প্রতীকী ছবি
পিসেমশাইয়ের থেকে ১৯ লক্ষ টাকা চেয়েছিল অভিযুক্ত। সেই টাকা না পেয়ে ভাড়াটে খুনি নিয়ে পিসেমশাইয়ের বাড়ি লুট করতে এসেছিল অভিযুক্ত ঐন্দ্রিলা রায় ও তার দুই সঙ্গী। বুধবার হরিদেবপুর থানা এলাকার ডায়মন্ড পার্কে ডাকাতির ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত ঐন্দ্রিলা ওরফে টিয়াকে গ্রেফতার করে এই তথ্য জানতে পেরেছে হরিদেবপুর থানার পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার চম্পাহাটির বাড়ি থেকে ঐন্দ্রিলাকে গ্রেফতার করা হয়। এর পরে তাকে জেরা করে ধরা হয় রূপম সমাদ্দার এবং পবিত্র দেবনাথ নামে বাকি দু’জনকে। ভাড়াটে খুনি পবিত্রের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার রামনগরে। রূপমের বাড়ি কোদালিয়ায়। জোকার ডায়মন্ড পার্কে চিকিৎসক অরূপকুমার দাসের বাড়িতে বুধবার দুপুরে এসেছিল ঐন্দ্রিলা ও এক যুবক। সে সময়ে অরূপবাবু বাড়িতে ছিলেন না। ছিলেন তাঁর মেয়ে শাল্মলী এবং পরিচারিকা কল্পনা। পুলিশ সূত্রের খবর, সেই সময়ে শাল্মলী স্নান করছিলেন। পরিচারিকা দরজা খুলে ঐন্দ্রিলাদের বসতে বলে রান্নাঘরে যান। আচমকাই ধারালো বঁটি দিয়ে কল্পনাকে কোপ মারতে থাকে তারা। হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাতও করা হয়। কল্পনার চিৎকারে শাল্মলী শৌচাগার থেকে বেরিয়ে এলে তাঁকেও বঁটি গিয়ে কোপাতে থাকে দু’জন। ভয় দেখিয়ে
শাল্মলীর থেকে সিন্দুকের চাবি নিয়ে লক্ষাধিক টাকা ও গয়না নিয়ে চম্পট দেয় তারা। জ্ঞান ফিরলে শাল্মলী বাবাকে ফোন করেন। প্রতিবেশীরা আহত দু’জনকে একবালপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। তবে কল্পনার অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক।
ঐন্দ্রিলাকে জেরা করে পুলিশ জেনেছে, দিন কয়েক আগে সে পিসেমশাই অরূপবাবুর কাছে কানাডা যাওয়ার জন্য ১৯ লক্ষ টাকা দাবি করেছিল। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় বন্ধু রূপমের সঙ্গে মিলে পিসেমশাইয়ের বাড়িতে লুটের ছক কষে সে। তদন্তকারীরা জানান, পরিকল্পনামতো রূপম ভাড়াটে খুনি পবিত্রকে নিয়ে আসে। পুলিশ জানিয়েছে, পবিত্রের বিরুদ্ধে একাধিক চুরির অভিযোগ রয়েছে। ঘটনার দিন তিন জনে প্রথমে টালিগঞ্জ ও পরে অরূপবাবুর বাড়িতে আসে। ঐন্দ্রিলা ও পবিত্র বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে। বাইরে দাঁড়িয়ে নজরদারি চালায় রূপম। এর পরে সঙ্গে থাকা ভারী হাতুড়ি দিয়ে পরিচারিকার মাথায় আঘাত করে ঐন্দ্রিলারা। ধৃত পুলিশকে জানিয়েছে, বঁটি ও হাতুড়ির আঘাতে শাল্মলী ও কল্পনা জ্ঞান হারালে তারা ভেবেছিল, ওরা মারা গিয়েছে। এর পরে সিন্দুক থেকে টাকা-গয়না লুট করে ঐন্দ্রিলারা। এর পরে সেখান থেকে বেরিয়ে গড়িয়ার একটি শপিং মলে গিয়ে নতুন পোশাক কেনে পরে নেয় ঐন্দ্রিলা। এর পরে পুরনো পোশাকটি নিকটবর্তী একটি ভ্যাটে ফেলে দিয়ে তিন জনে এলাকা ছেড়ে পালায়।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ঐন্দ্রিলা দীর্ঘ দিন ধরে নেশাগ্রস্ত। বিবাহবিচ্ছিন্না ওই মহিলার আচরণে বিরক্ত অরূপবাবুর পরিবারের সঙ্গে তার সম্পর্কও বর্তমানে ভাল ছিল না। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘দিন কয়েক আগে পিসেমশাইয়ের থেকে ১৯ লক্ষ টাকা না পাওয়ায় প্রতিশোধ নিতেই এই পরিকল্পনা ঐন্দ্রিলার। অভিযুক্তের আরও কোনও অভিসন্ধি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উভয়পক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’ এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক অরূপবাবু বলেন, ‘‘খারাপ আচরণের জন্য দীর্ঘ দিন ধরেই ঐন্দ্রিলার সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখতাম। কিন্তু ও এরকম একটা কাণ্ড ঘটাবে, ঘুণাক্ষরেও ভাবিনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy