—প্রতীকী চিত্র।
ভাইকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্তেরা পলাতক। তদন্তকারী সংস্থার কাছে একের পর এক সেই পলাতকদের খোঁজ দিয়ে আর্থিক পুরস্কার পেয়েছেন মৃতের দাদা। আর সেই টাকা তিনি ব্যয় করছেন মৃত ভাইয়ের মামলা চালানোর কাজে।
২০২১ সালের ২ মে বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরে বেলেঘাটার শীতলাতলা লেনের বাসিন্দা, বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারকে খুন করা হয়েছিল। ওই খুনের মামলায় কয়েক জন প্রতিবেশী, মহিলা ও পুরুষ-সহ মোট ১২ জন তৃণমূল সমর্থকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। কলকাতা পুলিশ আট জনকে গ্রেফতার করে। পরে কলকাতা হাই
কোর্টের নির্দেশে মামলার তদন্তভার নেয় সিবিআই। ঘটনার পর থেকে বাকি অভিযুক্তেরা ফেরার হয়ে যায়। তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি, খোঁজ দিতে পারলে আর্থিক পুরস্কারের কথা ঘোষণা করে সিবিআই। অভিযুক্তদের মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা আর্থিক পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই ঘটনার পর থেকে অভিজিতের দাদা বিশ্বজিৎ একের পর এক পলাতকের খোঁজ দিয়ে চলেছেন। আর সেই আর্থিক পুরস্কারের টাকাতেই চলছে তাঁর ভাইয়ের খুনের মমলা।
সিবিআই সূত্রের খবর, ২০২২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ওই মামলায় ফেরার দুই অভিযুক্ত সৌরভ দে এবং রাহুল দে-কে গ্রেফতার করা হয়। সল্টলেকের একটি ফ্ল্যাটে তারা গা-ঢাকা দিয়েছিল। দুপুরে সেখানে হানা দিয়ে গ্রেফতার করা হয় ওই দু’জনকে। সৌরভ এবং রাহুলের সম্পর্কে সব খবরাখবর সিবিআই আধিকারিকদের ফোনে জানিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ। এমনকি, তিনিই সিবিআই আধিকারিকদের সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলেন ওই ফ্ল্যাটে। এর পরে সম্প্রতি মামলায় অভিযুক্ত এক দম্পতিকে উত্তর শহরতলির কেষ্টপুর কলেজ মোড়ের কাছে একটি সুগন্ধি তৈরির কারখানা থেকে গ্রেফতার করে সিবিআই। ওই দম্পতির নাম সঞ্জয় বারিক ও পাপিয়া বারিক। নাম ভাঁড়িয়ে তারা ওই সুগন্ধির কারখানায় কাজ করছিল। এ ক্ষেত্রেও সিবিআই-কে ফোনে তাদের খোঁজ জানিয়েছিলেন বিশ্বজিৎই। এর পরে কয়েক জন বন্ধুকে নিয়ে তিনি ওই কারখানায় যান। তার পরে সিবিআই অধিকারিকেরা কারখানায় গিয়ে ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করেন।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের খোঁজ দিতে পারলে আর্থিক পুরস্কারের ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই কাজ করে দেখিয়েছেন বিশ্বজিৎই। ২০২২ সালে দু’জনকে গ্রেফতারের পরে পুরস্কার বাবদ এক লক্ষ টাকা তাঁকে দেওয়া হয়েছিল। একই সঙ্গে আরও দুই অভিযুক্তকে ধরিয়ে দেওয়ার পরে আর্থিক পুরস্কারের নথি তৈরি করা হচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যেই আরও এক লক্ষ টাকা বিশ্বজিতের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘ভাইয়ের খুনের মামলায় বিপুল খরচ। পুরস্কারের টাকায় কিছুটা হলেও তা সামাল দেওয়া যাচ্ছে। মামলার খরচ চালাতে কয়েক জন বন্ধু ও পরিজনেরা সাহায্য করছেন। তা সত্ত্বেও ওই টাকা কাজে লেগেছে। দীর্ঘদিন মামলা চলবে। পড়ে পাওয়া আরও এক লক্ষ টাকাও মামলার খরচের কাজে লাগাব।’’ আর অভিজিতের মা মাধবী বলছেন, ‘‘আমার ছেলেকে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছিল। ওর সঙ্গে তার তিন-চারটি পোষ্যকেও পিটিয়ে মারা হয়। মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমি ওই ঘটনার সাক্ষী হিসাবে আদালতকে অভিযুক্তদের বিষয়ে সব জানিয়েছি।
আবার আমার সাক্ষ্য নেওয়া হবে। ওই আর্থিক পুরস্কারের টাকা আমার ছেলের মামলায় খরচ করা হচ্ছে। ও-ই সংসারে সব চেয়ে বেশি উপার্জন করত। এখন আমাদের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy