
মানববন্ধনে যোগ দিলেন বহু মানুষ। ছবি: সারমিন বেগম।
রাত গড়িয়েছে। রেড রোডে দুর্গাপুজোর কার্নিভাল শেষ। তবে রানি রাসমণি অ্যাভেনিউয়ে ‘দ্রোহের কার্নিভাল’-এ বিক্ষিপ্ত ভাবে ভিড়। জটলা করে লোকজন বসে আছেন রাতেও। তবে মূল জমায়েত ফাঁকা।
মানববন্ধনে জনস্রোত। তার মাঝেই আচমকা ঢুকে পড়ে বেশ কয়েকটি গাড়ি। এর পরেই শুরু হয় বচসা। ডিসি সেন্ট্রাল-সহ পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন মানুষ। তাঁদের দাবি, মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিঘ্ন ঘটাতেই ইচ্ছা করে এমনটা করা হয়েছে। গত বেশ কিছু ক্ষণ ধরে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা।
মানববন্ধন। ছবি: সারমিন বেগম।
রাজ্যের পুজোর কার্নিভাল চলছে। তার মাঝেই ধর্মতলায় চলছে প্রতিবাদের কার্নিভাল! বাড়ছে মানুষের ভিড়। জনস্রোত থামার নাম নেই। বরং সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে দলে দলে আরও মানুষ যোগ দিচ্ছেন মানববন্ধনে।
ছবি: ঋত্বিক দাস।
জুনিয়র ডাক্তারদের ডাকে ধর্মতলায় মানববন্ধনে যোগ দিয়েছেন বিভিন্ন বয়সের মানুষ। প্রায় সকলেরই হাতে রয়েছে প্ল্যাকার্ড। মুখে একটাই স্লোগান, ‘জাস্টিস ফর আরজি কর’।
দ্রোহের কার্নিভালে এসেছেন অভিনেত্রী অপর্ণা সেন, চৈতি ঘোষাল, উষসী চক্রবর্তী প্রমুখরাও।
ছবি: উজ্জ্বল চক্রবর্তী।
ধর্মতলার অনশন মঞ্চ থেকে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তার দেবাশিস হালদার জানালেন, চার দিক থেকে ডোরিনায় এসে জুড়বে মানববন্ধন। ডোরিনা ক্রসিংয়ে চারটি রাস্তা বরাবর চারটি মানববন্ধন হবে। সেই মতো শুরু হয়ে গেল মানববন্ধন। হাতে হাত রেখে ব্যারিকেড গড়লেন মানুষ।
আগেই সরেছে পুলিশের ব্যারিকেড। এ বার হাতে হাত রেখে ‘জনগণের ব্যারিকেড’ গড়লেন মানুষ।
কালো বেলুন উড়িয়ে অভিনব প্রতিবাদ। ছবি: উজ্জ্বল চক্রবর্তী।
প্রতিবাদের নানা ধরন দেখল মহানগরীর রাস্তা। কেউ জ্বালিয়েছেন মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইট। কেউ আবার ওড়াচ্ছেন কালো বেলুন।
মিছিলের দৃশ্য। ছবি: সারমিন বেগম।
নাচে-গানে-স্লোগানে চলছে দ্রোহের কার্নিভাল।
শামিল হয়েছেন সব বয়সের মানুষ। —নিজস্ব চিত্র।
দ্রোহের কার্নিভালে শামিল হয়েছেন আট থেকে আশি— সকলেই।
এসেছেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যও। তিনি বললেন, ‘‘বাকি ব্যারিকেডগুলি খোলা হলেও রেড রোডের দিকের ব্যারিকেডটি রাখার প্রস্তাব আমিই দিয়েছি। যাতে বাইরে থেকে কেউ এসে ঝামেলা না করতে পারেন।’’
ঢাকের তালে স্লোগান। — নিজস্ব চিত্র।
ঢাকের তালে স্লোগান দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ। স্লোগান উঠছে ‘‘শাসক থাকবে কত ক্ষণ? শাসক যাবে বিসর্জন।’’
বিচারের দাবিতে রাজপথে জনস্রোত। — নিজস্ব চিত্র।
স্লোগানে, গানে, নাচে মুখর রাজপথ। গাওয়া হচ্ছে শিকল ভাঙার গান। প্রতিবাদের এই মিছিলে শামিল হয়েছেন বহু মানুষ। তাঁদেরই এক জন বললেন, ‘‘যত দিন না বিচার পাচ্ছি, আমাদের কার্নিভাল চলবে।’’ আর এক আন্দোলনকারী বললেন, ‘‘এর চেয়ে বড় কার্নিভাল আর কিছু হয় না। মুখ্যমন্ত্রীর উচিত ছিল আমাদের কার্নিভালে আসা।’’
রাস্তায় পড়ে রয়েছে শিকল। ছবি: উজ্জ্বল চক্রবর্তী।
দ্রোহের কার্নিভাল রুখতে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল সারি সারি বাস। ব্যারিকেড ওঠার পর এ বার সরছে বাসগুলিও। সাড়ে চারটে বাজার অনেক আগেই রানি রাসমণি রোডে বাড়ছে মানুষের ভিড়।
রানি রাসমণি রোডে মানুষের ঢল। — নিজস্ব চিত্র।
সময়ের আগেই শুরু হয়ে গেল ‘দ্রোহের কার্নিভাল’। লৌহকপাট সরতেই উচ্ছ্বাস শুরু রানি রাসমণি রোডে। হুড়মুড়িয়ে ঢুকছে জনস্রোত। ঢাক বাজছে। সেই ঢাকের তালে তালে আনন্দে নাচছে জনতা।
খোলা হচ্ছে শিকল। — নিজস্ব চিত্র।
ব্যারিকেড বাঁধতে আনা হয়েছিল লোহার ভারী শিকল। এখন সেই শিকলের স্থান হয়েছে ফুটপাতে। হাই কোর্টের নির্দেশের পর ব্যারিকেডগুলি খুলে দেওয়া হচ্ছে। তবে পুজোর কার্নিভাল এবং দ্রোহের কার্নিভালের রুটের মাঝের রাস্তায় ব্যারিকেড থাকতে পারে।
এই ব্যারিকেডই সরছে এ বার। — নিজস্ব চিত্র।
রানি রাসমনি অ্যাভিনিউয়ে ফের খোলা হচ্ছে ব্যারিকেড! হাই কোর্টের নির্দেশের পর ব্যারিকেডের শিকল খুলে দেওয়া হচ্ছে। পূর্ব নির্ধারিত পথেই হবে আজকের ‘দ্রোহের কার্নিভাল’।
দ্রোহের কার্নিভালে অনুমতি দিল হাই কোর্ট। ১৬৩ ধারা জারির নির্দেশিকাকে চ্যালেঞ্জ করে মঙ্গলবারই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টর্স। দ্রুত শুনানির আর্জি জানিয়ে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তাঁরা। সেই আর্জি মঞ্জুর করেন হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি। এর পর মঙ্গলবার হাই কোর্টে বিচারপতি রবিকিশন কপূরের বেঞ্চে দুপুর ২টো নাগাদ মামলাটির শুনানি শুরু হয়।
শুনানি শেষে রাজ্যের বিপক্ষেই রায় দিলেন বিচারপতি। তিনি বলেন, “সকলেরই শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার রয়েছে। আদালত বার বার এই নির্দেশ দিয়েছে।”
মহিষবাথান থেকে এসেছেন ঢাকিরা। — নিজস্ব চিত্র।
‘দ্রোহের কার্নিভাল’-এ যোগ দিতে মহিষবাথান থেকে এসেছেন ঢাকিরা। সামনে ব্যানারে লেখা স্লোগান, ‘বিচার যখন প্রহসন, লড়াই তখন আমরণ’। মোট ২১ জন ঢাকি এসেছেন। আর কিছু ক্ষণেই ঢাকের আওয়াজে, গানে, স্লোগানে মাতবে কার্নিভাল।
(বাঁ দিকে) চেন দিয়ে বাঁধা হচ্ছে ব্যারিকেড। মিছিল শুরু আগে ঢাক বাজছে (ডান দিকে) — নিজস্ব চিত্র।
দ্রোহের কার্নিভালকে রুখতে পুলিশি তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। রেড রোডের মতোই ধর্মতলার মোড় থেকে শুরু করে রানি রাসমণি রোড পর্যন্ত একাধিক জায়গায় মোতায়েন রয়েছে পুলিশ। গোটা এলাকায় নিরাপত্তার কড়াকড়ি। রেড রোড এবং রানি রাসমণি রোডের একটি করে লেন ঘিরে ফেলা হয়েছে ব্যারিকেড দিয়ে। রানি রাসমণি রোড ধরে ধর্মতলা থেকে নেতাজি মূর্তির দিকে ডান পাশের লেনে দাঁড়িয়ে রয়েছে সারি সারি বাস। বাসচালকদের দাবি, পুলিশ বাসগুলি এগোতে দিচ্ছে না। নেতাজি মূর্তির ঠিক সামনেই বসানো হয়েছে প্রায় ৯ ফুটের ব্যারিকেড। এর আগে জুনিয়র ডাক্তারদের লালবাজার অভিযানের সময়েও এই ধরনের ব্যারিকেড বসানো হয়েছিল। এক মানুষ সমান উঁচু ব্যারিকডগুলিকে গার্ডরেলের সঙ্গে শিকল দিয়ে বাঁধা হচ্ছে। কোথাও কোথাও বাঁশের কাঠামো বেঁধেও তৈরি করা হয়েছে ব্যারিকেড।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy