বিস্ফোরণের তীব্রতায় ম্যানহোলের ঢাকনা ছিটকে পড়ে অনেকটা দূরে। —নিজস্ব চিত্র।
শতাব্দী প্রাচীন নিকাশি নালায় জমে থাকা গ্যাসই বেরোতে না পেরে পর পর বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে ট্যাংরায়। প্রাথমিক তদন্তের পর এমনটাই ধারণা দমকলের বিশেষজ্ঞ এবং কলকাতা পুরসভার ইঞ্জিনিয়রদের। তাঁদের সন্দেহ নিকাশি নালায় জমে থাকা পাঁক থেকে তৈরি হওয়া মিথেন বা ওই ধরণের কোনও গ্যাস জমে জমে এই বিপত্তি।
সেই গ্যাস বেরনোর জন্য ব্রিটিশ আমল থেকেই ম্যানহোলের মুখে ছিদ্র করে রাখা হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার ট্যাংরায় একাধিক বিস্ফোরণের পর দেখা যায়, উড়ে যাওয়া ম্যানহোলের সেই ছিদ্র বুজে গিয়েছে রাস্তার বিটুমিনের প্রলেপে।
এ দিন দুপুরে পর পর ছ’টি বিকট আওয়াজে কেঁপে ওঠে ট্যাংরা থানা সংলগ্ন এলাকা। ডিসি দে রোড এবং গোবিন্দ খটিক রোডের আশপাশে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ওই আওয়াজ মুহূর্তের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। উদভ্রান্তের মত রাস্তায় নেমে আসেন কয়েকশো মানুষ। প্রথমে বোঝা যাচ্ছিল না ওই আওয়াজের উৎস কোথায়।
রাস্তায় নেমে দেখা যায়, ট্যাংরা থানা সংলগ্ন রাস্তায় একাধিক জায়গায় তলা থেকে কোনও চাপে উঠে গিয়েছে রাস্তার বিটুমিনের প্রলেপ। ফাটল দেখা দিয়েছে রাস্তায়। কয়েকটি জায়গায় মাটির তলা থেকে চাপে ছিটকে গিয়েছে ঢালাই লোহার ভারি ম্যানহোল। ছিটকে যাওয়া ম্যানহোলের আশে পাশে সিমেন্ট-ইটও উপড়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: চেয়ারে বসা, গলার নলি কাটা, ব্রড স্ট্রিটের বাড়িতে খুন বৃদ্ধ
আরও পড়ুন: গ্রাহকদের স্বস্তি দিয়ে আরটিজিএস-এনইএফটি-তে উঠে যাচ্ছে ব্যাঙ্ক চার্জ, এটিএম চার্জও কমার সম্ভাবনা
ততক্ষণে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় দমকল, কলকাতা পুরসভার বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং পুরসভার বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার। ম্যানহোল এবং রাস্তার ফাটল দেখে বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত হন যে বিস্ফোরণের উৎসস্থল মাটির নীচে। দমকল এবং পুরসভার বিশেষজ্ঞদের যৌথ তদন্তে উঠে আসে মাটির নীচে জমে থাকা গ্যাস থেকেই তীব্র বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
স্বপনবাবু বলেন, ‘‘কয়েক বছর আগেই এর থেকেও তীব্র বিস্ফোরণ হয়েছিল। ম্যানহোলের ঢাকনা বিস্ফোরণের তীব্রতায় ছিটকে গিয়েছিল প্রায় চল্লিশ ফুট দূরে।’’ তিনি দাবি করেন, গোটাটাই একটি দুর্ঘটনা। তিনি বলেন, মাটির নিচে ইটে ঘেরা ওই নালা শতাব্দী প্রাচীন। সেখানে পাঁকে তৈরি হওয়া গ্যাস দীর্ঘদিন জমেই ওই বিপত্তি। তবে মেয়র পারিষদ পুরসভার কোনও গাফিলতি নেই বলেই দাবি করেছেন।
দমকলের বিশেষজ্ঞদের একটি অংশ দাবি করে, রাস্তা তৈরির সময় ম্যানহোলের ছিদ্র বিটুমিনের প্রলেপে ঢাকা পড়ে যাওয়ায় গ্যাস বেরনোর রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে জমতে থাকা গ্যাসের চাপও ক্রমাগত বাড়তে থাকে। বাড়তে বাড়তে তা একটি সময়ের পর উপর দিকে চাপ দেয় এবং বিস্ফোরণ ঘটায়। বিশেষজ্ঞরা স্বীকার করেন, এ রকম বিস্ফোরণ থেকে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে যে কোনও সময়।
ঘটনার রেশ কাটতেই কাজে নামে পুরসভার কর্মীরা। স্বপনবাবু বলেন, রাতের মধ্যেই রাস্তা মেরামত করে দেওয়া সম্ভব হবে।
(কলকাতার ঘটনা এবং দুর্ঘটনা, কলকাতার ক্রাইম, কলকাতার প্রেম - শহরের সব ধরনের সেরা খবর পেতে চোখ রাখুন আমাদের কলকাতা বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy