সুভাষনগর রেল বাজারে কার্যত শ্মশানের শূন্যতা। এ দিন বাজার সাফাইয়ের কাজ হয়। দমদম থানার পুলিশ জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের কারণ খুঁজতে তদন্ত চলছে। তবে এখনও পর্যন্ত সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি।
রেল বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক জগন্নাথ দাসের মাছের দোকান ছিল ওই বাজারে। তিনি বলেন, “রবিবার বিক্রি ভাল হয় বলে অনেক মাছ তুলতে হয়। বাজারে খদ্দেরও অনেক বেশি আসেন। অন্য দিনের তুলনায় লাভও হয় খানিকটা বেশি। ফলে আমরা সবাই এই দিনটার দিকেই তাকিয়ে থাকি। লকডাউনে ব্যবসা বন্ধ ছিল। কিন্তু একটা সান্ত্বনা ছিল যে, দোকানটা আছে। এখন তো সবই গেল।”
এ দিন সকাল থেকে দক্ষিণ দমদম পুরসভা বাজার সাফাইয়ের কাজ শুরু করে। দোকান না থাকলেও সাতসকালেই হাজির হয়েছিলেন বাজারের ব্যবসায়ীরা। যদি কিছু পাওয়া যায় সেই আশায় শনিবারের মতো এ দিনও তাঁরা ছাই সরিয়ে খোঁজাখুঁজি করেন। কিছু আধপোড়া বাঁশ আর লোহার টুকরো ছাড়া তেমন কিছুই মেলেনি।
শুধু বিক্রেতারাই নন, এ দিন পোড়া বাজারে ঢুঁ মেরেছেন ক্রেতারাও। তাঁদের এক জন নিরঞ্জন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “এই বাজারের ব্যবসায়ীদের প্রায় সকলেই আমাদের চেনা। রবিবার বাজার করতে এসে আমরা অনেকে মিলে চায়ের দোকানে আড্ডা মারি। মিষ্টি-কচুরি কিনে বাড়ি ফিরি। শনিবার ছিলাম না। এ দিন এসে মন খারাপ হয়ে গেল। পুরো বাজারটা যেন শ্মশান হয়ে গিয়েছে। দোকানিদের মুখের দিকে তাকাতে পারছি না। যাতে ওঁরা তাড়াতাড়ি নতুন দোকান করে ফের ব্যবসা শুরু করতে পারেন, প্রশাসন সেটা দেখুক।”
পুরসভা এ দিন পোড়া কাঠামো সরিয়ে নিয়েছে। ছাই সরানোর কাজও শুরু হয়েছে। আপাতত ব্যবসায়ীদের খাবারের ব্যবস্থাও পুরসভা থেকে করা হচ্ছে। আজ, সোমবার ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন পুর কর্তৃপক্ষ। বাজার ব্যবসায়ী সমিতির তরফে জানানো হয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগই ঋণ নিয়ে লকডাউনের পরে নতুন করে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। পুরসভা যদি লিখিত ভাবে ঋণদানকারী সংস্থাকে চিঠি দেয়, তা হলে নতুন করে ব্যবসা শুরু করা পর্যন্ত ঋণের কিস্তি সাময়িক বন্ধ রাখবে সংস্থাগুলি। পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সেই চিঠি তাঁরা লিখে দেবেন।
অগ্নিকাণ্ডের পিছনে অন্তর্ঘাতের অভিযোগ শনিবারই তুলেছিলেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু পুলিশ বলছে, প্রাথমিক তদন্তের পরে বিষয়টি দুর্ঘটনা বলেই মনে হচ্ছে। তবে তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদিও কিছু বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে আগুনের উৎস নিয়ে। মেট্রো স্টেশনের দিকে যেখানে বাজার শুরু হচ্ছে, সেখানকার প্রথম দোকানটিতেই আগে আগুন ধরে। মোবাইলের ওই দোকানটি উত্তর দিকে। রাতে উত্তুরে হাওয়ার দাপটে সেই আগুন দ্রুত পুরো বাজার গ্রাস করে। ঠিক উত্তর দিকের প্রথম দোকানেই আগুন লাগল? ব্যবসায়ীরা বার বার এই
প্রশ্নই করছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy