প্রতীকী ছবি।
ছাদে কাকিমার বাইশ রকমের জবা গাছ রয়েছে। ফুলে হাত দিলে কাকিমা রাগারাগি করবেন। এই কথা নিয়েই কি বচসা শুরু হয়েছিল বেহালার নেশাগ্রস্ত দুই যুবকের মধ্যে? এর পরেই কি ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয় এক জনের? ছাদ থেকে পড়ে এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে তদন্তকারীদের মনে। বচসার কারণ জানলেও কী ভাবে ওই মৃত্যু হয়েছে, তা ঘটনার দিন তিনেক পরেও তাঁদের কাছে স্পষ্ট নয়।
সোমবার ভোরে বেহালার সেনহাটি কলোনির একটি বাড়ির বারান্দা থেকে উদ্ধার হয় কুশল চক্রবর্তী নামে ওই যুবকের দেহ। যে বাড়ির বারান্দায় ২৮ বছরের ওই যুবক পড়েছিলেন, সেটির পাশের বাড়ির লোকজনই দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে তাঁকে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
খবর পেয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। তারা জানতে পারে, তাঁকে নিয়ে যাঁরা হাসপাতালে ছুটেছিলেন, তাঁদের বাড়িতেই রবিবার রাতে ছিলেন কুশল। ওই বাড়িরই একমাত্র ছেলে দেবাঞ্জন সেন ওরফে বিতানের সঙ্গে তাঁদের ছাদে বসে রাতভর তিনি মদ্যপান করেন। ভোরে তাঁকে উদ্ধার করা হয় বিতানদের পাশের বাড়ির বারান্দা থেকে। কুশলের ভাই কুণাল পুলিশে লিখিত অভিযোগ করেন যে, বিতানই তাঁর দাদাকে ছাদ থেকে ঠেলে ফেলেছেন। যার ভিত্তিতে মামলা রুজু করে বিতানকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার তাঁকে আলিপুর আদালতে তোলা হলে ৩১ মে পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত হয়।
বিতানদের তেতলা বাড়িতে গিয়ে বুধবার দেখা যায়, বিতান ও তাঁর মা ছাড়াও সেই বাড়িতে তাঁর কাকু ও কাকিমা থাকেন। বাড়িতে দু’টি ছাদ।
বিতানের কাকিমা সোমা সেন দাবি করেন, ‘‘বিতান ও কুশল বহু দিন ধরেই একে অপরকে চিনত। রবিবার রাতে উপরের ছাদে বসে মদ্যপান করছিল ওরা। ছাদে আমার ২২টি জবা গাছ রয়েছে। ওই ফুল যাতে না ছেঁড়ে, তার জন্য ভোরে ছাদে উঠেছিলাম। দেখি, কুশল গুম মেরে বসে রয়েছে। বিতান ওকে নামতে বলছে। আমিই কুশলের ভাই কুণালকে ফোন করে ডাকি।’’ মহিলার দাবি, জবা গাছ নিয়েই সম্ভবত তর্কাতর্কি হয়েছিল। নেশার ঘোরে সেটাকেই ধরে বসেছিলেন কুশল। কুণাল এসেও দাদাকে নামাতে পারছিলেন না বলে তাঁর দাবি। সোমা জানান, এক সময়ে সকলে হাল ছেড়ে দিয়ে তাঁরা দোতলায় নেমে আসেন। তার একটু পরেই শোনেন জোর আওয়াজ। গিয়ে দেখেন, পাশের বাড়ির বারান্দায় কুশল পড়ে আছেন। মহিলার আরও দাবি, বিতানকে ফাঁসানো হচ্ছে।
ময়না-তদন্তের পরে কুশলের দেহ এ দিনই তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। শেষকৃত্যের জন্য যাওয়ার পথে কুশলের ভাই কুণাল দাবি করেন, ‘‘আমি নেমে এলেও দাদা আর বিতান উপরেই ছিল। সেখান থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হয়েছে ওকে।’’ বেহালা থানার পুলিশ জানিয়েছে, কার দাবি ঠিক, জানা যায়নি। তবে কী নিয়ে বচসা হয়েছিল, জানা গিয়েছে। ময়না-তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট এলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। কলকাতা পুলিশের ফরেন্সিক বিভাগও এ দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy