Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

নম্বরের ধাঁধাঁয় ব্যাঙ্ক থেকে টাকা উধাও

যোগফল বলতেই কলকাতা বিমানবন্দর এলাকার বাসিন্দা শুভাশিস তালুকদার দেখেন, তাঁর ওই অ্যাকাউন্ট থেকে ২৬,৫০০ টাকা উধাও।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নীলোৎপল বিশ্বাস
শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৯ ০১:৩২
Share: Save:

ভাবখানা ছিল এমন, যেন কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড বা ওটিপি জানতে চাওয়া হচ্ছে না। স্রেফ ইউনিফায়েড পেমেন্ট ইন্টারফেসের (ইউপিআই) সঙ্গে যুক্ত একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকলেই হবে। ওই অ্যাকাউন্টের শেষ চারটি নম্বর জেনে এক ব্যক্তিকে ফোনে বলা হয়, ‘‘আপনার নিজস্ব ইউপিআই পাসওয়ার্ড বলতে বলছি না। শুধু ওই পাসওয়ার্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টের শেষ চারটি সংখ্যা যোগ করে তার যোগফল বললেই হবে।’’

যোগফল বলতেই কলকাতা বিমানবন্দর এলাকার বাসিন্দা শুভাশিস তালুকদার দেখেন, তাঁর ওই অ্যাকাউন্ট থেকে ২৬,৫০০ টাকা উধাও। তখনই তিনি বোঝেন, যোগফল শুনে তা থেকে আগে জেনে নেওয়া অ্যাকাউন্টের শেষ চারটি সংখ্যা বাদ দিয়ে দুষ্কৃতী সহজেই তাঁর পাসওয়ার্ড পেয়ে গিয়েছে! এর পরে নিউ টাউন থানায় গেলেও অভিযোগ না নিয়ে শুভাশিসকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পরে অভিযোগ নিলেও বলে দেওয়া হয়, বিধাননগর সাইবার থানায় যান। সাইবার থানা আবার জানায়, নিউ টাউন থানা অভিযোগপত্র না পাঠানো পর্যন্ত তাদের কিছুই করার নেই। গত ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে এই অবস্থায় পুলিশের দোরে দোরে ঘুরছেন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী শুভাশিস।

ঘটনার সূত্রপাত গত ১৬ অগস্ট। একটি অনলাইন সাইট থেকে ১০৯৯ টাকা দামের একটি শাড়ি কিনেছিলেন শুভাশিসের স্ত্রী পম্পা তালুকদার। শাড়িটি হাতে পেয়ে তিনি দেখেন, সেটি নানা জায়গায় ছেঁড়া। শাড়িটি ফেরত দিতে ওই ওয়েবসাইটে দেওয়া একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে যোগাযোগ করলে বলা হয়, গুজরাতের সুরাতে স্পিড পোস্টে শাড়িটি পাঠাতে হবে গ্রাহককে। তবে পোস্টের খরচ কে দেবেন, সেই প্রশ্ন তুললেও উত্তর মেলেনি। অগত্যা স্পিড পোস্টেই শাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করেন শুভাশিস। শাড়ি গন্তব্যে পৌঁছে গেলেও সংস্থার তরফে সেটির দাম ফেরত দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।

শুভাশিসের কথায়, ‘‘ওই সংস্থার ওয়েবসাইটে দেওয়া নম্বরে বারবার ফোন করেও যোগাযোগ করা যায়নি। এর পরে সংস্থার নাম ধরে ইন্টারনেটে খুঁজে অন্য একটি নম্বর পাই। তাতে ফোন করলে প্রথমেই বলা হয়, ‘‘আমরা শাড়িটা ফেরত পেয়েছি। টাকাটা কী ভাবে নিতে চান বলুন।’’ শুভাশিসের দাবি, ওই সংস্থা থেকেই ইউপিআই যুক্ত রয়েছে এমন একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সহজে টাকা পাঠিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়। তিনি বলেন, ‘‘ইউপিআই দিয়ে বহু বার লেনদেন করেছি। কখনও সমস্যা হয়নি। ফোনে আরও বলা হয়, কোনও পাসওয়ার্ড চাওয়া হচ্ছে না। তবে অ্যাকাউন্টের শেষ চারটি সংখ্যা আর পাসওয়ার্ডের ছ’টি সংখ্যার যোগফল বললে তা থেকে যোগ-বিয়োগ করে যে আসল নম্বর জেনে ফেলা সম্ভব, সেটা মাথায় আসেনি!’’

বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা বলেন, ‘‘বারবার প্রচার চালানো সত্ত্বেও মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা সতর্ক হচ্ছেন না। কোনও ভাবেই তো কোনও নম্বর বাইরে বলার কথা নয়।’’ শুভাশিসের বক্তব্য, ‘‘আরও সতর্ক হতে হত, মানছি। কিন্তু পুলিশও তো প্রথমে অভিযোগ নিতে চায়নি।’’ পুলিশ কমিশনার এ ব্যাপারে বলেন, ‘‘থানা থেকে ঘুরিয়ে দেওয়ার কথা নয়। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Scam Money UPI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy