গত বারের দেওয়া নীল-সাদা পোশাকই নিতে চাইছে না অনেক পড়ুয়া। প্রতীকী ছবি।
গত বছরের অক্টোবরের পরে ফের চলতি বছরের এপ্রিলে স্কুলপড়ুয়াদের নীল-সাদা পোশাক দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে শিক্ষা দফতর। কসবার শিক্ষা ভবন থেকে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু স্কুলে পোশাক তৈরির জন্য পড়ুয়াদের মাপ নেওয়ার কাজও শুরু হয়েছে। কিন্তু শহরের কিছু স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, গত বারের দেওয়া নীল-সাদা পোশাকই নিতে চাইছে না অনেক পড়ুয়া। কারণ, তাদের পছন্দ স্কুলের পুরনো পোশাকই। ফলে অনেক নীল-সাদা পোশাক এখনও পড়ে রয়েছে স্কুলেই। তাই এ ভাবে শিক্ষা দফতরের টাকার কার্যত অপচয় হচ্ছে বলেই মনে করছেন প্রধান শিক্ষকদের একাংশ।
গত বছর স্কুলের প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের নীল-সাদা পোশাক দেওয়ার কথা শিক্ষা দফতরের তরফে ঘোষণার পরে আপত্তি জানিয়েছিল বেশ কিছু স্কুল। স্কুলের ঐতিহ্য মেনে পুরনো পোশাককেই রাখতে চায় বলে ওই সব স্কুল জানিয়েছিল।
যেমন, ভবানীপুর মিত্র ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক রাজা দে বলেন, ‘‘আমাদের ১০০ বছরেরও বেশি পুরনো স্কুলের পোশাকের রং বাতিল করে নীল-সাদা পোশাকে আপত্তির কথা শিক্ষা দফতরকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলাম। গত বার আমরা নীল-সাদা পোশাক নিইনি। এ বার ফের নীল-সাদা পোশাকের ওয়ার্ক অর্ডার নিতে আসায় ফের আমাদের আপত্তির কথা জানিয়ে দিয়েছি।’’
যোধপুর পার্ক বয়েজ় স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিত সেন মজুমদার বলেন, ‘‘গত বার তাঁদের পড়ুয়াদের জন্য নীল-সাদা পোশাক নেওয়া হলেও অনেকেই তা পরতে আপত্তি করে। তাদের অভিভাবকদের মতে, পোশাকের রং দেখে স্কুলের পড়ুয়াদের আলাদা করে চেনা যায়। বহু পড়ুয়াই গত বারের দেওয়া নীল-সাদা পোশাক না নিয়ে পুরনো পোশাকেই ক্লাস করেছে। ফলে তাদের জন্য বানানো নীল-সাদা পোশাক পড়ে রয়েছে স্কুলেই। এখন ফের নতুন করে পোশাকের মাপ নিতে এলে আপত্তির কথা জানাব।’’
শিয়ালদহ এলাকার টাকি গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শম্পা চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, নতুন নীল-সাদা পোশাক নিতে আপত্তি করছেন পড়ুয়াদের অভিভাবকেরাও। ফলে, গত বছর তাঁর স্কুলে আসা ১৫০০টি নীল-সাদা পোশাক এখনও বস্তাবন্দি হয়েই পড়ে রয়েছে। এ দিকে, আবার নতুন পোশাকের জন্য মাপ নেওয়া শুরু হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের মতে, বিশেষত কোনও অনুষ্ঠানে একাধিক স্কুলের পড়ুয়ারা অংশগ্রহণ করলে সেখানে তাদের পোশাকের রং দিয়েই সহজে আলাদা করে নেওয়া যায়। গত বছর নেতাজি ইন্ডোরে শিক্ষা দফতরের এ রকমই একটি অনুষ্ঠানে তাঁরা স্কুলের পোশাক দেখেই দূর থেকে তাঁদের পড়ুয়াদের চিনে নিতে পেরেছিলেন।
প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, ‘‘যে সব স্কুল নীল-সাদা পোশাক চাইছে না, তাদের কেন জোর করে দেওয়া হচ্ছে? অনেক পড়ুয়াদের অভিভাবকদের তো পোশাকের মান নিয়েও আপত্তি রয়েছে। অনেকে আবার নীল-সাদা পোশাক পেলেও পুরনো স্কুলপোশাক পরে স্কুলে আসছে। ফলে একই স্কুলের পড়ুয়াদের বিভিন্ন রঙের স্কুলপোশাক হয়ে যাচ্ছে।’’
যদিও শিক্ষা ভবনের এক কর্তার কথায়, ‘‘কলকাতায় প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তর মিলিয়ে মোট ১৬২৮টি স্কুল রয়েছে। সরকার চাইছে, সমস্ত স্কুলের পোশাকের মধ্যে একটা সাম্য আসুক। তাই সকলের পোশাকের রং এক করা হয়েছে। কিছু স্কুলের আপত্তি থাকতেই পারে। তারা লিখিত ভাবে আপত্তির কথা জানালে আমরা তা বিকাশ ভবনে পাঠিয়ে দেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy