Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

বন্ধুকে দেখে হাত নেড়ে গঙ্গায় ঝাঁপ যুবকের

পুলিশ জানায়, ওই যুবকের নাম রাজকুমার সোনকার (৩৭)। সালকিয়ার বাসিন্দা রাজকুমার পেশায় প্রমোটার। গত চার মাস ধরে জিভের ক্যানসারে ভুগছিলেন তিনি। অস্ত্রোপচারের পরে রেডিয়েশন চলছিল।

রাজকুমার সোনকার

রাজকুমার সোনকার

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:২৯
Share: Save:

গঙ্গায় তলিয়ে গিয়ে নিখোঁজ হলেন এক যুবক। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত তাঁর সন্ধান মেলেনি। পুলিশের কাছে ওই যুবকের এক বন্ধু দাবি করেছেন, তাঁকে দেখে হাত নেড়েছিলেন তিনি। তার পরেই বালি ব্রিজ থেকে গঙ্গায় ঝাঁপ দেন। সেই মতো বিকেলে গঙ্গায় তল্লাশি চালানো হলেও যুবকের সন্ধান মেলেনি।

পুলিশ জানায়, ওই যুবকের নাম রাজকুমার সোনকার (৩৭)। সালকিয়ার বাসিন্দা রাজকুমার পেশায় প্রমোটার। গত চার মাস ধরে জিভের ক্যানসারে ভুগছিলেন তিনি। অস্ত্রোপচারের পরে রেডিয়েশন চলছিল। তবে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়া নিয়ে সম্প্রতি রাজকুমার অবসাদেও ভুগছিলেন। তাঁর পরিজনেরা জানিয়েছেন, রাজকুমার মাঝেমধ্যেই বলতেন ‘যন্ত্রণা সহ্য করতে পারছি না। আমি শেষ হয়ে যাব।’

পরিবার জানিয়েছে, এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ স্ত্রী সোনমকে কাজে যাচ্ছি বলে বাড়ি থেকে বেরোন রাজকুমার। কিছু পরে সোনম স্বামীর মোবাইলে ফোন করে পাননি। এর পরে যে জায়গায় প্রোমোটিংয়ের কাজ চলছে, সেখানে ফোন করেন সোনম। কিন্তু জানতে পারেন, সেখানেও যাননি রাজকুমার। তখনই বিষয়টি জেনে যুবকের বন্ধু ও আত্মীয়েরা সালকিয়ায় গঙ্গার ঘাট, বামনগাছি সেতু-সহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ শুরু করেন।

শেষে পরিচিত এক জনের থেকে জানা যায়, তিনি রাজকুমারকে সালকিয়া চৌরাস্তার দিকে যেতে দেখেছেন। দুপুরে গোলাবাড়ি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন যুবকের পরিজনেরা। বন্ধু রীতেশ বর্মা বলেন, ‘‘অনেক বার ফোন করলেও প্রথমে রাজকুমারের মোবাইল বন্ধ ছিল। দুপুরে ফোন করতে রাজকুমার জানান, তিনি মরে যেতে চান।’’ দুপুর আড়াইটে নাগাদ ফের রাজকুমারকে ফোন করে রীতেশরা জানতে পারেন, তিনি রয়েছেন বালি ব্রিজে।

তা শুনেই রীতেশ-সহ আরও তিন জন মোটরবাইকে বালির দিকে রওনা দেন। রীতেশ বলেন, ‘‘ওঁকে বলেছিলাম, যা কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে যেন কথা বলে। রাজকুমারকে তার জন্য বালি খালের কাছে এসে দাঁড়াতে বলি।’’ তিনি জানিয়েছেন, বালি খালের কাছে পৌঁছে তাঁরা রাজকুমারকে দেখতে না পেয়ে ফোন করেন। কিন্তু ফোন ছিল বন্ধ। রীতেশের দাবি, এর পরে তাঁরা বালি খালে বাইক রেখে হেঁটে বালি ব্রিজের দক্ষিণেশ্বরগামী রাস্তায় ওঠেন। তখন দেখা যায়, বালির দিকে তিন ও চার নম্বর স্তম্ভের মাঝের ফুটপাতে দাঁড়িয়ে আছেন রাজকুমার।

ওই বন্ধুর দাবি, ‘‘ওকে দেখতে পেয়ে আমরা হাত তুলি। রাজকুমারও হাত নাড়ায়। এর পরে আচমকাই ব্রিজের রেলিংয়ে উঠে ঝাঁপ দেয়।’’ যুবককে ভাটার টানে বালির দিকে ভেসে যেতে দেখে রীতেশরা বাইক নিয়ে ঘাটে এসে নৌকার খোঁজ করেন। ততক্ষণে অবশ্য রাজকুমারকে আর ভাসতে দেখা যাচ্ছিল না বলে দাবি তাঁদের। এর পরেই বালি থানায় ঘটনাটি জানান রীতেশরা।

বিকেলে বালির বাসিন্দা দুই যুবক থানায় একটি মোবাইল জমা দেন। তাঁরা দাবি করেন, মোবাইলটি ব্রিজের তিন ও চার নম্বর স্তম্ভের মাঝে রেলিংয়ে রাখা ছিল। রাজকুমারের পরিবার মোবাইলটি তাঁর বলে শনাক্ত করেছে। যুবকের শ্যালক আনন্দ সোনকার বলেন, ‘‘ডাক্তারবাবুরা বলেছিলেন, জামাইবাবু এখন অনেকটা ভাল। বাকিটাও সেরে যাবে। বড়দিনের রাতে তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে কেক কাটল। আর আজ কোথা থেকে কী হল, বুঝতেই পারছি না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Belur Suicide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy