আহিরীটোলা ঘাট। — ফাইল চিত্র
গঙ্গার ঘাট থেকে সন্তান-সহ এক বধূকে উদ্ধার করে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে থানা থেকে স্বামীর সঙ্গে সন্তানকে নিয়েই বাড়ি ফিরে গেলেন ওই বধূ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার সকালে আহিরীটোলা ঘাটে দশ বছরের ছেলেকে কোলে নিয়ে গঙ্গার দিকে মুখ করে ঘোরাফেরা করছিলেন মানিকতলা মেন রোড এলাকার বাসিন্দা ওই মহিলা। তাঁকে বেশ কিছু ক্ষণ ওই অবস্থায় দেখার পরে কয়েক জন তাঁর কাছে জানতে চান, তিনি কেন জলের কাছে ওই ভাবে ঘুরছেন? প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এক যুবকই ওই মহিলার কাছে প্রথমে বিষয়টি জানতে চান। প্রথমে ওই বধূ কিছু জানাতে চাননি। কিন্তু পরে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়ে অবসাদের কথা বলেন। দ্রুত কয়েক জন মিলে তাঁকে ঘাটের উপরে তুলে এনে উত্তর বন্দর থানায় খবর দেন। তাঁরা জানান, মহিলা এতটাই বিপর্যস্ত ছিলেন যে, বাড়িতে ফিরতে চাইছিলেন না। রাস্তাতেই তিনি বসে পড়েন। পুলিশ এসে ওই বধূ ও তাঁর সন্তানকে থানায় নিয়ে যায়। খবর পাঠানো হয় তাঁর স্বামীকেও।
তদন্তকারীরা জানান, ওই বধূর ছেলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। সন্তানকে ভাল ভাবে বড় করতে চান তিনি। কিন্তু পরিবারটি আর্থিক দিক থেকে ততটা সচ্ছল নয়। বাড়িতেও এ সব নিয়ে মাঝেমধ্যে অশান্তি হয়। একটি বাজারে মহিলার স্বামীর ছোট দোকান আছে। সন্তানের ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা-সহ নানা কারণেই ওই বধূ অবসাদে ভুগছিলেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের দাবি, আত্মঘাতী হওয়ার অভিপ্রায় নিয়েই এসেছিলেন ওই বধূ।
মহিলাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসার পরে পুলিশ তাঁর কাউন্সেলিং করে। পুলিশের দাবি, কাউন্সেলিংয়ের সময়ে ওই বধূ কান্নায় ভেঙে পড়েন। তার পরে ধীরে ধীরে নিজেকে সামলে নেন। পুলিশ জেনেছে, এ দিন সকালে কাউকে কিছু না জানিয়েই ছেলেকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন ওই বধূ। তাঁর স্বামী থানায় আসার পরে তাঁকে সামনে বসিয়ে মহিলার সঙ্গে কথা বলেন পুলিশ আধিকারিকেরা। তাঁর কী সমস্যা, তিনি কী চান— সবই তাঁর স্বামীর সামনে জানতে চাওয়া হয়। সব শেষে অবশ্য উত্তর বন্দর থানা থেকে সন্তানকে নিয়ে হাসিমুখেই ফিরে যেতে দেখা যায় ওই দম্পতিকে।
সম্প্রতি আত্মঘাতী হওয়ার একের পর এক ঘটনা সামনে এসেছে। মডেল-অভিনেত্রী থেকে শুরু করে গৃহবধূ বা চিকিৎসক, নানা কারণে অবসাদের শিকার হয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন অনেকেই। তবে এ দিন সাধারণ মানুষের তৎপরতায় উদ্ধার করা যায় ওই বধূকে।সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy