প্রতীকী ছবি।
করোনা পরিস্থিতিতে বায়ুদূষণ যাতে না বাড়ে, তার জন্য কালীপুজোয় সংযম দেখানোর পরামর্শ গত বছর দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের ডাকে সাড়া দিয়ে বাজি ব্যবসায়ীরাই শহরের বিভিন্ন বাজি বাজারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন। এ বছর করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকায় বাজি বাজারের পক্ষে সায় দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু প্রশাসনের তরফে এখনও সবুজ সঙ্কেত না মেলায় আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছেন তাঁরা।
‘পশ্চিমবঙ্গ বাজি শিল্প উন্নয়ন সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক শুভঙ্কর মান্না বলেন, ‘‘গত বছরে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় আমরা ব্যবসায়ীরা নিজেরাই বাজির বাজার বন্ধ করেছিলাম। এ বার পরিস্থিতি অনেকটাই বদলেছে। রাজ্য সরকারের কাছে একটাই আর্জি, নিয়ম মেনে বাজি বাজারের অনুমতি দেওয়া হোক। গত বছর বাজি বাজার না হওয়ায় এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কয়েক লক্ষ মানুষ বিপাকে রয়েছেন। এ বারও না হলে অবস্থা আরও খারাপ হবে।’’
শহরের পূর্ব ডিভিশনের কালিকাপুর বাজি বাজার সমিতি গত বছর সর্বপ্রথম বাজি বাজার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সমিতির সম্পাদক শ্যামাপ্রসাদ মজুমদারের কথায়, ‘‘অন্যান্য বছর এই সময়ে বাজি বাজার বসা নিয়ে কলকাতা পুলিশের সঙ্গে বৈঠক হয়ে যায়। কোন বাজি ব্যবহার করা যাবে তা ঘোষণা করতে খোলা মাঠে পরীক্ষাও করা হয়। সে সব এখনও কিছু হল না। বাজি বাজার না হলে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক, ব্যবসায়ীর দুরবস্থা আরও বাড়বে।’’
দক্ষিণ ২৪ পরগনার নুঙ্গি, চম্পাহাটি ছাড়াও হুগলির জনাই রোড, বেগমপুরে বাজি কারখানা রয়েছে। রবিবার শহিদ মিনার বাজি বাজারের যুগ্ম সম্পাদক শান্তনু দত্ত হুগলির জনাই রোড, বেগমপুরে বাজি কারখানার মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় নিয়ম মেনে এ বার দুর্গাপুজো হয়েছে। তা হলে বাজি বাজার বসতে আপত্তি কোথায়?’’ জনাই রোডের এক বাজি কারখানার মালিক পরেশচন্দ্র রায় বলেন, ‘‘কারখানায় দশ জন শ্রমিক কাজ করেন। গত বছর অনেক বাজি বিক্রি হয়নি। এ বারও না হলে সকলের সংসার চালানো দায় হবে।’’
কালীপুজো উপলক্ষে শহরে এক সপ্তাহ আগে থেকে পাঁচটি বাজি বাজার বসে। শহিদ মিনার ছাড়াও টালা পার্ক, বেহালা, কালিকাপুর এবং বিজয়গড়ে ব্যবসায়ীরা দোকান দেন। প্রতি বছর দুর্গাপুজোর পরে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে বাজির শব্দ পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বাজিই বাজারে বিক্রির ছাড়পত্র পায়। এ বার এখনও পর্যন্ত পরীক্ষা না হওয়ায় পরিবেশবিদদের আশঙ্কা, নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি বাড়বে বহুগুণ। কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিক অবশ্য বলছেন, ‘‘লাইসেন্সপ্রাপ্ত দোকান পরিবেশবান্ধব বাজি বিক্রি করতে পারবে। নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি ঠেকাতে শহরে পর্যাপ্ত নজরদারি চালাবে পুলিশ।’’ তবে এ বছর ব্যবসায়ীরা বাজারে বাজি বিক্রি করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে এই বিষয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কলকাতা পুলিশের ডিসি (রিজ়ার্ভ ফোর্স) শুভঙ্কর ভট্টাচার্যকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘কোভিড আক্রান্ত রোগীদের কাছে যে কোনও প্রকারের বাজিই বিষ। মনে রাখতে হবে, যে কোনও প্রকার বাজিই বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ। কালীপুজো, দীপাবলির সময়ে বাতাসে বিষবাষ্প যাতে না ছড়ায়, তার জন্য শহর থেকে বাজির বাজার চিরতরে তুলে দেওয়াই মঙ্গল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy