Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
market price

ঘূর্ণিঝড় ও পরিবহণ সমস্যার জোড়া ফলায় আগুন বাজার

পাইকারি থেকে খুচরো বিক্রেতাদের আশঙ্কা, এই পরিস্থিতিতে আগামী কয়েক মাসও আনাজের দাম চড়া থাকবে।

মানিকতলা মাছ বাজার, রবিবার সকালে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

মানিকতলা মাছ বাজার, রবিবার সকালে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২১ ০৬:৪৫
Share: Save:

আমপানের পরে গত বছর বেড়ে গিয়েছিল আনাজের দাম। এ বারও ইয়াসের পরে ফের আনাজের দামে কার্যত ছেঁকা লাগছে। প্রায় সব আনাজের দামই বেশ কিছুটা বেড়েছে। পাইকারি থেকে খুচরো বিক্রেতাদের আশঙ্কা, এই পরিস্থিতিতে আগামী কয়েক মাসও আনাজের দাম চড়া থাকবে।

কলকাতার বেশির ভাগ বাজারেই পটল, ঢেঁড়স, ঝিঙে বিকোচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা প্রতি কেজি দরে। উচ্ছের দাম কোথাও ৮০ টাকা, কোথাও ৯০ টাকা। দক্ষিণের গড়িয়াহাট বাজার থেকে লেক মার্কেট, উত্তরের মানিকতলা বা বাগুইআটি বাজারে বেগুনের দাম ঘোরাফেরা করছে ৭০-৮০ টাকার মধ্যে। প্রতি কেজি ধনেপাতা ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ফলে খুচরো ক্রেতারা ১০-১৫ টাকার ধনেপাতা চেয়ে পাচ্ছেন খুবই অল্প পরিমাণে।

অথচ ইয়াসের আগে সব আনাজের দাম ছিল নাগালের মধ্যেই। চাষি ভেন্ডর অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট তথা কোলে মার্কেটের জনসংযোগ আধিকারিক কমল দে-র মতে, ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে অতিবৃষ্টি এবং তার পরে আসা বানে ধুয়ে গিয়েছে নিচু জমির প্রায় সমস্ত ফসল। কমলবাবু বলেন, “দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকা, পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ, বসিরহাট সাব-ডিভিশনের প্রায় সব নিচু জমির ফসলই নষ্ট হয়েছে। বেঁচে আছে শুধু উঁচু জমির ফসল। কিন্তু সেই ফসল দিয়ে চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়।”

লেক মার্কেটের কয়েক জন বিক্রেতা জানাচ্ছেন, যে সব চাষির ফসল বেঁচে গিয়েছে, তাঁরা বেশি দামে পাইকারি বাজারে বিক্রি করছেন। সেখান থেকে খুচরো বাজারে এসে দাম বেড়ে যাচ্ছে অনেকটাই। ফের নিচু জমিতে ফলানো ফসল বাজারে আসার দিকে তাকিয়ে আছেন বলে জানালেন বিক্রেতারা।

গড়িয়াহাট মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক দিলীপ মণ্ডলের মতে, গাড়ির ভাড়া বৃদ্ধিকেও আনাজের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ধরতে হবে। দিলীপবাবু বলেন, “ট্রেন বন্ধ। জেলা থেকে বেশির ভাগ আনাজ ট্রেনেই আসত। এখন গাড়ি ভাড়া করে আনাজ আনতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে গাড়ির ভাড়া প্রায় দ্বিগুণ দিতে হচ্ছে।’’

মানিকতলা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক বাবলু দাস মনে করছেন, লোকাল ট্রেন ও গাড়ি ঠিক মতো চালু হলে আনাজের দাম আবার কিছুটা কমে যাবে। তাঁর মতে, করোনা সংক্রমণ রুখতে সরকারি বিধিনিষেধ চলায় প্রতিদিন আনাজের গাড়ি আসা কমে গিয়েছে। দূর থেকে গাড়ি ভাড়া করে আনাজ বাজারে পৌঁছে দেওয়ার আর্থিক ক্ষমতা অনেক চাষিরই নেই।

পটল, ঝিঙে, ঢেঁড়সই শুধু নয়, পেঁয়াজ কিনতে গিয়েও বেশি দাম দিতে হচ্ছে। দাম বাড়তে বাড়তে প্রায় ৪০ টাকা প্রতি কেজিতে পৌঁছেছে। পোস্তা বাজার আলু-পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সেক্রেটারি গৌতম সিংহ জানান, রাজ্যের উৎপাদিত পেঁয়াজ ফেব্রুয়ারি মাসেই শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন রাজ্যবাসীকে মহারাষ্ট্রের নাসিকের পেঁয়াজের উপরেই ভরসা করতে হচ্ছে। গৌতমবাবু বলেন, “লকডাউনে পণ্য পরিবহণের গাড়িতে ছাড় থাকলেও এত দূরে অনেকে পেঁয়াজের গাড়ি নিয়ে আসতে চাইছেন না। রাস্তায় আটকে পড়ার আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ। তবে এই পরিস্থিতি সাময়িক। গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হয়ে গেলে আশা করা যায় দাম নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

market price Cyclone
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy