প্রতীকী ছবি।
ঋণ নিয়েছিলেন ৭০ হাজার টাকা। মাত্র তিন মাসে সুদ-সহ সেই ঋণের বোঝা পৌঁছেছে আড়াই লক্ষ টাকায়! ঋণপ্রদানকারী ভুয়ো অ্যাপের (লোন অ্যাপ) প্রতারণার ফাঁদে পড়ে এমনই সুদের মাসুল গুনতে হচ্ছে হাওড়ার এক যুবককে। শুধু তা-ই নয়, ওই যুবকের অভিযোগ, সময় মতো ঋণের টাকা শোধ করতে না পারায় তাঁকে খুনের হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি অশ্লীল ভাষায় মেসেজ পাঠানো হচ্ছে। এমনকি, মহিলাদের আপত্তিকর ছবি তাঁর চেহারার সঙ্গে সুপার ইম্পোজ় করে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে পরিচিতদের কাছে। গোটা ঘটনায় মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত ওই যুবক হাওড়া পুলিশের সাইবার ক্রাইম শাখার দ্বারস্থ হয়েছেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কলকাতা পুলিশের তরফে এমন ভুয়ো অ্যাপের ব্যাপারে সতর্ক থাকার বার্তা দেওয়া হলেও হাওড়া সিটি পুলিশ এখনও তেমন ভাবে উদ্যোগী হয়নি। কিন্তু ওই যুবকের প্রতারণার ঘটনাটি সামনে আসায় এ বার নড়ে বসেছেন পুলিশের কর্তারা। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছে সাইবার ক্রাইম থানা ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মার্চ মাসে রুপিস প্রি, ক্যাশ এয়ার, স্মল ক্রেডিট, পাপা মানি প্রভৃতি অ্যাপ থেকে ঋণ নিয়েছিলেন হাওড়ার বটানিক্যাল গার্ডেন থানা এলাকার বাসিন্দা জয় চক্রবর্তী। তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। পরিবারে রয়েছেন স্ত্রী, মা ও বাবা।
জয় জানিয়েছেন, তিনি ব্যক্তিগত প্রয়োজনে মার্চ মাসে একটি অ্যাপে আসা লোনের বিজ্ঞাপন দেখে প্রথমে ১০ হাজার টাকা ঋণ নেন। কিন্তু সেই টাকা শোধ করতে না পারায় তাঁকে বলা হয়, অন্য একটি অ্যাপ থেকে ঋণ নিয়ে আগের ঋণ মেটাতে। জয়ের অভিযোগ, এ ভাবে একটির পর একটি অ্যাপ থেকে ঋণ নিয়ে তাঁকে আগের ঋণ শোধ করতে প্রলোভন দেখানো হয়। ফলত, চক্রব্যূহে পড়ে তাঁর ঋণের পরিমাণ বাড়তেই থাকে।
জয় বলেন, ‘‘এই ফাঁদে পড়ে মার্চের মধ্যেই ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৭০ হাজার টাকা। এর পরে ওই অ্যাপের তরফে চলতি মাসে জানানো হয়, গত তিন মাসে সুদ-সহ আমার ঋণ দাঁড়িয়েছে ২ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকা। অবিলম্বে তা না মেটালে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ এ ছাড়া, ওই সংস্থার পক্ষ থেকে তাঁর মোবাইলে অশ্লীল ছবি-সহ তাঁকে কী ভাবে খুন করা হবে, সেই ভিডিয়ো পাঠিয়ে শাসানি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ।
হেনস্থা এখানেই শেষ হয়নি। জয় পুলিশকে জানিয়েছেন, ৭০ হাজার টাকা তিন মাসে কী ভাবে বেড়ে আড়াই লক্ষে পৌঁছল, সেটা বোঝার আগেই ওই অ্যাপ-সংস্থা থেকে তাঁর পরিচিতদের ফোন করে হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী ও বাবাকে অকথ্য গালিগালাজ করাশুরু হয়। সেই সঙ্গে পরিচিতদের মোবাইলে জয়কে ‘চোর, জোচ্চোর’ বলে উল্লেখ করে অবিলম্বে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার মেসেজও পাঠানো হচ্ছে।
ওই যুবক বলেন, ‘‘এই অবস্থায় আমি মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছি। আমার সামাজিক সম্মানহানি হচ্ছে। শেষে বটানিক্যাল গার্ডেন থানায় ওই অ্যাপ-সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করি। থানা সেই অভিযোগ পাঠিয়েছে হাওড়া সিটি পুলিশের সাইবার ক্রাইম শাখায়।’’ হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘কারা এই প্রতারণা-চক্র চালাচ্ছে, তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই যুবকের পরিবারের সমস্ত ফোন নজরদারিতে রাখা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy