প্রচারে ডিজে। নিজস্ব চিত্র
দুর্গাপুজো, কালীপুজো, এমনকি, ছটপুজোতেও নজরদারি রয়েছে। সব ক্ষেত্রেই শব্দদূষণ হচ্ছে কি না বা তার মাত্রা কী, সে সংক্রান্ত একাধিক সমীক্ষাও রয়েছে। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে নির্বাচনী প্রচারের সময় শব্দবিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে কি না, তার কোনও তথ্যই নেই। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ তো বটেই, কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদও নির্বাচনের সময়ে কতটা শব্দদূষণ হচ্ছে বা আদৌ হচ্ছে কি না, সে সংক্রান্ত কোনও সমীক্ষা এখনও পর্যন্ত করে উঠতে পারেনি। অর্থাৎ, দেশের লোকসভা নির্বাচনের ইতিহাসে মাইকপ্রচারে শব্দদূষণের মাত্রা কত, সে সম্পর্কে তথ্যভাণ্ডার ‘শূন্য’!
যা নিয়ে হতবাক পরিবেশকর্মীদের একাংশ। তাঁদের প্রশ্ন, অন্য উৎসবে যেখানে তবুও একটা কড়াকড়ি থাকে, সেখানে গণতন্ত্রের সব থেকে বড় ‘উৎসব’ এ ভাবে ব্রাত্য কেন! তাঁরা জানাচ্ছেন, অতীতে তবু দূষণ সম্পর্কে এতটা সচেতনতা ছিল না, কিন্তু মাইক চালানোর সময় শব্দবিধি চালু হয়েছে, তাও অনেক বছর হয়ে গেল। তার পরেও এ বিষয়ে সরকারি তরফে কোনও রকম সমীক্ষা না হওয়াটা আশ্চর্যজনকই। অথচ বিভিন্ন সময়ে করা সমীক্ষার ধারাবাহিকতা লক্ষ করলে দেখা যাবে যে, কালীপুজো, দীপাবলি থেকে শুরু করে বছরের অন্যান্য সময়েও শব্দদূষণ নিয়ে করা একাধিক সমীক্ষা রয়েছে। সে সম্পর্কিত তথ্য রাজ্য ও কেন্দ্র, উভয়ের কাছেই রয়েছে। তা নিয়ে নির্দিষ্ট নিয়মবিধিরও উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে এই অদ্ভুত ‘নীরবতা’ কেন?
রাজ্য দূষণ পর্ষদের কর্তাদের একাংশের অবশ্য যুক্তি, সাধারণ সময়ে শব্দদূষণের ক্ষেত্রে যে নিয়ম মানা হয়, নির্বাচনের সময়েও মানা হয়। তাই নির্বাচনের জন্য আলাদা সমীক্ষার প্রয়োজন পড়ে না। তাছাড়া কালীপুজো বা দুর্গাপুজোর সময় যে বাজি ফাটানো হয়, তা হল ‘ইমপালসিভ নয়েজ’। আর প্রচারের সময় মাইকের আওয়াজ হল ‘অ্যাম্বিয়েন্স নয়েজ’। অন্য গাড়িঘোড়ার আওয়াজ সম্পর্কে যেমন তথ্য সংগ্রহ করা হয়, এটাও তাই। আলাদা করে সমীক্ষা করা হয়নি। তবে শব্দবিধি সংক্রান্ত নির্দেশিকা ইতিমধ্যেই পরিবেশ দফতরের তরফে পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রের খবর। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘নির্বাচনী প্রচারের সময়ে শব্দদূষণ সংক্রান্ত ধরনের কোনও সমীক্ষা নেই। তবে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের দল বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছে। তারা শব্দদূষণের উপরে নজরদারি চালাচ্ছে। যদি কোথাও তেমন ঘটনা ঘটে, তা হলে নিশ্চয়ই পদক্ষেপ করা হবে।’’
নির্বাচনের সময়ে শব্দদূষণ সংক্রান্ত তথ্যের যে অভাব রয়েছে, তা পরোক্ষে স্বীকার করে নিয়েছেন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কর্তাদের একাংশ। তাঁরা এটাও স্বীকার করে নিয়েছেন যে, পুজোর সময়ে পাড়ায়-পাড়ায় জলসার উপরে ন্যূনতম যে নজরদারিটুকু চলে, তার ছিঁটেফোঁটাও নির্বাচনী প্রচারের সময়ে হয় না। তাই নির্বাচনী প্রচারে দূষণ সংক্রান্ত সমীক্ষাও অতীতে কখনও করা হয়নি। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘কোনও নির্বাচনের সময়েই শব্দদূষণের সমীক্ষা করা হয়নি। তবে ভবিষ্যতে এ সংক্রান্ত গবেষণা করা যেতেই পারে। কারণ, তা হলে এ সংক্রান্ত একটা তথ্যভাণ্ডার করা সম্ভব হবে, যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy