আগ্রহী: বিরল মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী থাকতে হাজির উৎসাহীরা। সোমবার, বিআইটিএমে। নিজস্ব চিত্র
শুকতারা বা সন্ধ্যাতারার মতো উজ্জ্বল নয়। তবে সোমবার সন্ধ্যার পরে দক্ষিণ-পশ্চিম আকাশে যে উজ্জ্বল তারাটি দেখা গিয়েছে সেটিই বৃহস্পতি, জানাচ্ছেন শহরের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, টেলিস্কোপের মাধ্যমে এ দিন বৃহস্পতির সঙ্গে কিছু সময় শনির বলয়ও দেখা গিয়েছে। তবে বেশির ভাগ সময়ে দেখা যায়নি শনি গ্রহকে। যদিও খারাপ আবহাওয়ার জন্য বেশির ভাগ দর্শকই দেখতে পাননি বৃহস্পতির উপগ্রহ। সূর্যাস্তের পরে মেঘ আর কুয়াশার কারণে তাই মহাজাগতিক দৃশ্য পর্যাপ্ত সময় দেখতে পেলেন না শহরবাসী।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, প্রায় ৮০০ বছর আগে বৃহস্পতি ও শনির এত কাছাকাছি আসা পৃথিবী থেকে দেখা গিয়েছিল। তাই এ বার দুই গ্রহের এত কাছাকাছি আসার দৃশ্য দেখতে উৎসাহী ছিলেন শহরবাসী।
বিড়লা ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজিয়ামের (বিআইটিএম) চারতলার ছাদে লাগানো হয়েছিল দু’টি টেলিস্কোপ। সেখান থেকে দর্শকদের লম্বা লাইন নেমে গিয়েছিল দোতলা পর্যন্ত। সংস্থার টেকনিক্যাল অফিসার গৌতম শীল বলেন, ‘‘পৌনে ছ’টা থেকে সওয়া ছ’টা পর্যন্ত টেলিস্কোপে চোখ রেখে বৃহস্পতিকে দেখা গিয়েছে। দেখা গিয়েছে শনির বলয়ও। তবে শনি গ্রহ দেখা যায়নি। খারাপ আবহাওয়ার জন্য বৃহস্পতির কোনও উপগ্রহও দেখা যায়নি।’’ এম পি বিড়লা তারামণ্ডলের অধিকর্তা দেবীপ্রসাদ দুয়ারি বলেন, ‘‘শুরুর পর্যায়ে দুটো গ্রহই হালকা দেখতে পেয়েছিলাম। পরে সব অস্পষ্ট হয়ে যায়।’’
বিআইটিএম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন আজ, মঙ্গলবার ও দর্শকেরা সোমবারের টিকিটেই মিউজ়িয়ামে এসে ফের টেলিস্কোপে এই মহাজাগতিক দৃশ্য দেখার সুযোগ পাবেন।
পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চও বেশ কিছু জায়গায় টেলিস্কোপ দিয়ে এই বিরল দৃশ্য দেখার সুযোগ করে দিয়েছিল। মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ মহাপাত্র জানান, সন্ধ্যার আকাশে দক্ষিণ পশ্চিম দিকে বৃহস্পতির পিছনে শনির বলয়কে স্ফীত অবস্থায় দেখা গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘অনেকেই আশা করেছিলেন বৃহস্পতির অন্তত একটি বা দু’টি উপগ্রহ দেখতে পাওয়া যাবে। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার জন্য তা দেখা যায়নি।’’
আকাশ দেখার ক্লাব স্কাই ভিউ ওয়াচ-এর তরফে শৌভিক নাথ জানান, খালি চোখে দক্ষিণ পশ্চিম আকাশে শুধু একটা উজ্জ্বল বিন্দু দেখা গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা আমাদের বাড়ির ছাদে টেলিস্কোপ লাগিয়ে সন্ধ্যা থেকে বসেছিলাম।
কিন্তু সওয়া ছ’টার পরে আর কিছুই দেখা যায়নি। যাঁরা দেখতে পাননি, তাঁদের আশ্বস্ত করেছি আকাশ পরিষ্কার থাকলে মঙ্গলবার থেকে শুরু করে কিছু দিন এই বিরল দৃশ্য দেখার সুযোগ হবে।’’
তবে এ দিন যাঁরা কিছুই দেখতে পাননি, তাঁদের অনেকেই আজ, মঙ্গলবার ফের টেলিস্কোপে চোখ রাখবেন। বছর ষাটের এক বৃদ্ধের কথায়, ‘‘জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন ফের বৃহস্পতি ও শনি এত কাছাকাছি আসবে ২০৮০ সালে। তখন আমার বয়স হবে ১২০। তত দিন তো বাঁচব না। তাই এই মহাজাগতিক দৃশ্য দেখার সুযোগ হারাতে চাই না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy