—প্রতীকী ছবি।
গাড়ি থেকে তেল চুরির অভিযোগ অনেক সময়েই শোনা যায়। কিন্তু তেল চুরির জন্য আস্ত বাস চালিয়ে চম্পট দেওয়ার ঘটনা এ বার সামনে এসেছে। সেই বাস নিয়ে পালাতে গিয়েই রবিবার গভীর রাতে ভিআইপি রোডের উপরে একটি গাড়িতে ধাক্কা মারে বাসের চালক। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় গাড়ির তিন যাত্রীর। গাড়িটির চালক মারাত্মক জখম হয়েছেন। বাসচালককে গ্রেফতারের পরে জেরা করে তেল চুরির বিষয়টি জানতে পেরেছে পুলিশ।
তদন্তকারীরা জানান, ৪৪ নম্বর রুটের একটি বাস নিয়ে পালাচ্ছিল গাজিউল্লা মোল্লা নামে ওই চালক। বাসটির মালিক সুজিত ঘোষ জানান, গত বৃহস্পতিবারও ওই রুটের একটি বাস আচমকা উধাও হয়ে যায় বাগুইআটির স্ট্যান্ড থেকে। পরে কলেজ মোড়ের কাছে বাসটি উদ্ধার হলেও সেটির তেলের ট্যাঙ্ক পুরো ফাঁকা ছিল। সুজিতের কথায়, ‘‘তেল না থাকায় বাসটি ফেলে যেতেবাধ্য হয়েছিল চালক। এর পরে রবিবার রাতেও একই ঘটনা ঘটে। একটি বাস নিয়ে চলে গিয়েছিল অভিযুক্ত। সেটি অন্য একটি বাসের কর্মী দেখতে পেয়ে খবর দেন। আমি দ্রুত পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাসস্ট্যান্ডের কাছে পৌঁছই। দেখি, বাসটি নিয়ে স্ট্যান্ডের সামনে দিয়ে বেপরোয়া গতিতে বেরোচ্ছে চালক। সবাই মিলে বাসটিকে ধাওয়াকরা হয়।’’
বিধাননগর কমিশনারেট জানাচ্ছে, রাত ১টা ২৫ মিনিট নাগাদ স্ট্যান্ড থেকে বেরোয় ওই চালক। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, তেল চুরির পরে সে বাসটি স্ট্যান্ডে ফেরত নিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু পুলিশ এবং লোকজন দেখে বেপরোয়া গতিতে বাসটি নিয়ে বাগুইআটি থেকে উল্টোডাঙার দিকে পালানোর চেষ্টা করে সে। বাগুইআটি থানার পুলিশ বাসটিকে ধাওয়া করে। তার পরেই লেক টাউনের কাছে ঘড়ি মোড়ে সিগন্যালে দাঁড়ানো গাড়িটিতে সজোরে ধাক্কা মারে বাসটি।
ওই চালকের বিরুদ্ধে বাগুইআটি থানার পুলিশ চুরির অভিযোগ দায়ের করেছে। বৃহস্পতিবার যে বাসটি রাস্তার ধারে রেখে যাওয়া হয়েছিল, সেটি থেকে ১০০ লিটারের বেশি জ্বালানি চুরি হয়েছিল। এর পিছনেও দুর্ঘটনায় অভিযুক্ত চালকই রয়েছে বলে দাবি পুলিশের। তদন্তকারীরা জানান, রবিবারের বাসটিতে ২৬৫ লিটার তেল ছিল। যা থেকে ২০০ লিটারেরও বেশি তেল চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ। গ্রেফতারের পরে তাকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
বাগুইআটি স্ট্যান্ডের কর্মীরা জানাচ্ছেন, ওই সব বাস পুরনো। একটি চাবি দিয়েই প্রায় সব বাস চালু করা যায়। পুলিশ জানায়, যে বাস দুর্ঘটনা ঘটায়, সেটি কোনও ভাবে চালু করে বেরিয়ে যায় অভিযুক্ত। তার বিরুদ্ধে অতীতেও নানা ধরনের চুরির অভিযোগ থাকায় এক বছর আগে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল বলেও পুলিশ জানতে পেরেছে। বাসের মালিক সুজিতের কথায়, ‘‘এমন ঘটনা এত বছরে দেখিনি।’’
এই ঘটনা প্রসঙ্গে ৪৪ নম্বর বাস রুটের সভাপতি তথা ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’-এর সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, ‘‘বাসস্ট্যান্ডগুলির নিরাপত্তা বাড়ানো দরকার। বাসের চালক নিয়োগ করার আগে তাঁর কোনও অপরাধমূলক কাজে যুক্ত থাকার রেকর্ড আছে কি না, তা খতিয়ে দেখার ব্যবস্থা করতে হবে। এতে পুলিশের সহযোগিতা প্রয়োজন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy